বুধবার ০৯ জুলাই ২০২৫, আষাঢ় ২৫ ১৪৩২, ১৩ মুহররম ১৪৪৭

ব্রেকিং

এনবিআর সংস্কার পরিষদের বহু সদস্যের ‘ক্ষমা প্রার্থনা’, মাঠে ফেরার প্রস্তুতি ৭.৭৫ কোটি টাকার স্থাপনা ভেঙে নতুন স্মৃতিস্তম্ভ গড়ার কাজ শুরু ইসরায়েল আমাকে হত্যা করতে চেয়েছিল: ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান সংস্কার ছাড়া যেনতেন নির্বাচন চায় না জামায়াত: শফিকুর রহমান আশরাফুল, সাকিবদের পর এবার নতুনদের চিনছে শ্রীলঙ্কা বিচার ও সংস্কারকে নির্বাচনের মুখোমুখি করা যাবে না: সাকি সংখ্যানুপাতিক ব্যবস্থায়(পিআর) ‘ভবিষ্যৎ বিভক্তি’র শঙ্কা তারেক রহমানের জুলাই বিপ্লব নিয়ে কটূক্তি করায় কুষ্টিয়ায় ট্রাফিক পুলিশ সদস্য ক্লোজড কলেজ প্যাডে ছাত্রদলের প্রচারণা? অধ্যক্ষের ব্যাখ্যা ঘিরে বিতর্ক মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েলের সংঘাত বিস্তার: বিশ্লেষণ কলম্বিয়ায় পাহাড়ধসে মৃত্যু ১৬, নিখোঁজ অন্তত ৮ “ত্রাণ নিতে এলে গুলি করতাম”—গাজার ঘটনায় মুখ খুললেন ইসরায়েলি সেনারা তেহরানে ধ্বংসস্তূপে উদ্ধার চলছেই, মৃতের সংখ্যা ছাড়াল ৪৫০ ইরানে বাংলাদেশিদের সহায়তায় হটলাইন চালু উপদেষ্টার গাড়িবহর আটকে বিক্ষোভ: সিলেটে তিনজন কারাগারে ইসরায়েলের টার্গেটে ইরানের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার ভবন লন্ডনে ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও তারেক রহমানের বৈঠক ১৩ জুন তারেক রহমান শিগগিরই দেশে ফিরবেন: ফখরুল রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হবে কাঁচের মতো স্বচ্ছ ঘর: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নির্বাচনের ঘোষিত সময় মাথায় রেখে যথাসময়ে রোডম্যাপ দেবে ইসি: উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুললেন ছাত্রদল নেতা নাছির উদ্দিন মণিপুরে আবার উত্তেজনা, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের চাপে ঢাকার ৪ থানায় সক্রিয় অর্ধশতাধিক অপরাধী দল জাতীয় নির্বাচন ২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধে: প্রধান উপদেষ্টা প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণায় জাতির প্রত্যাশা পূরণ হয়নি: সালাহউদ্দিন আহমদ জুলাই সনদ–ঘোষণাপত্র হলে ঘোষিত সময়ে নির্বাচনে আপত্তি নেই: এনসিপি ২৫ কিলোমিটার যানজট, ২৪ ঘণ্টায় পারাপার ৬৪ হাজার যানবাহন বান্দরবানের রুমা ও থানচি ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আংশিকভাবে প্রত্যাহার গাজায় যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্রের ভেটো, জাতিসংঘ নিরাপত্তা গরম মসলার বাজার শীতল: ক্রেতা কমে যাচ্ছে, দাম কিছুটা স্থিতিশীল ঈদে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে দই-মিষ্টি মজুত, রংপুরে হিমাগারে অভিযান ও দুই লাখ টাকা জরিমানা বান্দরবানের লামায় পাহাড় ধসের শঙ্কায় ৬০ রিসোর্ট বন্ধ নির্বাচন নিয়ে তরুণদের প্রতি অসত্য অভিযোগ ও বাস্তবতা ভারতের মুসলমানদের কেন বারবার দেশপ্রেমের প্রমাণ দিতে হয় সংবিধান পরিবর্তন ছাড়া ফ্যাসিবাদ বিলোপ সম্ভব নয়: এনসিপি মুখ্য সমন্বয়ক একুশের বন্ধুত্বে আগামীর পথচলা: বার্ষিক সম্মেলনে ২১তম বিসিএস প্রশাসন ফোরাম