হাসিনাকে প্রত্যার্পনে ভারতে আবার চিঠি লিখবো: আইন উপদেষ্টা
মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফাঁসির রায়ে ‘ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হয়েছে’ মন্তব্য করে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছেন, তাকে প্রত্যার্পনে ভারতকে ফের চিঠি দেওয়া হবে।
জুলাই গণঅভ্যুত্থান দমানোর চেষ্টায় মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের দায়ে সোমবার শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছে বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদার নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ ।
সেখানে শেখ হাসিনা ছাড়াও তার সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত। তিনিও তার নেত্রীর মত ভারতে পালিয়ে আছেন।
এ মামলার তিন আসামির মধ্যে সেই সময়ের আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দায় স্বীকার করে রাজসাক্ষী হয়েছিলেন। সেজন্য ট্রাইব্যুনাল তাকে লঘুদণ্ড হিসেবে ৫ বছরের কারাদণ্ড দিয়ছে ট্রাইব্যুনাল।
দুপুরে রায় ঘোষণার পর সচিবালয়ে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, “আজকে বাংলাদেশের জন্য একটা ঐতিহাসিক দিন। আজকে বাংলাদেশের মাটিতে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার শ্রেষ্ঠ ঘটনা ঘটেছে।
“জুলাই গণঅভ্যুত্থানকালে শত শত মানুষের মৃত্যু হাজার হাজার মানুষের অঙ্গহানির ঘটনা, গুরুতর আহত হওয়ার ঘটনা, বিকলাঙ্গ হওয়ার ঘটনার জন্য যে নৃশংস খুনির দায় ছিল সেই শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় হয়েছে। তার প্রধান সহযোগী সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের মৃত্যুদণ্ডের রায় হয়েছে। আজকে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের আরেকটি বিজয়ের দিন।”
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, “আমরা শেখ হাসিনার প্রত্যার্পনের জন্য ভারতের কাছে আবার চিঠি লিখবো। ভারত যদি এই গণহত্যাকারীকে আশ্রয় দেওয়া অব্যাহত রাখে, তাহলে ভারতকে বুঝতে হবে, বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের মানুষের বিরুদ্ধে একটা শত্রুতা, এটা অত্যন্ত নিন্দনীয় আচরণ।
“আমরা যতদিন আছি এই বিচারকাজ চলবে। আশা করি আগামীতে যেই সরকারই নির্বাচিত হবে এই বিচারের গুরুদায়িত্ব থেকে কোনো অবস্থাতেই যেন পিছপা না হয়,” বলেন আইন উপদেষ্টা।
সাংবাদিকদের কাছে আইন উপদেষ্টা আরও বলেন, “আজকে বিশেষ করে মনে পড়ছে যারা জুলাই গণঅভুত্থানকালে প্রাণ হারিয়েছিলেন। বিশেষ করে আবু সাঈদের কথা, মুগ্ধ, ওয়াসিম, ইয়ামিন, আনাস, রিয়া গোপ। মনে হচ্ছে আজকে তাদের বিদেহী আত্মা সামান্য হলেও শান্তি পাবে। ব্যক্তিগতভাবে আমি এই রয়ে সন্তুষ্ট, কিন্তু বিস্মিত নই।
“শেখ হাসিনা ও তার সহযোগীদের মানবতাবিরোধী অপরাধের যে তাজা, অকাট্য, জোরারো এবং বিস্মৃত প্রমাণ রয়েছে তাতে পৃথিবীর যেকোনো আদালতে বিচার হলে তার সর্বোচ্চ শাস্তি হওয়ার কথা।”
আইন উপদেষ্টা ফেইসবুকেও তার প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।
তিনি লিখেছেন, “শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ড। শোকর আলহামদুলিল্লাহ।”