বৃহস্পতিবার ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, আশ্বিন ৩ ১৪৩২, ২৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

প্রযুক্তি

সাইকিডেলিক মাশরুম মনস্তাত্ত্বিক সমস্যা নিয়ন্ত্রণে কার্যকরী

 প্রকাশিত: ১৭:৪৮, ২৭ এপ্রিল ২০২১

সাইকিডেলিক মাশরুম মনস্তাত্ত্বিক সমস্যা নিয়ন্ত্রণে কার্যকরী

ছত্রাকের পেছনে শিল্পপতিদের কোটি কোটি ডলার বিনিয়োগের গল্প সত্যিই অবাক করার মতো! তবে তা তবে যে সে ছত্রাক নয়, সাইকিডেলিক ‘জাদু’ মাশরুম। বলা হচ্ছে বিশ্বের অর্থনীতি বদলে দিতে পারে এই মাশরুম!
ব্রিটিশ কলোম্বিয়ার ভ্যাঙ্কুভার দ্বীপে একটি খ্যাতিমান গবেষণাগার রয়েছে; যেটার নাম ‘শোরুম বুম’। সেই গবেষণাগারের তাপমাত্রা, আর্দ্রতা এমনকি আলোর তীব্রতাও যন্ত্র দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। ২৪ ঘণ্টা দক্ষ কর্মীরা সেখানে ক্রমাগত পর্যবেক্ষণ চালিয়ে যাচ্ছেন কিছু কাচের বাক্সের। আর সেই বাক্সগুলোতেই রয়েছে সাইকিডেলিক মাশরুম।

যে মাশরুমের এত নিরাপত্তা; এত নাম-ডাক! এর নেপথ্য কারণ কী? এই ছত্রাকের রয়েছে বহু স্বাস্থ্যকর উপাদান, ঔষধি গুণ। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয়টি হল, মানসিক চিকিৎসায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে চলেছে এই মাশরুম।

গবেষকরা জানাচ্ছেন, সাইকিডেলিক মাশরুমে উপস্থিত একটি বিশেষ উপাদান ‘সিলোসাইবিন’ স্ট্রেস, অ্যাংসাইটি, হতাশা-র মতো মনস্তাত্ত্বিক সমস্যা নিয়ন্ত্রণে সক্ষম। তাছাড়া এতে উপস্থিত আরও কিছু উপাদান ক্যানসার নিরাময় ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতেও সাহায্য করে। 

১৯৬০-এর দশক থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডাসহ বেশ কয়েকটি দেশে এই মাশরুমের ওপর আইনি নিষেধাজ্ঞা জারি ছিল। এর সাইকিডেলিক ক্ষমতাই ছিল মূল কারণ। অনেকটা মারিজুয়ানার মতোই মানুষকে হ্যালুসিনেশনে আচ্ছন্ন করে এই ছত্রাক। সম্প্রতি এই ছত্রাকের ওষুধি ক্ষমতা সামনে আসার পরেই পুনরায় ধুম পড়ে গেছে তার চাষের। তুলে নেয়া হয় নিষেধাজ্ঞা।

সর্বপ্রথম যুক্তরাষ্ট্রের ওরেগন প্রদেশে তুলে নেয়া হয়েছিল নিষেধাজ্ঞা। তারপর নিউইয়র্ক সিটিতেও আইনীকরণ করা হয়েছিল সাইকিডেলিক মাশরুমের চাষে। বেশ কয়েক বছর ধরে কানাডায় এই মাশরুমের ওপর গবেষণা চললেও, গত আগস্টে বাণিজ্যিকভাবে এই ছত্রাক উৎপাদনের অনুমতি দেয় সরকার। 

বর্তমানে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে গোটা বিশ্বকে এই মাশরুম উৎপাদনের পথ দেখাচ্ছে কানাডা। শুধু চিকিৎসাই নয়। এই মাশরুমের ভিন্ন ভিন্ন উপাদান ব্যবহৃত হচ্ছে খাদ্য উপাদান হিসাবেও। চা, কফি কিংবা বিয়ারের মধ্যেও ব্যবহৃত হচ্ছে এই মাশরুমের নির্যাস। তা একাংশে যেমন খাদ্যের গুণগত মান বৃদ্ধি করছে, তেমনই বাড়িয়ে দিচ্ছে সংরক্ষণ করার সময়সীমাও। আন্তর্জাতিক বাজারে এখনও সেভাবে এই ছত্রাকের ব্যবসায়িক অনুমোদন দেয়নি রেগুলেটরি সংস্থাগুলো। তবে সেই সবুজ সংকেত পাওয়া এখন স্রেফ সময়ের অপেক্ষা।

অনলাইন নিউজ পোর্টাল