শেখ হাসিনাকে ফেরত দিতে ভারতীয় দূতকে ডেকে ফের অনুরোধ
ভারতীয় হাইকমিশনারকে ডেকে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে দণ্ডপ্রাপ্ত ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্টমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালকে বাংলাদেশের কাছে প্রত্যর্পণের অনুরোধ পুনর্ব্যক্ত করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
জুলাই অভ্যুত্থান দমনের চেষ্টায় মানবতাবিরোধী অপরাধে গেল ১৭ নভেম্বর এই দুইজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
গত বছরের ৫ অগাস্টের পর থেকে তারা ভারতে অবস্থান করছেন।
রোববার প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর বলেছে, ভারতীয় হাইকমিশনারকে জানানো হয়েছে যে ভারতে অবস্থানকারী পলাতক অপরাধী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের ‘শান্তি, স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা বিঘ্ন করা ও আসন্ন নির্বাচন বানচাল’ করার অসাধু উদ্দেশ্যে ক্রমাগতভাবে ‘উস্কানিমূলক’ বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন।
“তার দলের সমর্থকদের সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চালানোর জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন।”
মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেরত চেয়ে আবারও ভারত সরকারকে চিঠি পাঠিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
২১ নভেম্বর চিঠি পাঠানোর কথা বলেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন।
তার আগে রায়ের দিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দিয়ে শেখ হাসিনা ও কামালকে ফেরত দিতে ভারতের প্রতি আবারও আহ্বান জানায়।
সেদিন সচিবালয়ে রায়ের প্রতিক্রিয়ায় আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পনে ভারতকে ফের চিঠি দেওয়া হবে।
হাসিনাকে ফেরাতে এর আগে ভারতকে অন্তর্বর্তী সরকার চিঠি পাঠায় গত ডিসেম্বরে; ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলার বিচারকাজের শুরুতে।
এর মধ্যে বিচারকাজ শেষে রায় হয়ে গেলেও চিঠির কোনো জবাব দেয়নি ভারত সরকার।
ঢাকার পাঠানো চিঠির বিষয়ে অক্টোবর মাসে এক প্রশ্নে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি বলেছিলেন, আইনি বিষয়গুলো দিল্লি পর্যালোচনা করে দেখছে।
তবে সম্প্রতি ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শংকর বলেছেন, শেখ হাসিনা কতদিন ভারতে অবস্থান করবেন, সেই সিদ্ধান্ত তাকেই নিতে হবে।
শেখ হাসিনা ভারতে বসে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমকে সাক্ষাৎ দিয়েছেন। বিভিন্ন সময় বাংলাদেশের বিষয়ে বক্তব্যও দিয়েছেনে, যাকে উস্কানিমূলক বলে তুলে ধরে অন্তর্বর্তী সরকার তাকে বক্তব্য থেকে বিরত রাখতে ভারতকে অনুরোধ করেছে।
প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, “ভারত সরকারকে অনুরোধ করা হয়েছে, যেন তারা অনতিবিলম্বে শেখ হাসিনা এবং ভারতে পলাতক তার সাঙ্গ-পাঙ্গদের এ সকল ‘ফ্যাসিস্ট-টেররিস্ট’ কর্মকাণ্ড বন্ধ করে দেয়।
এদিকে জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন শুক্রবার ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও সম্ভাব্য প্রার্থী শরীফ ওসমান বিন হাদির ওপর হামলা হয়।
প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর বলেছে, ভারতীয় হাইকমিশনারকে অনুরোধ জানানো হয়েছে যে, হাদির হত্যাচেষ্টাকারীদের বাংলাদেশ থেকে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টা রোধে ভারত সরকার যেন বাংলাদেশের সাথে সহযোগিতা করে।
“তারা ভারতে পালিয়ে যেতে সক্ষম হলে তাদেরকে যেন ভারতীয় কর্তৃপক্ষ অবিলম্বে পাকড়াও করার উদ্যোগ নেয় এবং বাংলাদেশের কাছে তাদেরকে প্রত্যর্পণ করে।”