বন্ডাই বিচ হত্যাকাণ্ড: নাবিদ আকরামের বিরুদ্ধে হত্যার ১৫ অভিযোগ
অস্ট্রেলিয়ার সিডনির জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্য বন্ডাই বিচে নির্বিচার হত্যাকাণ্ডের একমাত্র জীবিত সন্দেহভাজন নাবিদ আকরামের বিরুদ্ধে খুন, সন্ত্রাসবাদসহ ৫৯টি অভিযোগে দায়ের করা হয়েছে।
বুধবার নিউ সাউথ ওয়েলস পুলিশ জানিয়েছে, এর মধ্যে হত্যার ১৫টি এবং ৪০টি হত্যা চেষ্টার উদ্দেশ্যে জখম করার, সন্ত্রাসী অপরাধ ও অন্যান্য অভিযোগ রয়েছে।
আরেক হামলাকারী বন্দুকধারী, নাবিদ আকরামের বাবা সাজিদ আকরাম (৫০), পুলিশের গুলিতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন।
নাবিদও ঘটনাস্থলে গুলিবিদ্ধ হন। তবে তিনি বেঁচে আছেন। গুরুতর আহত অবস্থায় পুলিশ হেফাজতে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন তিনি। তার বিরুদ্ধে ‘নিষিদ্ধ সন্ত্রাসী সংস্থার প্রতীক প্রদর্শনের’ একটি অভিযোগও আনা হয়েছে।
রোববারের এই হামলার ঘটনাটি প্রায় ৩০ বছরের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ায় হওয়া নির্বিচার গুলিবর্ষণের সবচেয়ে ভয়াবহ ঘটনা। এই হামলায় ১৫ জন নিহত হন। এটিকে ইহুদি সম্প্রদায়কে লক্ষ্যস্থল করে চালানো সন্ত্রাসবাদী হামলা হিসেবে চিহ্নিত করে তদন্ত করা হচ্ছে।
নিউ সাউথ ওয়েলসের স্থানীয় আদালত জানিয়েছে, হাসপাতালের বিছানা থেকেই প্রথম শুনানির মুখোমুখি হয়েছিলেন নাবিদ।
শুনানির পর মামলার কার্যক্রম এপ্রিল ২০২৬ পর্যন্ত স্থগিত রাখা হয়েছে বলে আদালতের বরাতে জানিয়েছে বিবিসি।
নিউ সাউথ ওয়েলস পুলিশ কমিশনার ম্যাল ল্যানিয়ন বুধবার বলেছেন, আকরামকে আনুষ্ঠানিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করার আগে চিকিৎসাকালে তাকে দেওয়া ওষুধের প্রভাব শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করা হচ্ছে।
“তার সুবিচারের জন্য, তাকে পুরো ঘটনাটি বোঝার সুযোগ দিতে হবে,” বলেছেন ল্যানিয়ন।
বিবিসি লিখেছে, হামলায় আহত ২০ জন এখনও সিডনির বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন, যার মধ্যে একজনের অবস্থা সঙ্কটজনক।
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ বলেছেন, হামলাটি ‘ইসলামিক স্টেট’ গোষ্ঠীর মতাদর্শ দ্বারা প্রভাবিত বলে মনে হচ্ছে।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই আহত তরুণের নামে নিবন্ধিত একটি গাড়িতে হাতে তৈরি বোমা ও আইএসের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ঘরে তৈরি দুটি পতাকা পাওয়া গেছে।
মঙ্গলবার প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, আকরাম এবং তার বাবা হামলার এক মাস আগে ফিলিপিন্স সফর করেছিলেন। ফিলিপিন্সের অভিবাসন ব্যুরো জানিয়েছে, তারা ১ নভেম্বর থেকে ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত দেশটিতে ছিলেন। তাদের শেষ গন্তব্য ছিল দক্ষিণাঞ্চলের দাভাও শহর।
নাবিদ আকরাম অস্ট্রেলিয়ান পাসপোর্ট ব্যবহার করে ফিলিপিন্স গিয়েছিলেন, আর তার বাবা সাজিদ ভারতীয় পাসপোর্ট ব্যবহার করেছিলেন বলে মানিলার সীমান্ত কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
সাজিদ আকরাম ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর হায়দ্রাবাদ থেকে অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে সেখানেই থিতু হয়েছিলেন। তার সঙ্গে হায়দ্রাবাদে থাকা তার পরিবারের ‘সীমিত যোগাযোগ’ ছিল বলে জানিয়েছে ভারতের তেলেঙ্গানা রাজ্যের একজন পুলিশ কর্মকর্তা।