প্রায় ২০০ পর্যবেক্ষক পাঠাবে ইইউ: ইসি সচিব
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ‘১৭৫ থেকে ২০০ জন’ পর্যবেক্ষক পাঠাবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন সচিব আখতার আহমেদ।
বুধবার র নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান তিনি।
বাংলাদেশে ইইউ নির্বাচনি পর্যবেক্ষণ মিশনের প্রধানের দায়িত্ব পেয়েছেন ইভার্স ইইয়াবস।
সচিব বলেন, নির্বাচন পর্যবেক্ষণের বিষয়ে ইইউ, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও নির্বাচন কমিশনের মধ্যে একটি প্রশাসনিক চুক্তি হয়েছে। এ চুক্তির আলোকে ইইউ একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশে পাঠাবে।
“এখন পর্যন্ত ডেলিগেশন প্রধানের নাম জানানো হয়েছে। আমাদের ধারণা দেওয়া হয়েছে যে, ১৭৫ থেকে ২০০ জনের মতো পর্যবেক্ষক আসতে পারেন। তবে সুনির্দিষ্ট সংখ্যা এবং তাদের বিস্তারিত সূচি পরে জানানো হবে।”
সচিব জানান, ত্রিপক্ষীয় চুক্তির আওতায় পর্যবেক্ষক দলকে প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক সুবিধা দেওয়া হবে। বিশেষ করে তাদের যাতায়াত ও চলাফেরায় কমিশন সহযোগিতা করবে।
আবার পার্বত্য চট্টগ্রামের মতো বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে স্থানীয় নিরাপত্তা প্রোটোকল কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে বলেও জানান আখতার আহমেদ।
তিনি বলেন, “তারা তাদের সঙ্গে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম নিয়ে আসবেন এবং কাজ শেষে তা ফেরত নিয়ে যাবেন। এছাড়া তারা বাংলাদেশের স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক নির্বাচন পর্যবেক্ষণ নীতিমালা মেনেই কাজ করবেন বলে চুক্তিতে উল্লেখ আছে।”
ইইউ ছাড়া এখন পর্যন্ত তুরস্ক থেকে এবং আরও দুই-একটি সংস্থা থেকে পর্যবেক্ষণের বিষয়ে প্রস্তাব এসেছে বলে তুলে ধরেন ইসি সচিব।
‘নিরাপত্তা বিষয়টা প্রাধান্য পাক’
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরীফ ওসমান বিন হাদিকে গুলি করার পর জুলাইয়ের সম্মুখ সারির যোদ্ধা ও ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীদের বিশেষ নিরাপত্তা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
তারই ধারাবাহিকতায় রাজনৈতিকভাবে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ ব্যক্তি এবং নির্বাচনের প্রার্থীদের আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স পাওয়ার এবং রিটেইনার (গানম্যান) নিয়োগের সুযোগ দিতে সোমবার নীতিমালা জারি করে সরকার।
এ বিষয়ে এক সাংবাদিক জানতে চাইলে ইসি সচিব বলেন, নির্বাচনের আগে প্রার্থীদের অস্ত্র দেওয়ার বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কোনো আলোচনা হয়নি। তবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নিরাপত্তার বিষয়টা বিবেচনা করে যেটা ভালো মনে করেছেন, করেছেন এবং নিশ্চয়ই সবাই একমত যে নিরাপত্তার বিষয়টা প্রাধান্য পাক।
প্রয়োজনে নির্বাচন আচরণবিধি সংশোধন, সংযোজন বা বিয়োজন করা হতে পারে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
“এর সঙ্গে আচরণ বিধির আপাতত কোনো বিরোধ নেই। যদি মনে হয়, ওভার দ্যা পিরিয়ড অব টাইম, আচরণবিধি এখানে কোনো জায়গার সামান্য সংশোধন বা সংযোজন বা বিয়োজন বা অ্যডজাস্টমেন্ট লাগবে, তখন দেখা যাবে।
এ ধরনের প্রটোকল দিয়ে প্রার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব কিনা জানতে চাইলে ইসি সচিব বলেন, “মাননীয় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে প্রশ্নটা করলে বোধহয় আমার জন্য ভালো হয়। এ ব্যাপারে কোনো কথা হয়নি বা উনাদের থেকেও…কাজেই আমি এর ব্যাখ্যাটা দিতে গেলে অপব্যাখ্যা হওয়ার সম্ভাবনা আছে, যেটা আমি করতে চাই না। নিরাপত্তার বিষয়ে সবারই চেষ্টা করা উচিত।”
ভোটের আগে বৈধ অস্ত্র জমা দেওয়ার বিষয়ে ইসি সচিব বলেন, “এটা সময়ের ব্যাপার। এগুলো সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আসবে, বৈধ অস্ত্র জমা নেওয়ার বিষয়টা যখন প্রাসঙ্গিক হবে, তখন যদি মনে করা হয় যে নিরাপত্তার বিষয়টা বিবেচনা নিবেন, সে অনুযায়ী এটা ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
গত ১১ ডিসেম্বর ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণা করেন সিইসি।
১২ ফেব্রুয়ারি এ নির্বাচন হবে।