শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, বৈশাখ ১৪ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

ইসলাম

রোযা ও রমযান: পর্ব -০১ বিষয়: মাহে রমযানের তাৎপর্য ও ফযিলত

মুফতি মুহাম্মদ নাসিরুদ্দীন

 আপডেট: ১৯:২৩, ২৫ মার্চ ২০২৩

রোযা ও রমযান: পর্ব -০১ বিষয়: মাহে রমযানের তাৎপর্য ও ফযিলত

রমজানের সন্ধ্যা এল ঘনিয়ে এলো আনন্দ। সারা পৃথিবীর মুসলমানদের কাছে আজকের এই রাত্রি আনন্দের রাত্রি। খুশি ও আনন্দের হিল্লুল বয়ে রমজানের বাঁকা চাঁদ আকাশে উদিত হয়। আজকের চাঁদ অন্যরকম এক আনন্দ ও ভালোবাসার স্মারক। গ্রামের কাঁচা মাটিয়া নদীর উপর দিয়ে রিকশায় বসে রমজানের চাঁদ দেখেছি। সঙ্গে সঙ্গে শান্তি ও সান্তনার পরশ দেহ মন ছুঁয়ে গেল।

সন্ধা এলো ঘনিয়ে। এলো আনন্দ ও সৌভাগ্যের সৌরভ। পাড়াপড়শি ভাই বেরাদার আত্মীয়-স্বজন সবাইকে নিয়ে তারাবির নামাজ পড়ায় আরেক আনন্দ। সবার মুখেই তৃপ্তি আর আলোর চিহ্ন। সর্বাঙ্গ খুশি হয়েছে প্রত্যেক মুমিনের। তারাবির নামাজে কুরআনের তেলাওয়াত আরেক অপার্থিব শান্তির দ্যুতনা।

এই আনন্দ ছড়িয়ে পড়ে পরিবারের সকল মানুষের মধ্যে। দশ মাসের শিশুটির মধ্যেও।

মুমিনের আনন্দের প্রতীক্ষা পূর্ণ হয় ইফতারের মনোহর পরিবেশে। যেখানে পরিবারের ছোট বড় সকল সদস্য থাকে থাকে। চারপাশের মানুষ, প্রতিবেশী, পরিচিতরা অংশগ্রহণ করে। মসজিদের সুন্দর সম্প্রীতির আঙ্গিনা যেখানে সর্ব শ্রেণীর মুসল্লী একসাথে বসে ইফতারি গ্রহণ করেন। অপরিচিত আগন্তুক যেখানে এসে পরিচয়ের বন্ধনে একাত্ম হয়ে যান।
সারাবছর মুমিনের প্রাণ তৃষ্ণায় কাতর হয়ে থাকে। রমজানের এক মুহূর্ত স্বস্তির বাতাস মুমিনের সেই তৃষ্ণাকে নিবারণ করে। রমজান বড় বরকতময় সম্মানিত। ইবাদতের মৌসুম ও সাধনার মাস।

আমরা এই মাসের সম্মান রক্ষা করব ইনশাআল্লাহ।

সবাইকে রমাজানের শুভেচ্ছা। খোশ আমদেদ মাহে রমাজান।

‘মাহে রমযান’ দু’টি শব্দ। ‘মাহ’ শব্দটি ‘ফার্সি’। এর অর্থ মাস। রমযান ‘আরবি’ শব্দ। ‘মাহে রমযান’ অর্থ, রমযান মাস। সিয়াম আরবি শব্দ। এটি ‘সাওম’ এর বহুবচন। এর অর্থ উপবাস থাকা, বিরত থাকা ইত্যাদি। আমাদের দেশে অনেকে রোযা এবং মাহে রমযান বলে থাকেন। কুরআন-হাদীসে ‘সাওম-সিয়াম, শাহরু রামাযান’ বলা হয়েছে। ‘রোযা এবং মাহে রমযান’ বলার পরিবর্তে ‘সাওম-সিয়াম এবং শাহরু রামাযান’ বলা উত্তম এবং বরকতময়। কারণ ‘সাওম-সিয়াম, শাহরু রামাযান’ শব্দগুলো আল্লাহ এবং আমাদের প্রিয় নবী (সা.) এর ব্যবহৃত শব্দ।

এমনিভাবে নামায, রোযা ইত্যাদি শব্দের পরিবর্তে সালাত, সাওম এবং যাকাত বলা উত্তম ও বরকতময়। কিন্তু আমরা বইটিতে মাঝে-মধ্যে সহজে বলার জন্য দু’-তিনটি স্থানে মাহে রমযান, এবং রোযা শব্দ ব্যবহার করেছি। বইটির শিরোনামকেও সহজ করা জন্য ‘মাহে রমযান’ লিখেছি। তবে চেষ্ট করবো আল্লাহ এবং তাঁর নবী (সা.)-এর ব্যবহৃত এবং পছন্দনীয় শব্দগুলো ব্যবহার করার জন্য। সিয়াম ইসলামের চিরশ্বাসত একটি বিধানের নাম। তাহলে রমযান এবং সিয়াম দু’টি সম্পূর্ণ আলাদা বিষয়। রমযানের তাৎপর্য রমযান শব্দ থেকেই বুঝা যায়। কারণ রমযান শব্দের অর্থ হচ্ছে, ঝলসে দেয়া, জ্বালিয়ে দেয়া ইত্যাদি। যেহেতু রমযানের সিয়াম পালনের মাধ্যমে সিয়াম পালনকারীর স্বীয় পাপকে জ্বালিয়ে, পুড়িয়ে ছাই করে দেয়া হয়, তাই রমযানকে রমযান বলা হয়।

মন্তব্য করুন: