শনিবার ১৫ নভেম্বর ২০২৫, অগ্রাহায়ণ ১ ১৪৩২, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

আন্তর্জাতিক

বিল ক্লিনটনের সঙ্গে এপস্টাইনের সংযোগের তদন্ত দাবি করেছেন ট্রাম্প

 প্রকাশিত: ১৩:৩৩, ১৫ নভেম্বর ২০২৫

বিল ক্লিনটনের সঙ্গে এপস্টাইনের সংযোগের তদন্ত দাবি করেছেন ট্রাম্প

মার্কিন প্রেসিডেন্ট  ট্রাম্প শুক্রবার আইন প্রয়োগকারী প্রধানদের জেফ্রি এপস্টাইন ও সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের মধ্যে সংযোগ তদন্ত করতে বলেছেন।

এপস্টাইনের ই-মেইলের একটি নতুন ভাণ্ডার প্রকাশের পর ক্রমবর্ধমান চাপের মুখে ট্রাম্প বিচার বিভাগ ও এফবিআইকে বৃহৎ ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান জেপি মরগান চেজ ও ল্যারি সামারসের তদন্তের দাবিও করেছেন। 

ল্যারি সামারস একজন প্রখ্যাত আমেরিকান অর্থনীতিবিদ, যিনি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট, যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি সেক্রেটারি এবং হোয়াইট হাউসের ন্যাশনাল ইকোনমিক কাউন্সিলের ডিরেক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

তিনি ক্লিনটনের ট্রেজারি সেক্রেটারি ছিলেন। 

মার্কিন অর্থলগ্নিকারী ও দোষী সাব্যস্ত যৌন অপরাধী জেফ্রি অ্যাপস্টিন ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে নারীঘটিত অভিযোগ তোলেন।

জেফ্রি রাজনীতি, ব্যবসা ও সমাজের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সঙ্গে তার ব্যক্তিগত সম্পর্কের কারণে আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিত। 

খবর বার্তা সংস্থা এএফপি’র। 

৭৯ বছর বয়সী এই  রিপাবলিকান নেতা ডেমোক্র্যাটদের বিরুদ্ধে ‘এপস্টিন প্রতারণা’ ছড়ানোর অভিযোগ তুলেছেন। 

সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত কয়েকটি ই-মেইলে দেখা যায়, কুখ্যাত অর্থলগ্নিকারী ও দোষী সাব্যস্ত যৌন অপরাধী জেফ্রি এপস্টিন দাবি করেছিলেন যে ডোনাল্ড ট্রাম্প নাকি ‘এই নারীদের ব্যাপারে জানতেন’ এবং তিনি এপস্টিনের এক ভুক্তভোগীর সঙ্গে তার বাড়িতে দীর্ঘ সময় কাটিয়েছেন।

রিপাবলিকান রাজনীতিবিদ বলেন, এই ই-মেইল প্রকাশের বিষয়টি ডেমোক্র্যাটদের ‘রাজনৈতিক অপপ্রচার’ ছাড়া আর কিছুই নয়। 

তবে এপস্টিনের মৃত্যুর পর, তার সঙ্গে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও ব্যবসায়িক ব্যক্তিত্বদের যোগাযোগ নিয়ে বিতর্ক চলতে থাকে এবং নতুন ইমেইল প্রকাশের পর তা আবারো আলোচনায় এসেছে।

এ প্রসঙ্গে ট্রাম্প বা তার প্রতিনিধিদের কোনো নতুন মন্তব্য তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। অভিযোগগুলো আদালতে প্রমাণিত হয়নি, এবং বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক মহলে পাল্টাপাল্টি প্রতিক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে।

৭৯ বছর বয়সী এই রিপাবলিকান ডেমোক্র্যাটদের বিরুদ্ধে ‘এপস্টাইন প্রতারণা’ চালানোর অভিযোগ এনেছেন।

ই-মেইলগুলোতে মার্কিন অর্থদাতা ও একটি বিনিয়োগ সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা জেফ্রি এপস্টাইন ট্রাম্প ‘নারীদের সম্পর্কে জানতেন এবং তার বাড়িতে একজন ভুক্তভোগীর সাথে ঘন্টার পর ঘন্টা সময় কাটাতেন’ বলে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। 

ট্রাম্প সপ্তাহান্তে ফ্লোরিডা যাওয়ার সময় এয়ার ফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না। (সত্য হলে) তারা অনেক আগেই এটা ঘোষণা করে দিত।’

তার সঙ্গে আনিত অভিযোগগুলো প্রতিহিংসামূলক ইঙ্গিত করে তিনি আরো দাবি করেন যে তার ও ফেফ্রি এপস্টাইনের মধ্যে সম্পর্ক ভাল ছিল না। 

তিনি বলেন, ‘জেফ্রি এপস্টাইন ও আমার মধ্যে বহু বছর ধরেই খুব খারাপ সম্পর্ক ছিল।’

জানুয়ারিতে হোয়াইট হাউসে ফিরে আসার পর থেকে এপস্টাইনের সঙ্গে তার দীর্ঘ বন্ধুত্ব নিয়ে প্রশ্ন ট্রাম্পকে তাড়া করে বেড়াচ্ছে।

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ২০১৯ সালে কারাগারে আত্মহত্যা করে এপস্টাইন মারা যান। ফেডারেল যৌন পাচারের অভিযোগে বিচারের মুখোমুখি হওয়ার আগেই তিনি আত্মহত্যা করেন। 

কিন্তু একটি যৌন চক্রের সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, যেখানে প্রভাবশালী পুরুষদের কাছে অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েদের সরবরাহ করা হত।

ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগ মাধ্য, ট্রুথ সোশ্যালে জানান,  তিনি অ্যাটর্নি জেনারেল পাম বন্ডি ও এফবিআইকে ‘বিল ক্লিনটন, ল্যারি সামারস, রিড হফম্যান, জে পি মরগান, চেজ ও আরও অনেক ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জেফ্রি এপস্টাইনের সংশ্লিষ্ট্রতা সম্পর্কে তদন্ত করতে অনুরোধ করবেন।

যদিও এফবিআই ও বিচার বিভাগ জুলাই মাসে একটি স্মারকে বলেছিল যে তারা এমন কোনও প্রমাণ খুঁজে পায়নি, যা অভিযুক্ত তৃতীয় পক্ষের তদন্তকে ন্যায্যতা দেবে।

ডেমোক্র্যাট দলের সাবেক প্রেসিডেন্ট  ক্লিনটন দীর্ঘদিন ধরে এপস্টাইনের সঙ্গে তার সম্পর্ক নিয়ে তদন্তের মুখোমুখি হয়েছেন এবং তার ব্যক্তিগত বিমানে ভ্রমণ করেছেন।

যদিও তাকে কখনও এই কেলেঙ্কারিতে অন্যায়ের অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়নি।

২০১১ সালের সর্বশেষ ধনকুবের এবং এএফপি’র দেখা বেশ কয়েকটি ইমেল অনুসারে এপস্টাইন বলেছেন যে ক্লিনটন ক্যারিবিয়ানে তার কুখ্যাত ব্যক্তিগত দ্বীপে ‘কখনও’ যাননি।

ক্লিনটনের মুখপাত্র অ্যাঞ্জেল উরেনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এ বলেছেন যে এই ইমেলগুলোই ‘প্রমাণ করে যে বিল ক্লিনটন কিছুই করেননি এবং কিছুই জানতেন না।

বাকিটা হল নির্বাচনী পরাজয়, শাটডাউনকে সমর্থন করা এবং তা থেকে মনোযোগ সরানোর জন্য গোলমাল তৈরির কৌশল।’