‘ঐতিহাসিক’ রায়, শান্ত ও সংযত থাকুন: জনগণকে সরকার
জুলাই অভ্যুত্থানে সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের মৃত্যুদণ্ডের রায়কে ‘ঐতিহাসিক রায়’ হিসেবে অভিহিত করেছে অন্তর্বর্তী সরকার।
এই রায়ের গভীর তাৎপর্য উপলব্ধি করে সর্বস্তরের জনগণকে শান্ত, সংযত ও দায়িত্বশীল থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে সোমবার প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরের এক বিবৃতিতে।
এদিন বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ জুলাই অভ্যুত্থান দমানোর চেষ্টা মানবতাবিরোধী অপরাধের প্রথম মামলার রায় দেয়।
ট্রাইব্যুনালের অপর দুই বিচারক হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
এই মামলার অপর আসামি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন নিজেকে রাজসাক্ষী হিসেবে উপস্থাপন করায় তাকে লঘুদণ্ড পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “রায়-পরবর্তী সময়ে কোনোধরনের উচ্ছৃঙ্খলতা, উত্তেজনাপ্রসূত আচরণ, সহিংসতা বা আইনবিরোধী কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার জন্য সবাইকে বিশেষ অনুরোধ জানানো হচ্ছে।
“জনগণের, বিশেষ করে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের স্বজনদের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশিত এই রায়কে ঘিরে জনমনে স্বাভাবিকভাবেই আবেগ সৃষ্টি হতে পারে। তবে সেই আবেগের বশবর্তী হয়ে যেন কেউ জনশৃঙ্খলা বিঘ্নিত করে, এমন কোনো পদক্ষেপ না নেয়—সরকার এ বিষয়ে দৃঢ়ভাবে সবাইকে সতর্ক করেছে।
“সরকার আরও স্পষ্ট করে জানাচ্ছে, যে কোনো ধরনের অরাজকতা, বিশৃঙ্খলা বা জনশৃঙ্খলা ভঙ্গের চেষ্টা কঠোরভাবে দমন করা হবে।”
দোর্দণ্ড প্রতাপে দেড় দশক দেশ শাসন করা শেখ হাসিনা ১৫ মাস আগের ওই অভ্যুত্থানে ক্ষমতা হারিয়ে এখন পালিয়ে আছেন ভারতে। তিনিই বাংলাদেশের প্রথম সাবেক সরকারপ্রধান, যার মাথার ওপর ঝুললো মৃত্যুদণ্ডের খাঁড়া।
আর সেই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল থেকেই শেখ হাসিনার সর্বোচ্চ সাজার রায় এল, যে আদালত তার সরকার গঠন করেছিল একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের বিচারের জন্য।
মামলার আসামিদের মধ্যে হাসিনার মত কামালও ভারতে পালিয়ে আছেন। গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন কেবল সাবেক আইজিপি মামুন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হবে জানিয়ে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, “আমরা শেখ হাসিনার প্রত্যার্পনের জন্য ভারতের কাছে আবার চিঠি লিখবো। ভারত যদি এই গণহত্যাকারীকে আশ্রয় দেওয়া অব্যাহত রাখে, তাহলে ভারতকে বুঝতে হবে, বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের মানুষের বিরুদ্ধে একটা শত্রুতা, এটা অত্যন্ত নিন্দনীয় আচরণ।”