শুক্রবার ০৯ মে ২০২৫, বৈশাখ ২৬ ১৪৩২, ১১ জ্বিলকদ ১৪৪৬

ব্রেকিং

আইভীর বাড়িতে পুলিশ, অনুসারীদের জটলা রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের পরবর্তী ধাপের আলোচনার কর্মপরিকল্পনা দ্রুত চূড়ান্ত করার নির্দেশ দিলেন প্রধান উপদেষ্টা আমরা অন্তবর্তীকালীন সরকারের সাফল্য চাই: মির্জা ফখরুল তথ্যযুদ্ধ: কতটা সত্যি বলছে ভারত ও পাকিস্তান? ভারত-পাকিস্তানের সংঘাতে এরপর কী? পাকিস্তান ভারত সীমান্তে উত্তেজনার নতুন অধ্যায়: ক্ষেপণাস্ত্র, হামলা ও তথ্যযুদ্ধ আওয়ামী লীগের দুই সহযোগী সংগঠন নিষিদ্ধ হতে যাচ্ছে: আসিফ মাহমুদ জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনে নেতৃত্ব পরিবর্তন: স্নিগ্ধর পদত্যাগ আবদুল হামিদের দেশত্যাগে জড়িতদের ধরা হবে, না হলে আমিই চলে যাব: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সরকার সংবাদপত্রের মধ্যে ইতিবাচক প্রতিদ্বন্দ্বিতা দেখতে চায় : তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা প্রথম আমেরিকান পোপ হলেন রবার্ট প্রিভোস্ট ২০২৫: টেকনোলজির ঝড় উঠছে! ভারত-পাকিস্তানে যুদ্ধের দামামা: বাংলাদেশে কী প্রভাব, করণীয় কী রক্তের প্রতিটি ফোঁটার বদলা নেব: শেহবাজ শরিফ

শিশু

একজনের খাবার আশিজন খেল

 প্রকাশিত: ১৮:৫৫, ৮ জুলাই ২০২০

একজনের খাবার আশিজন খেল

আচ্ছা বল তো, একজনের জন্য প্রস্তুত করা খাবার কয়জনে খেতে পারে? দুই জন বা তিন জন? তোমার উত্তর হয়ত হবে- একজনের খাবার সর্বোচ্চ দুইজন খেতে পারে; তাও আবার দুজনের কারোরই ঠিকমত পেট ভরবে না।

যদি এমন ঘটে, তুমি একজনকে দাওয়াত করেছ এবং একজনের কথা মাথায় রেখেই খাবার প্রস্তুত করেছ। এমন সময় দেখলে, দাওয়াতপ্রাপ্ত মেহমানের সাথে আরো ৭০-৮০ জন হাজির! তখন তোমার কী দশা হবে?

এমনই এক মজার কাহিনী ঘটেছে- নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রিয় সাহাবী আনাস ইবনে মালেক রা.-এর সাথে। আর এ ঘটনার মেহমান ছিলেন স্বয়ং নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম।

আনাস রা.-এর মা নবীজীকে খুব ভালবাসতেন। এজন্যই তো তিনি তার সন্তান আনাসকে নবীজীর খেদমতের জন্য উৎসর্গ করেছিলেন। আনাস রা.-এর মায়ের নাম ছিল উম্মে সুলাইম রা.। একদিন তিনি নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জন্য পরম যতেœ রুটি বানালেন। তাতে একটু ঘি ঢেলে দিলেন। তাঁর ইচ্ছা এই সুস্বাদু খাবার নবীজীকে খাওয়াবেন। আনাস রা.-কে বললেন, বাবা! যাও নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দাওয়াত কর।

আনাস রা. নবীজীর কাছে গিয়ে বললেন, আম্মা আপনাকে ডাকছেন। তখন নবীজী তাঁর সাহাবীদের মাঝে বসা ছিলেন। তাঁর কাছে যত মানুষ ছিল সকলকে বললেন, চলো আমার সাথে! এ দেখে আনাস রা.-এর তো মাথায় হাত!

