রোববার ১৬ নভেম্বর ২০২৫, অগ্রাহায়ণ ২ ১৪৩২, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

ব্রেকিং

ইন্দোনেশিয়ার ভূমিধসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১১ বৃষ্টির জন্য আকাশে মেঘের বীজ বপন কার্যক্রম শুরু করেছে ইরান ভেনিজুয়েলার ব্যাপারে ‘একরকম’ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ট্রাম্প চিলির নির্বাচনে ডানপন্থীদের প্রভাব বাড়ছে অনেক কিছুই বলা যাচ্ছে না সরকারি ‘সেক্রেসির’ কারণে: অর্থ উপদেষ্টা ইসি কারো হয়ে কাজ ‘করবে না’: সিইসি নতজানু হবেন না, নিরপেক্ষ ও শক্ত ভূমিকা নিন: ইসিকে দলের প্রতিনিধিরা নির্বাচনে ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চলবে: ৮ দল ডেঙ্গুতে ৫ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১১৩৯ সোমবার সারা দেশে গণপরিবহন চলবে: শ্রমিক ফেডারেশন হাসিনার রায় ঘিরে নৈরাজ্য তৈরির চেষ্টা রুখে দিতে হবে: মির্জা ফখরুল ঢাকা-গোপালগঞ্জসহ চার জেলায় নিরাপত্তার দায়িত্বে বিজিবি মামুন হত্যা: পাঁচ দিন পর মামলা, আসামি ‘অজ্ঞাত’ বেক্সিমকো টেক্সটাইল সচল করছে রিভাইভাল ২৬ বাংলাদেশি নিয়ে লিবিয়া উপকূলে নৌকাডুবি, ৪ লাশ উদ্ধার

জাতীয়

অনেক কিছুই বলা যাচ্ছে না সরকারি ‘সেক্রেসির’ কারণে: অর্থ উপদেষ্টা

 প্রকাশিত: ১৭:৩৮, ১৬ নভেম্বর ২০২৫

অনেক কিছুই বলা যাচ্ছে না সরকারি ‘সেক্রেসির’ কারণে: অর্থ উপদেষ্টা

কিছুই হচ্ছে না বলে ‘অনেকে যা বলছেন’, তার জবাবে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, অনেক কিছুই বলা যাচ্ছে না সরকারি ‘গোপনীয়তার’ কারণে।

দেশের অর্থনীতি ও আর্থিক খাতকে ‘ধ্বংসের কাছ থেকে রক্ষা করে স্বাভাবিক জায়গায়’ ফিরিয়ে আনতে বছরের বেশি সময় ধরে সরকারের চেষ্টার কথাও তিনি তুলে ধরেন।

জাতীয় পর্যায়ে ডিআরইউর বর্ষসেরা বিশেষ প্রতিবেদনের জন্য পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে রোববার অর্থ উপদেষ্টা বলেন, “অনেকে টকশোতে বলছেন, কিছুই হচ্ছে না। অনেক কিছুই বলা যাচ্ছে না সরকারি সিক্রেসির (গোপনীয়তা) কারণে।

“আগের সরকারের উন্নয়নের বিভিন্ন ‘ন্যারেটিভ’ আপনারা শুনেছেন। ‘গ্রোথ’ (প্রবৃদ্ধি) যেটা হয়েছে, তা ছিল বড় বড় মেগা প্রকল্প। প্রকল্পগুলো ‘মনুমেন্ট’ হয়েছে আসলে। কোটি কোটি টাকা খরচ করে যে টানেল করা হল, বেশি গাড়ি যায় না। মেগা প্রকল্পের এলাকায় রেস্ট হাউস করা হয়েছে একশ-দুইশ কোটি টাকা দিয়ে। এইসব প্রকল্প ‘ন্যারেটিভে’ অনেক আসছে, কিন্তু এসব অর্থনৈতিক প্রকল্প মানুষের কতটা কাজে লাগছে?”

২০২৪ সালের অগাস্টে ছাত্র-গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নেওয়া সংস্কারের কার্যক্রম আগামী নির্বাচিত সরকারও অব্যাহত রাখবে, এমন প্রত্যাশার কথা বলেছেন সালেহউদ্দিন আহমেদ।

তিনি বলেন, “এখন তো নির্বাচনের দিকে যাচ্ছে সরকার। আগামী তিনটা মাস খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পরবর্তী সরকার করবে, এমন অনেক ইস্যু আছে। আমরা মোটামুটি অর্থনীতিকে ধ্বংসের কাছ থেকে রক্ষা করে এনেছি। এখন আগামী সরকারের দায়িত্ব হচ্ছে এটাকে সুসংহত করা।

“অর্থনীতির কাঠামোটা যেন ভালো হয়, তারা হয়ত কিছু সংযোজন করবে, কিছু বাদ দিবে। আমরা শুরুটা করেছি, এখন উত্তরসূরী সরকার এটাকে সামনের দিকে নিয়ে যাবে।”

সরকারের কর্মকাণ্ড নিয়ে বিভিন্ন টেলিভিশনের টক-শোতে সমালোচনার প্রসঙ্গ টেনে সালেহউদ্দিন বলেন, “আমি মাঝে মাঝে দেখি টকশোতে অনেকে বলেন, কিছুই তো দেখতে পেলাম না, ১২ মাসে কোন পরিবর্তন দেখতে পেলাম না, কী হয়েছে।”

“কিন্তু তারা জানেন না, আমরা গত বছরের অগাস্ট মাসে যে অর্থনৈতিক অবস্থা পেয়েছে, তা জানলে তো আপনারা আঁতকে উঠবেন। হয়ত কোনোদিনই তা বলা যাবে না, কারণ সব তো স্টেট সিক্রেট (রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা)।

