বিচারকপুত্র হত্যা: আসামি লিমন পাঁচ দিনের রিমান্ডে
রাজশাহীতে বিচারকের ছেলে হত্যা মামলায় লিমন মিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে পেয়েছে পুলিশ।
শনিবার দুপুর আড়াইটার দিকে আসামি আদালতে হাজির করে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। শুনানি শেষে মহানগর হাকিম আমলি আদালতের বিচারক মো. মামুনুর রশিদ আসামির পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এ তথ্য জানিয়ে রাজশাহী মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার গাজিউর রহমান বলেন, “রিমান্ড মঞ্জুরের পর আসামিকে রাজপাড়া থানায় নেওয়া হয়েছে। কেন ও কিভাবে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে এবং ঘটনার সঙ্গে আরও কেউ জড়িত কি-না তা জানার চেষ্টা করা হবে।”
বৃহস্পতিবার রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আবদুর রহমানের ভাড়া বাসায় ঢুকে তার ছেলে তাওসিফ রহমানকে সুমন ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয়। এ সময় ছুরির আঘাতে বিচারকের স্ত্রী তাসমিন নাহার লুসিও জখম হন।
ছেলে হত্যা ও স্ত্রী জখমের ঘটনায় শুক্রবার বিচারক আব্দুর রহমান ৩৪ বছর বয়সী লিমনকে একমাত্র আসামি করে হত্যা মামলা করেন।
এদিকে, বিচারকের বাসায় ঢুকে ছেলেকে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া আসামি হেফাজতে থাকাবস্থায় মিডিয়ার সামনে বক্তব্য দিতে দেওয়ায় মহানগর পুলিশের কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ানকে নোটিশ দিয়েছে আদালত।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আলী আশরাফ মাসুম বলেন, “শনিবার রাজশাহী মহানগর হাকিম আদালতের বিচারক মো. মামুনুর রশিদ এ নোটিশ দিয়েছেন। নোটিশে পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ানকে ১৯ নভেম্বর মধ্যে আদালতে সশরীরে উপস্থিত হয়ে ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন। ওইদিন মামলার তারিখ রয়েছে।”
নোটিশে বলা হয়েছে, ১৩ নভেম্বর রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আবদুর রহমানের ভাড়া বাসায় ঢুকে তার ছেলে তাওসিফ রহমানকে সুমনকে ছুরিকাঘাত হত্যা করা হয়। বিচারকের স্ত্রী তাসমিন নাহার লুসিকে হত্যার উদ্দেশ্যে ধারালো ছুরি দিয়ে আঘাত করা হলে তিনি গুরুতর জখম হন। এই পরিপ্রেক্ষিতে ঘটনাস্থল হতেই লিমন মিয়াকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে এবং রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।
আইনজীবী আলী আশরাফ মাসুম বলেন, “পরবর্তীতে বিভিন্ন গণমাধ্যমে দেখা যায়, লিমন মিয়া পুলিশি হেফাজতে থাকা অবস্থায় প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় ভিকটিমকে দোষারোপ করে বক্তব্য প্রদান করেন। যা আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি বনাম রাষ্ট্র ৩৯ বিএলডি ৪৭০ সহ বিভিন্ন মামলায় দেওয়া সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।”
অতিরিক্ত উপ-কমিশনার গাজিউর রহমান বলেন, “আদালতের চিঠি বিকাল পর্যন্ত আরএমপি সদর দপ্তরে এসে পৌঁছেনি। তবে কোনো নির্দেশনা থাকলে সে নির্দেশনা অনুযায়ী জবাব দেওয়া হবে।”