বৃহস্পতিবার ০১ মে ২০২৫, বৈশাখ ১৮ ১৪৩২, ০৩ জ্বিলকদ ১৪৪৬

জাতীয়

চিন্ময় দাসের জামিন স্থগিতের আদেশ প্রত্যাহার, রোববার শুনানি

 প্রকাশিত: ২১:৪৮, ৩০ এপ্রিল ২০২৫

চিন্ময় দাসের জামিন স্থগিতের আদেশ প্রত্যাহার, রোববার শুনানি

রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় প্রাক্তন ইসকন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত করে চেম্বার আদালত প্রথমে যে আদেশ দিয়েছিলেন, কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে তা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। তবে জামিন স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনের ওপর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে চিন্ময়ের আইনজীবীর বক্তব্য শোনা হবে। এজন্য আগামী রোববার (৪ মে, ২০২৫) শুনানির নতুন দিন ধার্য করেছেন চেম্বার বিচারপতি মো. রেজাউল হক।

বুধবার (৩০ এপ্রিল) সন্ধ্যায় এই নাটকীয় পরিবর্তন ঘটে। এর আগে বিকেল ৫টা ৫০ মিনিটের দিকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন আদেশ স্থগিত করেছিলেন চেম্বার আদালত। তখন আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার অনীক আর হক ও আরশাদুর রউফ উপস্থিত থাকলেও চিন্ময় দাসের কোনো আইনজীবী ছিলেন না।

পরে সন্ধ্যায় চিন্ময় দাসের আইনজীবী অপূর্ব কুমার ভট্টাচার্য এবং রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা নিশ্চিত করেন যে, চেম্বার আদালত তার পূর্বের স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার (রিকল) করেছেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা জানান, চেম্বার বিচারপতি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে, তিনি আগামী রোববার আসামিপক্ষের আইনজীবীর বক্তব্য শুনবেন এবং এরপর জামিন স্থগিতের আবেদনের বিষয়ে চূড়ান্ত আদেশ দেবেন।

এর আগে বুধবার বিকেলে বিচারপতি মো. আতোয়ার রহমান ও বিচারপতি মো. আলী রেজার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন মঞ্জুর করেন। জামিন প্রশ্নে আগে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে এই রায় দেওয়া হয়। আদালতে চিন্ময়ের পক্ষে আইনজীবী অপূর্ব কুমার ভট্টাচার্য এবং রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার অনীক আর হক ও আব্দুল জব্বার ভূঁইয়া শুনানি করেন। হাইকোর্টের জামিন আদেশের পরপরই রাষ্ট্রপক্ষ তা স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে আবেদন জানায়।

মামলার প্রেক্ষাপট: উল্লেখ্য, গত বছরের ২৫ অক্টোবর চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের নেতৃত্বে চট্টগ্রামে সনাতনী সম্প্রদায়ের একটি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এর কিছুদিন পর ৩১ অক্টোবর তার বিরুদ্ধে জাতীয় পতাকার অবমাননার অভিযোগে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা দায়ের করা হয়, যেখানে আরও ১৮ জনকে আসামি করা হয়।

এই মামলায় গত ২৫ নভেম্বর চিন্ময় দাসকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন (২৬ নভেম্বর) চট্টগ্রামের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। সেদিন আদালত চত্বরে চিন্ময়ের অনুসারীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও আইনজীবীদের সংঘর্ষ হয় এবং সরকারি আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এরপর থেকে চিন্ময় দাস কারাগারেই ছিলেন।

চলতি বছরের ২ জানুয়ারি চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতও তার জামিন আবেদন নাকচ করে দিলে তিনি হাইকোর্টে জামিনের জন্য আবেদন করেন, যার ফলশ্রুতিতে বুধবার হাইকোর্ট জামিন মঞ্জুর করেন। এখন তার জামিনে মুক্তির বিষয়টি চেম্বার আদালতের রোববারের শুনানির ওপর নির্ভর করছে।