আনাস রা. তখন নবীজীর আগে আগেই দৌড়ে মায়ের কাছে গেলেন। মাকে বললেন, নবীজী তো এত এত মানুষ নিয়ে আসছেন আমাদের বাসায়!

নবীজী এসে উম্মে সুলাইম রা.-কে বললেন-

هَاتِي مَا صَنَعْتِ.

তুমি যে খাবার প্রস্তুত করেছ তা পেশ কর।

এখন উম্মে সুলাইম এত মানুষের সামনে এই অল্প খাবার কীভাবে পেশ করবেন! তিনি মুখ ফুটে বলেই ফেললেন-

إِنّمَا صَنَعْتُهُ لَكَ وَحْدَكَ.

আল্লাহ্র রাসূল! আমি তো কেবল আপনার জন্য, একজন মানুষের পরিমাণ খাবার প্রস্তুত করেছি! (এত মানুষ কীভাবে কী করব?)

তোমরা আবার ভেব না, নবীজী কেন এত মানুষ নিয়ে গেলেন। তারা তো শুধু নবীজীকে দাওয়াত দিয়েছে; এত মানুষকে তো দাওয়াত দেয়নি!

হাঁ, এটা নবীজী ইচ্ছাকৃত করেছেন- মাত্র একজনকে দাওয়াত দেওয়া হয়েছে, সুতরাং একজনের খাবারই প্রস্তুত করা হবে- এটা জেনেও নবীজী এমনটি করেছেন। কারণ, আল্লাহ্র ইচ্ছা ছিল, নবীজীর হাতে এমন একটি মুজেযা প্রকাশ করা।

আরে নবীজীর কাছ থেকেই তো আমরা এ সুন্নত শিখেছি যে, যাকে দাওয়াত দেওয়া হয়নি তাকে নিয়ে যাওয়া যাবে না। গেলেও অনুমতি নিতে হবে। একবার আবু শুআইব নামক এক আনসারী সাহাবী নবীজীসহ পাঁচজনকে দাওয়াত করলেন। নবীজী যখন সেখানে যাচ্ছিলেন তখন (কোনো এক কারণে দাওয়াত দেওয়া হয়নি এমন) এক ব্যক্তি নবীজীর সাথে সাথে গেল। নবীজী তখন মেজবানকে বললেন-

إِنّ هَذَا قَدْ تَبِعَنَا، فَإِنْ شِئْتَ أَنْ تَأْذَنَ لَه، فَأْذَنْ لَهُ وَإِنْ شِئْتَ أَنْ يَرْجِعَ رَجَعَ.

এই ব্যক্তি আমাদের সাথে সাথে এসেছে। (তাকে যেহেতু তুমি দাওয়াত দাওনি) এখন যদি তুমি অনুমতি দাও তাহলে সে থাকবে নইলে ফিরে যাবে। তখন ঐ সাহাবী তাকে অনুমতি দিলেন। -সহীহ বুখারী, হাদীস ২০৮১; সহীহ মুসলিম, হাদীস ২০৩৬

যাইহোক, মূল ঘটনায় ফিরে আসি। উম্মে সুলাইমের এ কথা শুনে নবীজী বললেন, সেটা বিষয় নয়; তুমি যা রান্না করেছ পেশ কর আমার সামনে। খাবার পেশ করা হল। তখন নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আনাস রা.-কে বললেন, দশজন-দশজন করে পাঠাও। আনাস রা. দশজন করে পাঠান আর তারা তৃপ্তিভরে খেয়ে বের হন, আরো দশজন আসেন। এভাবে একজনের খাবার ৮০জন মানুষ তৃপ্তিসহকারে খেলেন। -সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস ৩৩৪২

অনলাইন নিউজ পোর্টাল