বুধবার ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, পৌষ ৩ ১৪৩২, ২৬ জমাদিউস সানি ১৪৪৭

ব্রেকিং

চেক প্রধানমন্ত্রী বাবিসকে ট্রাম্পের অভিনন্দন বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে ভারতের নসিহতের দরকার নেই: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা প্রায় ২০০ পর্যবেক্ষক পাঠাবে ইইউ: ইসি সচিব মা-মেয়ে খুন: স্বামীর পর গৃহকর্মী আয়েশারও স্বীকারোক্তি বন্ডাই বিচ হত্যাকাণ্ড: নাবিদ আকরামের বিরুদ্ধে হত্যার ১৫ অভিযোগ বিদেশে শ্রমশক্তি রপ্তানিতে বড় বাধা দালাল চক্র: প্রধান উপদেষ্টা ‘গুম, হত্যা’: জিয়াউল আহসানের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ পশ্চিম তীরে কানাডীয় এমপিদের প্রবেশে বাধা দিল ইসরাইল ইরানকে পরমাণু কর্মসূচিতে ফেরার সুযোগ না দিতে হবে: মোসাদ প্রধান লন্ডনে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে তারেকের ‘বিদায়ী ভাষণ’, চাইলেন ঐক্য হাদিকে হত্যাচেষ্টা: ফয়সালের মা-বাবা গ্রেপ্তার নাছোড় বিএনপির ‘বঞ্চিতরা’, রাজশাহীর ৩ আসন ‘উত্তপ্ত’ পোস্টাল ভোট: নিবন্ধন ছাড়াল ৪ লাখ ৫৭ হাজার আরেকটু হলেই চীনা স্যাটেলাইটের সঙ্গে ধাক্কা খেত স্টারলিংক ফিলিস্তিনসহ ৭ দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা

ইসলাম

ঝুঁকিতে বিশ্ব ঐতিহ্য ষাটগম্বুজ মসজিদ!

 প্রকাশিত: ২১:০৩, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫

ঝুঁকিতে বিশ্ব ঐতিহ্য ষাটগম্বুজ মসজিদ!

পঞ্চদশ শতকের সুলতানি আমলে বাগেরহাটে নির্মিত ষাটগম্বুজ জামে মসজিদটি জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কো ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ। মাত্রাতিরিক্ত লবণাক্ততা, জলবায়ু পরিবর্তন, আর্দ্রতা ও বায়ুদূষণের সম্মিলিত প্রভাবে মসজিদটির দেয়াল, মিহরাব, স্তম্ভ ও গম্বুজে ক্ষয় দেখা দিয়েছে।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, মসজিদটির মোট ১০টি মিহরাব দক্ষিণে ৫টি, উত্তরে ৪টি এবং মাঝের প্রধান মিহরাব—দ্রুতগতিতে ক্ষয়ে পড়ছে। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, জরুরিভিত্তিতে সংরক্ষণকাজ শুরু না হলে মিহরাবগুলো যে কোনো সময় ধসে পড়তে পারে, এতে পুরো স্থাপনাটির মূল কাঠামো হুমকির মুখে পড়বে।

চুন-সুরকি, পোড়ামাটির ইট ও বেলে পাথরের সমন্বয়ে নির্মিত এই স্থাপনাটির নিচের অংশে নোনা পানি শুকিয়ে জমছে লবণের স্ফটিক। এসব স্ফটিক ইটপাথরের বন্ধন দুর্বল করছে দ্রুত। দেয়ালে দেখা যাচ্ছে সাদা লবণের স্তর, ফাটল ও খসে পড়া অংশ। মিহরাবের অলংকরণও দ্রুত বিবর্ণ হয়ে যাচ্ছে।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক সোসাইটি ও আইকমসের যৌথ গবেষণায় দেখা গেছে, তাপমাত্রার পরিবর্তন, বর্ষায় অতিরিক্ত আর্দ্রতা, শিল্পায়নের ফলে বায়ুদূষণ এবং লবণাক্ততার মাত্রা বৃদ্ধির কারণে মসজিদের ক্ষয় গত কয়েক বছরে বহুগুণ বেড়েছে।

এই গবেষণার ভিত্তিতে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর পাঁচ সদস্যের বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে। এরই মধ্যে কমিটির সদস্যরা সরেজমিন পরিদর্শন শেষে তাদের সুপারিশ জমা দিয়েছেন।

কমিটির প্রধান ও প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক ড. মো. শফিকুল আলম বলেন, ‘সিডর ও আইলার জলোচ্ছ্বাস থেকে আসা লবণাক্ত পানি মিহরাবগুলোর বড় ধরনের ক্ষতি করেছে। বেলে পাথর নরম ও ছিদ্রযুক্ত হওয়ায় লবণের আক্রমণে দ্রুত ভেঙে যাচ্ছে। দুই পাশের স্তম্ভেও শূন্যতা তৈরি হয়েছে, আর পাথর ধরে রাখা লোহার ক্ল্যাম্পে জং ধরেছে। ফলে যে কোনো সময় মিহরাবগুলো ভেঙে পড়তে পারে।’

তিনি সতর্ক করে আরও বলেন, ‘‘মিহরাব ধসে পড়লে ইউনেস্কো ষাটগম্বুজ মসজিদকে ‘বিপজ্জনক বিশ্ব ঐতিহ্য’ তালিকায় স্থান দিতে পারে, যা জাতীয় মর্যাদার জন্য বড় আঘাত হবে।’’

ইউনেস্কোর ঢাকা অফিসের পরামর্শ অনুযায়ী সাময়িক সংরক্ষণকাজ জরুরি ভিত্তিতে শুরু করার সুপারিশও বিশেষজ্ঞ কমিটির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রয়োজনে এতে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অভিজ্ঞ স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ারদের যুক্ত করা হবে।