কৃষিতে ভর্তুকি রাখতে আইএমএফ ছাড়ার চিন্তা সরকারের

কৃষিখাতে ভর্তুকি অব্যাহত রাখতে প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে সরে আসার চিন্তা করছে সরকার। শনিবার (৩ মে) রাজধানীর ফার্মগেটে বাংলাদেশ কৃষি অর্থনীতিবিদ সমিতি আয়োজিত ‘কৃষিতে বাজেট ২০২৫-২৬: টেকসই প্রবৃদ্ধির রূপরেখা’ শীর্ষক সেমিনারে এ কথা জানান প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী।

তিনি বলেন, ‘কৃষিতে ভর্তুকি একটি রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অগ্রাধিকার। আইএমএফ যদি এতে বাধা হয়, তাহলে প্রয়োজনে সেই পথ ত্যাগ করতেই হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘বিষফোড়া জেনেও পায়রা বন্দরের মতো প্রকল্প বাদ দেওয়া সম্ভব নয়, কারণ এর সঙ্গে বৃহৎ অর্থনীতি ও রাজনীতির জটিলতা জড়িত।’

সেমিনারে বক্তারা বলেন, ২০২৬ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের চূড়ান্ত স্বীকৃতি পেতে যাচ্ছে। সেই লক্ষ্য সামনে রেখে কৃষিতে বরাদ্দ বাড়িয়ে একটি সুসংহত, টেকসই ও ভবিষ্যতমুখী বাজেট প্রণয়ন জরুরি। তারা জানান, প্রতি বছর কৃষিজমি ০.৫ শতাংশ হারে কমছে, অন্যদিকে বাড়ছে জনসংখ্যা ও খাদ্য চাহিদা। এর ফলে কৃষি উৎপাদন হ্রাস পাচ্ছে এবং খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি বাড়ছে।

সেমিনারে মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ড. মো. মিজানুর রহমান মূল প্রবন্ধে বলেন, দেশে প্রতি বছর ১.২ শতাংশ হারে প্রাকৃতিক জলাশয় দখল ও দূষণের শিকার হচ্ছে। তিনি জলাশয় সংরক্ষণে চীন ও ভিয়েতনামের আদলে সরকারি হস্তক্ষেপের আহ্বান জানান।

ব্লু ইকোনমির প্রসঙ্গে তিনি জানান, বঙ্গোপসাগরে বছরে ৮ মিলিয়ন মেট্রিক টন মাছ আহরণের সম্ভাবনা থাকলেও বর্তমানে তা মাত্র ০.৭ মিলিয়ন টনে সীমাবদ্ধ। এই খাত জিডিপির ৩.৫ শতাংশ অবদান রাখতে পারে বলে তিনি মনে করেন।

সেমিনারে পোল্ট্রি ফিড তৈরির কাঁচামালে ভ্যাট-শুল্ক কমানো, খামারিদের সহজ শর্তে ঋণ ও প্রণোদনা প্রদানের দাবি ওঠে। বক্তারা বলেন, টেকসই কৃষি উন্নয়নের জন্য বাজেট ঘোষণার অনেক আগে থেকেই অংশীজনদের মতামত নিয়ে প্রস্তুতি নেওয়া উচিত।