রোববার ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, অগ্রাহায়ণ ৩০ ১৪৩২, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৭

ব্রেকিং

রাজনৈতিক দলগুলোকে নিরাপত্তা প্রটোকল দেবে পুলিশ ডেঙ্গুতে পাঁচজনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৩৮৭ এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ শেখ হাসিনাকে ফেরত দিতে ভারতীয় দূতকে ডেকে ফের অনুরোধ হাদিকে গুলি করে ফয়সাল, বাইকে চালক ছিলেন আলমগীর: পুলিশ হাদিকে গুলির ঘটনা মাথায় বাজ পড়ার মতো: সিইসি হাদিকে বিদেশে নেওয়ার ভাবনা জগন্নাথ হলের রাস্তায় আঁকা গোলাম আজমদের ছবি মুছে দিল প্রশাসন সিরিয়ায় আইএসের হামলায় ২ মার্কিন সেনাসহ নিহত ৩ অস্ট্রেলিয়ার বন্ডি সৈকতে গুলিতে বন্দুকধারীসহ নিহত ১২ হাদিকে গুলি: সন্দেহভাজন মাসুদ ও তার প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব জব্দ হাদির ওপর হামলায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক আটক

প্রযুক্তি

মোবাইল ফোন নিবন্ধন: ভোগান্তির ভয় ‘ডিরেজিস্ট্রেশন’ নিয়ে

 প্রকাশিত: ১১:১৪, ৩০ অক্টোবর ২০২৫

মোবাইল ফোন নিবন্ধন: ভোগান্তির ভয় ‘ডিরেজিস্ট্রেশন’ নিয়ে

দেশে আগামী ১৬ ডিসেম্বর থেকে মোবাইল ফোন নিবন্ধনের যে বাধ্যবাধকতা আসছে, তাতে গ্রাহক ভোগান্তিসহ নানা জটিলতা তৈরির আশঙ্কা দেখছেন সংশ্লিষ্টরা।

এক্ষত্রে মূল শঙ্কা হয়ে উঠতে পারে পুরনো হ্যান্ডসেট ‘ডিরেজিস্ট্রেশন’ করা নিয়ে। কারণ, ‘ডিরেজিস্ট্রেশন’ ছাড়া একজনের নামে নিবন্ধিত ফোন বা হ্যান্ডসেটে আরেকজনের সিম ব্যবহার করা যাবে না।

আর ‘ক্লোন’ হ্যান্ডসেটগুলো এই ‘ডিরেজিস্ট্রেশন’ প্রক্রিয়ায় জটিলতা বাড়াবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

দেশে আগামী ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস থেকে চালু হচ্ছে ‘ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার’ বা এনইআইআর, যার মাধ্যমে প্রত্যেকটি মোবাইল ফোনকে নিবন্ধনের আওতায় আনা হবে।

বুধবার বিটিআরসিতে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরেন প্রধান উপদেষ্টার তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক বিশেষ সহকারি ফয়েজ আহমেদ তৈয়্যব।

এসময় টেলিকম খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির চেয়ারম্যান এমদাদুল বারী, মহাপরিচালক আমিনুল হক বক্তব্য রাখেন ও সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।

বিশেষ সহকারী ফয়েজ তৈয়্যব বলেন, “১৬ ডিসেম্বর এনইআইআর কার্যকরের আগ পর্যন্ত দেশের নেটওয়ার্কে থাকা সব মোবাইল ফোনই স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিবন্ধনের আওতায় আসবে। এরকম কোনো ফোন অবৈধ বা ক্লোন হলেও সেগুলো বন্ধ হবে না। বরং সার্ভারের ‘গ্রে লিস্ট’ ক্যাটেগরিতে এগুলো থাকবে।”

এই প্রক্রিয়ায় সিমকার্ডের মতো প্রত্যেকটা হ্যান্ডসেট নিবন্ধনের আওতায় আসবে। এক্ষেত্রে চাইলেই একটি হ্যান্ডসেটে ইচ্ছেমতো সিমকার্ড ব্যবহার করা যাবে না।

