রোববার ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, অগ্রাহায়ণ ৩০ ১৪৩২, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৭

ব্রেকিং

রাজনৈতিক দলগুলোকে নিরাপত্তা প্রটোকল দেবে পুলিশ ডেঙ্গুতে পাঁচজনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৩৮৭ এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ শেখ হাসিনাকে ফেরত দিতে ভারতীয় দূতকে ডেকে ফের অনুরোধ হাদিকে গুলি করে ফয়সাল, বাইকে চালক ছিলেন আলমগীর: পুলিশ হাদিকে গুলির ঘটনা মাথায় বাজ পড়ার মতো: সিইসি হাদিকে বিদেশে নেওয়ার ভাবনা জগন্নাথ হলের রাস্তায় আঁকা গোলাম আজমদের ছবি মুছে দিল প্রশাসন সিরিয়ায় আইএসের হামলায় ২ মার্কিন সেনাসহ নিহত ৩ অস্ট্রেলিয়ার বন্ডি সৈকতে গুলিতে বন্দুকধারীসহ নিহত ১২ হাদিকে গুলি: সন্দেহভাজন মাসুদ ও তার প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব জব্দ হাদির ওপর হামলায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক আটক

ইসলাম

হিংস্রতা ও মূর্খতার যুগে সংযত থাকার গুরুত্ব

 প্রকাশিত: ১৩:৫৭, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫

হিংস্রতা ও মূর্খতার যুগে সংযত থাকার গুরুত্ব

যত দিন যাচ্ছে, ততই যেন পৃথিবীটা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। মানুষের নীতি-নৈতিকতা হারিয়ে যাচ্ছে। উঠে যাচ্ছে মায়া-মমতা। স্বার্থের নেশায় মানুষ হায়েনাদের হার মানাচ্ছে। বর্বরতার সব সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। আবু জাহাল, আবু লাহাবের ভুত যেন মানুষের ঘাড়ে চেপে বসেছে। 

এরকম পরিস্থিতির ব্যাপারে মহানবী (সা.) তাঁর উম্মতকে সতর্ক করেছেন। হাদিস শরীফে এসেছে শাকিক (রহ.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আবদুল্লাহ ও আবু মুসা (রা.)-এর সঙ্গে ছিলাম। তাঁরা বলেন, বিশ্বনবী (সা.) বলেছেন, অবশ্যই কিয়ামতের আগে এমন একটি সময় আসবে যখন সব জায়গায় মূর্খতা ছড়িয়ে পড়বে এবং ইলম উঠিয়ে নেওয়া হবে। সে সময় ‘হারজ’ বর্ধিত হবে। আর ‘হারজ’ হলো (মানুষ) হত্যা। (বুখারি, হাদিস : ৭০৬২)

সেই যুগ এতটাই ভয়াবহ হবে যে তখন আপন মানুষও নিরাপদ হবে না। বিশ্বস্ততার মুখোশে বহু কাছের মানুষ মানুষের বিপদের কারণ হবে। সে কঠিন সময়ে মুমিনের কর্মপন্থা কী হবে, সে ব্যাপারে দিক-নির্দেশনা দিয়েছেন মহানবী (সা.)। হাদিস শরীফে ইরশাদ হয়েছে, ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, আমি নবী (সা.)-কে বলতে শুনেছি, অতঃপর তিনি আবু বাকরাহ বর্ণিত হাদিসের অংশবিশেষ বর্ণনা করে বলেন, ওই ফিতনায় নিহত সব লোকই জাহান্নামি হবে। তিনি তাতে বলেন, আমি বললাম, হে ইবনে মাসউদ, ওই পরিস্থিতি কখন হবে? তিনি বলেন, সেই মারামারির যুগে কোনো ব্যক্তি তার বন্ধুর কাছেও নিরাপদ থাকবে না। আমি বললাম, সেই যুগ যদি আমাকে পেয়ে বসে, তাহলে আমাকে কী করতে আদেশ করেন? তিনি বলেন, তোমার জিহ্বা নিয়ন্ত্রণে রাখবে, হাত গুটিয়ে রাখবে আর তুমি তোমার ঘরের বাইরে বের হবে না। অতঃপর যখন উসমান (রা.) শহীদ হলেন, তখন আমার ফিতনার কথা স্মরণ হলো। সুতরাং আমি দামেশকে চলে এলাম এবং খুরাইম ইবনে ফাতিক (রা.)-এর সাক্ষাতে এ হাদিস বর্ণনা করলাম। তিনি যেই সত্তা ছাড়া কোনো উপাস্য নেই সেই আল্লাহর কসম করে বলেন, আমি তাঁর কাছে ইবনে মাসউদের যে হাদিস বর্ণনা করেছি, অনুরূপ হাদিস তিনিও রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে শুনেছেন। ’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৪২৫৮)

অন্য আরেকটি হাদিসে সেই যুগের বর্বরতা, মুর্খতা ও নৈরাজ্যের চিত্র আরো স্পষ্ট ভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। আবু মুসা আল-আশআরি (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাদের বলেন, কিয়ামতের নিকটবর্তী সময়ে ‘হারজ’ হবে। বর্ণনাকারী বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল, ‘হারজ’ কী? তিনি বলেন, হত্যাকাণ্ডের ব্যাপকতা। কতক মুসলমান বলেন, হে আল্লাহর রাসুল, আমরা এখন এই এক বছরে এত মুশরিককে হত্যা করেছি। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, তা মুশরিকদের হত্যা করা নয়; বরং তোমরা পরস্পরকে হত্যা করবে, এমনকি কোনো ব্যক্তি তার প্রতিবেশীকে, চাচাতো ভাইকে এবং নিকট আত্মীয়-স্বজনকে পর্যন্ত হত্যা করবে। কতক লোক বলল, হে আল্লাহর রাসুল, তখন কি আমাদের বিবেক-বুদ্ধি লোপ পাবে? রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, অধিকাংশ লোকের জ্ঞান লোপ পাবে এবং অবশিষ্ট থাকবে নির্বোধ ও মূর্খ। অতঃপর আবু মুসা আল-আশআরি (রা.) বলেন, আল্লাহর শপথ, আমি ধারণা করেছিলাম যে হয়তো এ যুগ তোমাদের ও আমাকে পেত, তাহলে তা থেকে আমার ও তোমাদের বের হয়ে আসা মুশকিল হয়ে যেত; যেমন নবী (সা.) আমাদের জোর দিয়ে বলেছিলেন যে আমরা ওই অনাচারে যত সহজে জড়িয়ে পড়ব তা থেকে আমাদের নিষ্ক্রমণ ততোধিক দুষ্কর হবে। ’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৩৯৫৯)