সোমবার ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, পৌষ ১ ১৪৩২, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৭

ব্রেকিং

হাদির হত্যাচেষ্টাকারীদের সম্পর্কে এখনই সব বলা যাবে না: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ভারত থেকে ৫০ হাজার টন চাল আনবে সরকার হাদিকে নিয়ে বক্তব্য প্রত্যহার করে ক্ষমা চান: সিইসিকে ডাকসুর ভিপি প্রোভিসির বিতর্কিত বক্তব্য: চবির প্রশাসনিক ভবনে তালা হাদি হত্যাচেষ্টায় ফয়সাল করিমের স্ত্রী-শ্যালক-বান্ধবী ৫ দিনের রিমান্ডে হাসিনা-কামালের আমৃত্যু কারাদণ্ড থেকে মৃত্যুদণ্ড চেয়ে আপিল মোবাইল আমদানিতেও কর ‘ছাড় দিতে রাজি’ এনবিআর সিঙ্গাপুরযাত্রায় ওসমান হাদি হাদির ঘটনা বিচ্ছিন্ন, নির্বাচন নিয়ে কোনো শঙ্কা নেই: সিইসি জকসু নির্বাচন: ‘ভুয়া’ অভিযোগকারীর কথায় ৬ প্রার্থী বাদ বন্ডাই বিচে ১৫ জনকে গুলি করে হত্যার পেছনে ‘বাবা ও ছেলে’ যুদ্ধ অবসানে ‘সংলাপে’ প্রস্তুত জেলেনস্কি বলসোনারোর সাজা কমানোর বিলের বিরুদ্ধে ব্রাজিলে গণবিক্ষোভ সিডনিতে ইহুদি উৎসবে প্রাণঘাতী হামলার তীব্র নিন্দা যুক্তরাষ্ট্রের

জাতীয়

প্রোভিসির বিতর্কিত বক্তব্য: চবির প্রশাসনিক ভবনে তালা

 প্রকাশিত: ১৮:১৩, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫

প্রোভিসির বিতর্কিত বক্তব্য: চবির প্রশাসনিক ভবনে তালা

পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবী হত্যার বিষয়টি ‘অবান্তর’ মন্তব্য করা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য শামীম উদ্দিন খানের পদত্যাগের দাবিতে প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়েছে শিক্ষার্থীরা।

সোমবার দুপুরে ‘সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যের’ ব্যানারে শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনের সব ফটকে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে শামীম উদ্দিন খানকে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে পদত্যাগ করতে বলেন।

জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিল, নারী অঙ্গনসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা এ প্রতিবাদে অংশ নিয়েছেন।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জালাল উদ্দিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান শহীদ বুদ্ধিজীবীদের নিয়ে শামীম স্যারের মন্তব্যের প্রতিবাদে আমরা প্রশাসনিক ভবনে তালা দিয়েছি। তিনি অতিসত্বর নিঃশর্ত ক্ষমা না চাইলে আমরা তার পদত্যাগ দাবি অব্যাহত রাখব।”

বুদ্ধিজীবী দিবসে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যলয় প্রশাসন আয়োজিত ‘মুক্তচিন্তা, মুক্তিযুদ্ধ এবং একাত্তরের বুদ্ধিজীবী হত্যা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় পাকিস্তানী বাহিনীর হাতে বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবীদের হত্যার বিষয়টি ‘অবন্তর’ বলে মন্তব্য করেন উপ-উপাচার্য (অ্যাকাডেমিক) অধ্যাপক মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান।

তিনি বলেন, “যে সময় পাকিস্তানি সৈন্যরা আমাদের দেশ থেকে পালানোর চেষ্টা করছে, সে সময় পাকিস্তানি বাহিনীর সদস্যরা বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করবে; আমি মনে করি এটি রীতিমত অবান্তর। কারণ, ওই সময় তারা তাদের জীবন শঙ্কায় ছিলেন।”

শামীম উদ্দিন খানের এ বক্তব্যের পর রাতেই ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেন বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন স্থানে তার সমালোচনা শুরু হয়।

বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি জশদ জাকির মনে করেন, উপ-উপাচার্য শামীম উদ্দিন খানের এ বক্তব্য রাজাকারদের পক্ষে বয়ান তৈরির চেষ্টা করা হয়েছে।

“এটি ঘৃণ্য ও লজ্জাজনক। গতকালের বিক্ষোভ সমাবেশের ধারাবাহিকতায় আজ প্রশাসনিক ভবনে তালা দেওয়া হয়েছে।”

প্রশাসনিক ভবনে তালা দেওয়ার পর নারী অঙ্গনের প্রতিনিধি সুমাইয়া সিকদার বলেন, “একজন শিক্ষাবিদ হিসেবে প্রো-ভিসি স্যারের এ ধরনের মন্তব্য কোনোভাবেই সমীচীন নয়। এতে মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ বুদ্ধিজীবীদের হেয় করা হয়েছে।

“আমরা তার পদত্যাগ চাই, যাতে ভবিষ্যতে কেউ এমন স্পর্ধা দেখাতে না পারে।”

গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের সংগঠক ধ্রুব বড়ুয়া বলেন, “মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকবাহিনীর দায় স্বীকৃত হলেও উপ-উপাচার্য শামীম উদ্দিন খান তা অস্বীকার করে বক্তব্য দিয়েছেন।

“আমরা মনে করি, গণহত্যাকারীদের দায়মুক্ত করার উদ্দেশ্যেই তিনি এমন মন্তব্য করেছেন। তিনি ক্ষমা চেয়ে পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আমাদের কর্মসূচি চলবে।”

বেলা ১টার দিকে প্রশাসনিক ভবনে ঝোলানো এ তালা বিকাল সাড়ে ৪টাতেও খোলা হয়নি।

এসময় উপ-উপাচার্য (অ্যাকাডেমিক) অধ্যাপক মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসনিক) অধ্যাপক মো. কামাল উদ্দিন, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম এবং পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ তাদের কক্ষে অবস্থান করছিলেন বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে কথা বলতে উপ-উপাচার্য (অ্যাকাডেমিক) অধ্যাপক মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খানকে কয়েববার টেলিফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।

উপ-উপাচার্য (প্রশাসনিক) অধ্যাপক মো. কামাল উদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ বিষয়ে মন্তব্য করতে অপারগতা প্রকাশ করে বলেন, “তিনি আমার থেকে পদমর্যাদায় বড়। তার বিষয়ে আমি কোন কথা বলতে পারব না।”