তবে ১৬ ডিসেম্বরের পর নতুন করে কোনো মোবাইল ফোন নেটওয়ার্কে যুক্ত হলে সেটার নিবন্ধন করাটা বাধ্যতামূলক। এক্ষেত্রে বৈধ ফোন স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিবন্ধনের আওতায় চলে আসবে। গ্রাহককে আলাদা করে দৌড়ঝাঁপ করতে হবে না।

অন্য ফোনগুলো প্রাথমিকভাবে ৩০ দিন নিবন্ধন ছাড়াই চালানো যাবে। এর মধ্যে নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে।

কোনো ব্যক্তির নামে নিবন্ধিত হ্যান্ডসেটে শুধু সেই ব্যক্তির নামে নিবন্ধিত সিমকার্ড ব্যবহার করা যাবে। সেই ক্ষেত্রে ব্যক্তি পুরনো হ্যান্ডসেটটি বিক্রি বা কাউকে দিতে চাইলে বা সেখানে অন্যজনের সিম ব্যবহার করতে চাইলে হ্যান্ডসেটটি আগে ‘ডিরেজিস্ট্রেশন’ করতে হবে।

এটা নিয়ে গ্রাহকদের ভোগান্তির শঙ্কা করছেন ফয়েজ তৈয়্যবসহ সংশ্লিষ্টরা।

তিনি বলছেন, “এনইআইআর কার্যকরের মূল চ্যালেঞ্জটা হচ্ছে কার্যকর পরবর্তী গ্রাহকের দুর্ভোগটাকে লাঘব করা। আমরা বারবার এ কথাটা বলছি। কারণ, দুর্ভোগ হবেই। কোটি মানুষের কাছে যে হ্যান্ডসেট আছে, সেগুলোর বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন আছে।”

এনইআইআরের ক্ষেত্রে ফোনের মালিক মারা গেলে বা বিদেশে গেলে সেই ফোনের ‘ডি-রেজিস্ট্রেশন’ হবে কীভাবে, তা জানতে চাইলে বিটিআরসির মহাপরিচালক আমিনুল হক বলেন, “ডিরেজিস্ট্রেশন কিন্তু ব্যক্তিকে ভেরিফাই করে না, নথি যাচাই করে। অর্থাৎ মালিকের এনআইডি বা পাসপোর্টের শেষ চারটা ডিজিট জানা থাকলে আত্মীয়দের যে কেউ এটা ‘ডি-রেজিস্ট্রেশন’ করতে পারবেন।

“হ্যান্ডসেট ‘গ্রে’ থাকলেও হ্যান্ডসেট ‘ডিরেজিস্ট্রেশন’ করা যাবে। তবে হ্যান্ডসেটটা যদি ক্লোন হয়, তাহলে একটু ঝামেলা হবে। সেক্ষেত্রে ‘ডিরেজিস্ট্রেশনের’ সময় টার্গেট সিম বলতে হবে। অর্থাৎ, এরপরে ওই ফোনে কোনো সিম ব্যবহার হবে সেটা উল্লেখ করে দিতে হবে।”

চেয়ারম্যান এমদাদুল বারী বলেছেন, “এরকমও আছে যে, একই আইএমআই নম্বরে এক লাখ সেট আসছে। এটা এখানে অনেক বড় সমস্যা।”

তিনি বলেন, “সাইবার স্পেসে সামান্য কার্যকর নিরাপত্তা দিতে গেলেও সাধারণ মানুষের জীবনে অনেক চাপ পড়ে, দুর্ভোগ নেমে আসে। এটা বড় চ্যালেঞ্জ। আমরা ১৬ ডিসেম্বর থেকে অনেক কিছুই বন্ধ করে দিতে পারি। কিন্তু এর ফলে মানুষের জীবনযাত্রায় যে ভয়ানক ভোগান্তিটা আসবে, এটা হ্যান্ডেল করা আমাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।

“ফলে আমরা শুরু করছি কিন্তু খুবই খুবই ‘মাইল্ডভাবে’। আস্তে আস্তে যেভাবে রশিটাকে টাইট করা হয়, আমরা সেভাবে করব। আমাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ মানুষের দুর্ভোগ কমানো।”