বুধবার ১৯ নভেম্বর ২০২৫, অগ্রাহায়ণ ৫ ১৪৩২, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

ব্রেকিং

বাজেট কফি চেইন এলএপিকে ঘিরে বিতর্ক, বার্লিনে ক্ষোভ-প্রতিবাদ ট্রাম্পের সঙ্গে `মুখোমুখি` আলোচনায় প্রস্তুত ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট মাদুরো জাতিসংঘের গাজা প্রস্তাব ফিলিস্তিনিদের অধিকার পূরণে ব্যর্থ: হামাস জাতিসংঘের গাজা ভোটকে স্বাগত জানিয়েছে ফিলিস্তিন মাসে গড়ে ঢাকায় ২০ হত্যা: পুলিশ নির্বাচন `উৎসবমুখর` করতে তথ্যচিত্র বানাবে সরকার: অর্থ উপদেষ্টা স্ত্রী-কন্যাসহ নানকের ৫৭ ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ মহীউদ্দীন খান আলমগীর ও স্ত্রীর ৩৩ ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ লি‌বিয়া থে‌কে দে‌শে ফি‌রলেন ১৭০ বাংলা‌দে‌শি আগামী সপ্তাহ থেকে ক্রমশ তাপমাত্রা কমবে হাসিনার বিরুদ্ধে রায় প্রমাণ করে, কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়: প্রধান উপদেষ্টা কিশোরগঞ্জে সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর দণ্ডিত আসামির বক্তব্য প্রচার নয়: এনসিএসএ ট্রাম্পের গাজা পরিকল্পনায় জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের অনুমোদন

আন্তর্জাতিক

রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে আসিয়ানের ভূমিকা

 প্রকাশিত: ২৩:০৪, ২২ অক্টোবর ২০২০

রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে আসিয়ানের ভূমিকা

১৯৯৭ সালে মিয়ানমার যখন আসিয়ান সংগঠনে যোগ দেয়, তখন সেটিকে দেশটির ওপর চীন ও ভারতের প্রভাব কমানোর কৌশলগত পদক্ষেপ হিসেবে মনে করা হচ্ছিলো। এরপর আসিয়ানের সঙ্গে দেশটির সম্পর্ক অনেক উত্থান-পতনের ভেতর দিয়ে গেছে, যার অধিকাংশই ঘটেছে দেশটিতে মানবাধিকার লঙ্ঘণের বিভিন্ন ঘটনাকে কেন্দ্র করে।

২০০৬ সালে মিয়ানমারকে সংগঠনটির চেয়ারম্যান পদ ছেড়ে দিতে হয়েছিল। কারণ যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন জানিয়েছিল, মিয়ানমার এই পদে থাকলে তারা আসিয়ানের বৈঠক থেকে নিজেদের বয়কট করে নেবে। এছাড়া ২০০৭ সালেও আসিয়ানের সদস্য ভুক্ত নয় দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মিয়ানমারে চলা সরকারি দমন-পীড়ন নিয়ে সমালোচনা করেছিল।

২০০৮ সালে আসিয়ান ফের মিয়ানমার সরকারের সমালোচনা করে যখন ঘূর্ণিঝড় নার্গিসের আঘাতে দেশটির এক লাখ ৪০ হাজার মানুষের মৃত্যু ও আট লাখের বেশি মানুষ বাস্তচ্যুত হওয়ার পরও দেশটি কোনো ধরনের আন্তর্জাতিক সহায়তা নিতে অস্বীকৃতি জানায়।

মিয়ানমার সরকারের এই আচরনের পর আসিয়ানের সদস্য দেশসমূহের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা এক জরুরি বৈঠকে বিশেষ কৌশলের মাধ্যমে মিয়ানমারে আন্তর্জাতিক সহায়তা পাঠানোর পরিকল্পনা করেন। কিন্তু মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর দেশটির সেনাবাহিনীর চালানো নির্যাতন ও গণহত্যার ঘটনায় কোনো বড় পদক্ষেপ নেয়ার ক্ষেত্রে আসিয়ানকে বেশ অনিচ্ছুক দেখা গেছে।

দশকের পর দশক ধরে নির্যাতন ও নিগ্রহের শিকার রোহিঙ্গাদের ওপর ২০১২ সাল থেকে নির্যাতনের মাত্রা আরো অনেক বাড়িয়ে দেয় মিয়ানমারের সেনা সরকার। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে দেশটির ওপর আন্তর্জাতিক বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞার চাপও বাড়তে থাকে। কিন্তু ২০১৪ সালের আগ পর্যন্ত আসিয়ান মিয়ানমারের এই চরম মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাকে কোনো গুরুত্ব দেয়নি।

সেসময়ে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতন থেকে বাঁচতে রোহিঙ্গারা সমুদ্র পথে মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ায় পালিয়ে যাওয়া শুরু করে। এ ঘটনায় ২০১৫ সালে থাইল্যান্ডের উদ্যোগে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। তবে আঞ্চলিক ভাবে উদ্যোগটি অকার্যকরই থাকে। এমনকি বর্তমান সময়ে বিষয়টি বিশ্বজুড়ে আলোড়ন তুললেও আসিয়ানে এটির গুরুত্ব আগের মতনই রয়ে গেছে।

২০১৭ সালে বিদ্রোহী বাহিনী আরসার বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর নামে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা, নির্যাতন, বাড়ি-ঘরে অগ্নিসংযোগ ও ধর্ষণ শুরু করার পর আসিয়ানকে এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ করা হয়। কিন্তু এক্ষেত্রেও নীরব ভূমিকা পালন করে সংগঠনটি।
সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে রোহিঙ্গা সংকটে আসিয়ানের ভূমিকা নিয়ে বেশ কিছু তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।

প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, সংগঠনটিকে যেহেতু নিজেদের নীতিমালা বজায় রেখে আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক চাপ সামলাতে বেশ বেগ পেতে হয়েছে, তাই এটি রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় কোনো সার্বিক পদক্ষেপের বদলে ছোট ছোট উদ্যোগ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে বাস্তবতার নিরিখে এসব পদক্ষেপ অপ্রতুল। নির্যাতন-গণহত্যার শিকার হয়ে লাখ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশে আশ্রয় নেবার পর তাদের মাণবিক সাহায্য প্রদানের ক্ষেত্রেও সংগঠনটির উদ্যোগ ছিল অপর্যাপ্ত।

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের সবচেয়ে সক্রিয় সংগঠণ হওয়ার পরও আসিয়ান রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছে। এছাড়া চীন, ভারত, জাপানের পর মিয়ানমারও অঞ্চলটিতে নতুন শক্তি হিসেবে আবির্ভাব হতে শুরু করায় ঝুঁকির মুখে পড়েছে সংগঠনটির কার্যকারীতা। প্রশ্ন উঠেছে, আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় কতটা সক্ষম আসিয়ান।

অনলাইন নিউজ পোর্টাল