“আমরা যদি দায়িত্ব না নিতাম, তাহলে দেশটা কোন অবস্থায় যেত তা সহজে অনুমান করা যায়।’’

বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়েছে, আমদানি রপ্তানি বেড়ে অর্থনীতি সার্বিকভাবে মোটামুটি ভালো আছে বলে মন্তব্য করেন অর্থ উপদেষ্টা।

‘প্রশংসা করেছে আইএমএফ’

চলমান ঋণের পরের কিস্তি ছাড়ের আগে আইএমএফ মিশন ২৯ অক্টোবর থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশ সফর করে।

চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থের ব্যবহার পর্যালোচনা করতে ক্রিস পাপাজর্জির নেতৃত্বে আইএমএফ মিশন তাদের সফর শেষে সংবাদ সম্মেলন করেন।

 

সেখানে পাপাজর্জি বলেন, বাংলাদেশ সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। বিদেশ নির্ভরতা কমাতে এবং মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে দেশটির সরকার রাজস্ব ও আর্থিক নীতি উভয়ই কঠোর করেছে।

সেইসঙ্গে বাংলাদেশের সামনে আর্থিক খাতের চ্যালেঞ্জ রয়েছে তুলে ধরে সতর্ক করে তিনি বলেন, দুর্বল কর রাজস্ব ব্যবস্থা, আর্থিক খাতে মূলধনের ঘাটতি ও উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে অর্থনীতিতে এখনো বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ রয়েছে।

আইএমএফের বিবৃতিতে বাংলাদেশের আর্থিক খাতের বেশকিছু সমস্যা তুলে ধরা হয়। সেই প্রসঙ্গ টেনে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, “আইএমএফ এর রিপোর্টে দেখলাম যে, “ওনারা বলেছেন অনেক সমস্যা, বিরাট সমস্যা। কিন্তু প্রাইভেটলি আমাকে বলেছে যে, তোমাদেরকে বলি, ‘ডান অ্যা গুড জব’ (ভালো একটি কাজ হয়েছে)।”

পুরস্কার পেলেন যারা

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি-ডিআরইউর ‘ডিআরইউ-নগদ বেস্ট রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড, ২০২৫’ আয়োজনটি ছিল আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে।

সংগঠনটির সভাপতি আবু সালেহ আকন বলেন, এবার জাতীয়ভাবে বিশেষ প্রতিবেদনের জন্য দেওয়া পুরস্কারের সংখ্যা গতবারের চেয়ে বেশি।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এমএফএস সেবা দাতা প্রতিষ্ঠান নগদ এর চেয়ারম্যান কায়জার আহমেদ চৌধুরী।

এবার প্রিন্ট, টেলিভিশন ও অনলাইন সংবাদ মাধ্যমের সাংবাদিকদের ১৪টি খাতভিত্তিক ও দুটি বিশেষ বিভাগের প্রতিবেদনের জন্য পুরস্কার দেওয়া হয়। পুরস্কার হিসেবে সম্মাননা ক্রেস্ট ও সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হয় বিজয়ীদের।

প্রিন্ট ও অনলাইন বিভাগে পুরস্কারপ্রাপ্তরা হলেন, সাজ্জাদুর রহমান (দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড), মুহাম্মদ সালাহউদ্দিন (জাগোনিউজ২৪.কম), রফিকুল ইসলাম (ডেইলি সান), এম এ নোমান (দৈনিক আমার দেশ)।

এছাড়া জিয়াদুল ইসলাম (দৈনিক আমাদের সময়), শাখাওয়াত প্রিন্স (দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড), দীপন নন্দী (দ্য ডেইলি স্টার), শরিফুল ইসলাম (দ্য ডেইলি স্টার)।

হারুন আর রশিদ (দৈনিক কালবেলা), আবু সালেহ রনি (দৈনিক সমকাল), রাহেনুর ইসলাম (সকালসন্ধ্যা ডটকম), শওকত আলী (দৈনিক দেশ রূপান্তর), জসীম উদ্দীন (ঢাকা পোস্ট ডটকম), এহসানুল হক জসীম (ডেইলি সান), হেলিমুল আলম বিপ্লব (দ্য ডেইলি স্টার) ও শামসুল হক মোহাম্মদ মিরাজ (কালের কন্ঠ)।

টেলিভিশন ও রেডিও সংবাদ মাধ্যমের শাহ মো. রাশেদুর রহমান (ডিবিসি নিউজ), আবু জাহেদ মুহম্মদ সেলিম (মাছরাঙা টেলিভিশন), আলমগীর হোসেন (যমুনা টেলিভিশন), রাজিব ঘোষ (ডিবিসি নিউজ)।

এছাড়ও ইমদাদুল হক (চ্যানেল ২৪), ইউসুফ আলী (ডিবিসি নিউজ), সুশান্ত সিনহা (যমুনা টেলিভিশন), শাহনাজ শারমীন (একাত্তর টেলিভিশন), মেহ্দী আজাদ মাসুম (বৈশাখী টেলিভিশন)।

বিশেষ বিভাগে পুরস্কার পান মৌসুমী ইসলাম (ডেইলি সান) ও হাসান আরিফ (দৈনিক রূপালী বাংলাদেশ)।

পুরস্কার নির্ধারণে জুরি বোর্ডের চেয়ারম্যান ছিলেন ফাইন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের সম্পাদক শামসুল হক জাহিদ।