চীন গোপনে ইরানকে ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির গুরুত্বপূর্ণ রাসায়নিক উপাদান সরবরাহ করছে—এমন তথ্য প্রকাশ করেছে সিএনএন
ইরানে ভয়ংকর ক্ষেপণাস্ত্র বানাতে সাহায্য করছে চীন: শঙ্কিত ট্রাম্প প্রশাসন
চীন গোপনে ইরানকে ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির জন্য গুরুত্বপূর্ণ রাসায়নিক উপাদান পাঠাচ্ছে বলে দাবি করেছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবর পর্যন্ত চীন থেকে ইরানে প্রায় ২ হাজার টন বিস্ফোরক উপাদান পৌঁছেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এগুলো ক্ষেপণাস্ত্রের সলিড ফুয়েল তৈরির জন্য অপরিহার্য, যা ইরানের সামরিক শক্তিকে আরও বাড়াবে।মার্কিন কংগ্রেসম্যান রাজা কৃষ্ণমূর্তি ও জো কার্টিনি বিষয়টি নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছেন। তারা বলেছেন, চীন যদি ইরানকে এমন সমর্থন দেয়, মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়বে। যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপ কী হবে, তা জানতে চাই।
জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা অনুযায়ী, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচিতে কোনো দেশ সরাসরি বা পরোক্ষভাবে সহায়তা করতে পারবে না। তবে সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীন যে রাসায়নিক পাঠিয়েছে তা সরাসরি নিষিদ্ধ তালিকায় নেই। ফলে বিষয়টি আইনি ধূসর এলাকায় পড়ে।চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছে, তারা কোনো আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেনি এবং নিয়ম মেনে রপ্তানি কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। বেইজিং আরও জানিয়েছে, ইরান ইস্যুতে তারা শান্তিপূর্ণ সমাধান চায় এবং উত্তেজনা বৃদ্ধি করতে চায় না।
সিএনএনের জাহাজ ট্র্যাকিং তথ্য অনুযায়ী, চীনের কিছু মালবাহী জাহাজ নিয়মিতভাবে ইরানে এই রাসায়নিক সরবরাহ করছে। যেসব জাহাজ ও কিছু চীনা কোম্পানির ওপর আগেই যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল, তারা এ কার্যক্রমে জড়িত থাকতে দেখা গেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, এই তথ্য সত্য হলে এটি চীন-ইরান সামরিক সহযোগিতার গভীরতা প্রকাশ করে। পাশাপাশি ইরানের দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি দ্রুত সম্প্রসারিত হবে এবং মধ্যপ্রাচ্যের স্থিতিশীলতা ঝুঁকির মুখে পড়বে।
ট্রাম্প প্রশাসন এখনও আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করেনি। তবে হোয়াইট হাউসের কিছু কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বিষয়টি জাতীয় নিরাপত্তা পরামর্শক পর্যায়ে আলোচনা চলছে। তারা সতর্ক করে জানিয়েছেন, চীনের এই কার্যক্রম সত্য হলে এটি যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ ও আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্য বিপজ্জনক প্রমাণিত হবে।
মার্কিন নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা আরও সতর্ক করে বলছেন, চীনের সহায়তায় ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতা বৃদ্ধি পেলে ইসরায়েল, সৌদি আরব ও উপসাগরীয় অঞ্চলে নতুন অস্ত্র প্রতিযোগিতার ঝুঁকি তৈরি হবে।