বুধবার ০৫ নভেম্বর ২০২৫, কার্তিক ২০ ১৪৩২, ১৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

ব্রেকিং

বিএনপির মনোনয়ন: মেহেরপুরে দুপক্ষে সংঘর্ষ, ভাঙচুর-অবরোধ ডেঙ্গু: ২৪ ঘণ্টায় আরও চারজনের মৃত্যু এনসিপিসহ ৩ দল পাচ্ছে নিবন্ধন আওয়ামী আমলে জলবায়ু প্রকল্পে ২১১০ কোটি টাকার বেশি দুর্নীতি: টিআইবি দুটি দল যা বলে সরকার ‘তাই করছে’: মির্জা আব্বাস যশোরে আলোচনায় ‘কম বয়সী’ প্রার্থী শ্রাবণ শাহজালালের ই-গেট খুলে দেওয়া হয়েছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নোয়াখালীতে ট্রাকের চাপায় ৬ অটোরিকশাযাত্রী নিহত নেতাকর্মীদের অবৈধ সুবিধা দিলেই পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা শাহজালাল বিমানবন্দর: পোড়া কার্গো কমপ্লেক্সের ভল্ট ভেঙে অস্ত্র চুরির অভিযোগ আগামী সপ্তাহে হাসিনার বিচার হবে: তথ্য উপদেষ্টা এই নির্বাচন আমার শেষ নির্বাচন: মির্জা ফখরুল ভোট: প্রশিক্ষণ পেলেন ৪৮ হাজার পুলিশ সদস্য `যথাসময়ে` প্রার্থী ঘোষণা করবে জামায়াত: শফিকুর ফেরারি হলে ভোটে অযোগ্য, আর যা যা পরিবর্তন এল আরপিওতে জোট করলেও নিজ দলের প্রতীকে ভোট, অধ্যাদেশ জারি মেক্সিকোর মাদক চক্র প্রভাবিত রাজ্যে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত ১৩

ইসলাম

একটি ভিত্তিহীন কিসসা: মূসা আ. ও রাখালের কাহিনী

 আপডেট: ২১:৩৪, ২৬ জুলাই ২০২৫

একটি ভিত্তিহীন কিসসা: মূসা আ. ও রাখালের কাহিনী

মূসা আ. ও আল্লাহর মাঝে কথোপকথন কেন্দ্রিক বানোয়াট কিসসা-কাহিনীর শুরু-শেষ নেই। তেমনি একটি কিসসা কোনো কোনো অসতর্ক বক্তাকে বলতে শোনা যায়। কিসসাটি হল-

‘একদিন আল্লাহ তাআলার সঙ্গে কথা বলার জন্য হযরত মূসা আ. তূর পাহাড়ে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে একজন রাখালকে দেখতে পান, রাখাল কেঁদে কেঁদে আল্লাহকে ডেকে বলছে, ওগো আমার মাওলা! আমি যদি তোমাকে পাইতাম, তবে সাবান দিয়া গোছল করাইয়া দিতাম। মাথার চুল আঁচড়াইয়া দিতাম। তোমার চোখে সুরমা লাগাইয়া দিতাম। বকরি দোহাইয়া দুধ পান করাইতাম ইত্যাদি।

রাখালের কথা শুনিয়া মূসা আ. বলিলেন, রাখাল! এসব তুমি কী বলিতেছ? মাবুদের কি মানুষের মত শরীর আছে? মাবুদের শানে এইসব কথা বলার জন্য তুমি কাফের হইয়া গিয়াছ। তুমি সত্বর তওবা কর। নচেৎ তোমার উপায় নাই।

হযরত মূসা আ.-এর কথা শুনিয়া রাখালের ধ্যান ছুটিয়া যায়। চক্ষু মেলিয়া মূসা আ.-কে দেখিয়া ভয় পাইয়া সে দৌড়াইয়া জঙ্গলে চলিয়া যায়।

তখন আল্লাহ তাআলার পক্ষ হতে মূসা আ.-এর কাছে ওহী আসে- হে মূসা! এই ব্যক্তি আমার সাথে কী মজার প্রেমের কথা বলিতেছিল, আমি ইহাতে কত খুশি হইতেছিলাম। তুমি তাহাতে বাধা দিয়া কেন তাকে আমার থেকে জুদা করিয়া দিলা? তোমাকে তো পয়গম্বর বানাইয়া এইজন্য পাঠাইয়াছি যে, তুমি মানুষকে আমার সঙ্গে জুড়িয়া দিবা। কিন্ত তুমি এটা কী করিলে? আমার বান্দাকে আমার থেকে পৃথক করিয়া দিলে?!

তখন মূসা আ.-এর মনে হইল, আল্লাহ পাক যেমন নারাজ হইয়াছেন, তাহাতে হয়ত আমার পয়গম্বরিও ছিনাইয়া লইতে পারেন। তাই তাড়াতাড়ি রাখালকে খুঁজে বের করে ওযর পেশ করেন এবং তাকে পূর্ববৎ কথা চালিয়ে যেতে বলেন।

রাখাল তখন বলে, হে মূসা! আপনি আমাকে আল্লাহর এশক থেকে বহু দূরে সরাইয়া দিয়াছেন। আমি আল্লাহর এশকে গরক হইয়া ছেদরাতুল মুনতাহা হইতে এক লাখ বৎসরের রাস্তা অতিক্রম করিয়াছিলাম। বাধা দিয়া আপনি আমাকে সেই নিআমত থেকে বঞ্চিত করিয়াছেন।’

এটি একটি বানোয়াট কিসসা। এর কোনো ভিত্তি নেই। কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে, এমনকি জাল সূত্রেও তা পাওয়া যায় না।

তাছাড়া এ কিসসাটিতে একইসাথে আল্লাহ তাআলার শানে এবং তাঁর বিশিষ্ট নবী ও রাসূল মূসা আ.-এর বিষয়ে ধৃষ্টতাপূর্ণ কথাবার্তা রয়েছে। সুতরাং তা একটি মুনকার ও আপত্তিকর কিসসা। এটি বলা ও প্রচার করা অন্যায়।

কোনো কোনো বইয়েও কিসসাটি নকল করতে দেখা যায়; কিন্তু কেউই এর কোনো সনদ বা সূত্র উল্লেখ করেন না।

অনেকে এ কিসসাটি বলেন এবং এতে যে উদ্ভট কথাবার্তা রয়েছে, তার বিভিন্ন ব্যাখ্যা দাঁড় করান; যা মোটেও কাম্য নয়।

প্রথমে কোনো বর্ণনা সূত্রগত দিক থেকে প্রমাণিত হতে হবে; এরপর এতে জনসাধারণের বোধগম্য নয়- এমন কোনো কথা থাকলে শরীয়তের উসূল ও মূলনীতির আলোকে তার ব্যাখ্যা করতে হবে। কিন্তু কোনো বিষয় যদি প্রমাণিতই না হয়, তার আবার ব্যাখ্যা কীসের।

এ কিসসা প্রসঙ্গে কেউ কেউ তো -নাউযু বিল্লাহ- এমন কথাও বলে যে, কখনো কখনো একজন সাধারণ আল্লাহর ওলী মারেফাতের এমন স্তরে পৌঁছে যান যে, একজন নবীরও সে সম্পর্কে খবর থাকে না। যেমন এ কিসসায়...! নাউযুবিল্লাহি মিন যালিক। এ তো স্পষ্টই কুফরী কথা।

আল্লাহ আমাদের এরকম ধৃষ্টতাপূর্ণ কথা বলা থেকে হেফাজত করুন।

সুত্র: মাসিক আল-কাউসার