মামুন হত্যা: পাঁচ দিন পর মামলা, আসামি ‘অজ্ঞাত’
পুলিশের তালিকাভুক্ত ‘শীর্ষ সন্ত্রাসী’ তারিক সাইফ মামুনকে পুরান ঢাকায় প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যার পাঁচদিন পর অজ্ঞাতপরিচয় ১০-১২ জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে।
মামুনের স্ত্রী বিলকিস আক্তার রীপা শনিবার ঢাকার সূত্রাপুর থানায় মামলাটি দায়ের করেন বলে ওসি মো. সাইফুল ইসলাম জানান।
ওই হত্যাকাণ্ডে ‘সরাসরি অংশ নেওয়া’ দুজনসহ পাঁচ আসামিকে পুলিশ গ্রেপ্তারের কথা জানালেও মামলায় তাদের কারো নাম উল্লেখ করা হয়নি।
ওসি বলেন, “আমি বাদীকে মামলা করার সময় এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, এ সময় সাথে উনার আইনজীবীও ছিলেন। তখন তিনি বলেছেন, তিনি কাউকে চেনেন না, তাই কারও নাম তিনি দিতে চান না।
“এখানে বাদীর ইন্টারেস্টতো আমাদের দেখতে হবে। বাদী বলেছেন তিনি কাউকে চেনেন না, আমরা যেন তদন্ত করে দেখি।”
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ‘তদন্ত করে ঘটনায় জড়িতদের বের করবেন’ বলে মন্তব্য করেন ওসি।
পুরান ঢাকার আদালত পাড়ার কাছে ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজের ফটকে ১০ নভেম্বর বেলা ১১টার দিকে গুলি করে হত্যা করা হয় মামুনকে।
এরপর মঙ্গলবার রাতে নরসিংদী থেকে মো. ফারুক হোসেন ফয়সাল (৩৮), রবিন আহম্মেদ ওরফে পিয়াস (২৫), মো. রুবেল (৩৪), শামীম আহম্মেদ (২২) নামে চারজন এবং ঢাকার রায়েরবাজার থেকে মো. ইউসুফ ওরফে জীবন (৪২) নামে একজনকে গ্রেপ্তার করে ডিবি।
পুলিশ বলছে, এদের মধ্যে ফারুক ও রবিন হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নেন; তারাই গুলি করেন।
তবে মামুন হত্যার ঘটনায় তখনও মামলা না হওয়ায় পুলিশ মোহাম্মদপুর থানায় অস্ত্র আইনের একটি মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে চার দিনের রিমান্ডে নেয়।
সেই মামলার বিবরণে বলা হয়, ‘কতিপয় দুষ্কৃতিকারী’ দিনে-দুপুরে জনম্মুখে মামুনকে গুলি করে হত্যা করে। এ ঘটনায় কোতয়ালি জোনাল টিমের এসআই কৃষ্ণ কুমার দাস ডিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ছায়া তদন্ত শুরু করেন। ছায়া তদন্তকালে এ হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার স্বপক্ষে তথ্য পেয়ে বিশেষ অভিযানে তাদের আটক করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে।
এজাহারে বলা হয়, আসামিরা হত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্র ও গুলির বিষয়ে তথ্য দিলে আসামি ইউসুফ মোহাম্মদপুরের রায়ের বাজারের রশিদ ম্যানশনের পেছনের একটি বাড়ি থেকে দুটি পিস্তল ও গুলি বের করে দেন। জব্দ করা অস্ত্রের মধ্যে ফারুক ও রবিন হত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্র শনাক্ত করেন। তারা দুজন একাধিকবার গুলি করে মৃত্যু নিশ্চিত করেন। তারা ‘স্বীকার করেন’, দুই লাখ টাকা পেয়ে তারা হত্যাকাণ্ডে অংশ নেন। এর মধ্যে এক লাখ ৫৩ হাজার ৬৪০ টাকা এবং হত্যাকাণ্ডের সময় ব্যবহত একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করে পুলিশ।
এদিকে পাঁচজনকে গ্রেপ্তারের পর ১২ নভেম্বর ডিবি পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, অপরাধ জগতে অন্তঃকোন্দলের জেরে ‘২ লাখ টাকায় খুনি ভাড়া করে’ মামুনকে খুন করা হয়।