বিজিএমইএ`র নতুন নেতৃত্বে আসছেন বাবু, নিরঙ্কুশ জয়ের ইঙ্গিত জিলহজ মাসের আমল ও কোরবানির তাৎপর্য চট্টগ্রামে নারীকে লাথির ঘটনায় ভাইরাল আকাশ চৌধুরী বহিষ্কৃত, জামায়াতের বিবৃতি সংকট নিরসনে উদ্যোগ নেই, আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিল পবিস শ্রমিকরা আনচেলত্তির স্বপ্ন - রিয়াল মাদ্রিদের মতো করে খেলাবেন ব্রাজিলকে ডিমের দাম এখনো চড়া, ডজন ১৩০–১৪০ টাকায় বিক্রি বৈরী আবহাওয়ার কারণে নোয়াখালীর হাতিয়া দ্বীপের সঙ্গে সারাদেশের নৌ-যোগাযোগ বন্ধ হারের পর লিটনের মনোভাব - এখনো দুই ম্যাচ বাকি কাল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য দেশের সব জুয়েলারি দোকান বন্ধ ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্র চীনা শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু করবে ডিএনএ টেস্ট করে নামফলক ও মর্যাদা চায় শহীদ পরিবারের সদস্যরা বেতন না পেয়ে ডাকাতি, জাহাজের চিফ ইঞ্জিনিয়ারসহ তিনজন আটক “বাংলাদেশে কৌশলগত স্বার্থ নেই দক্ষিণ কোরিয়ার”—রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং সিক “শাপলার হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই”—হেফাজতের বিবৃতি মির্জা আব্বাস: “করিডর আর স্টারলিংক আনা হচ্ছে আরাকান আর্মির জন্য” জিলহজ মাসের চাঁদ দেখে যে দোয়া পড়বেন নির্বাচনের আগে যতটুকু দরকার, ততটুকুই সংস্কার করতে হবে: মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ‘চিন্তার স্বাধীনতাও হারাচ্ছি?’— নারী কমিশন বিতর্কে গীতিআরার উদ্বেগ ইউক্রেনে রাশিয়ার টানা হামলায় নিহত ১২, কঠোর চাপের আহ্বান জানালেন জেলেনস্কি সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন – তিনটি কঠিন দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট আমরা জুলাই অভ্যুত্থান ক্ষমতার পালাবদল নয়, এটি মৌলিক সংস্কার: নাহিদ হলুদ সাংবাদিকতা’ বিরোধী স্লোগানে উত্তাল শিক্ষক মিছিল ভারতের নিষেধাজ্ঞায় আখাউড়া বন্দর দিয়ে রপ্তানি কমেছে ৪০% বিএনপির অবস্থান কর্মসূচি চলছে, দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি জাতীয় স্বার্থে অভিমান ভুলে দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান : জামায়াত আমির আন্দোলনের পর অবশেষে নিয়োগ পেলেন ৪৩তম বিসিএসের বাদ পড়া ১৬২ জন নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের দাবিতে ইসির সামনে এনসিপির বিক্ষোভ কাল বাংলাদেশে স্টারলিংকের যাত্রা, স্যাটেলাইট ইন্টারনেটের নতুন যুগ শুরু নরওয়ের দৃঢ় সমর্থন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি বিগত সরকারের সময় প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংসপ্রাপ্ত, এমন অবস্থা ছিল যে খতিবকেও পালাতে হয়েছিল: বাণিজ্য উপদেষ্টা গায়ের জোরে নগর ভবন দখল করে আন্দোলন চালাচ্ছে বিএনপি আবারও রাজপথে নামার ইঙ্গিত আসিফের, সতর্ক করলেন হাসনাত গোপন অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে আন্দোলন স্থগিত, ২০ মে আলোচনায় বসবে ঐক্য পরিষদ ভারতের আমদানি নিষেধাজ্ঞা সীমান্ত বাণিজ্যে অনিশ্চয়তা তৈরি করছে ভারতের নতুন সিদ্ধান্তে উত্তর-পূর্বাঞ্চল দিয়ে বাংলাদেশি ভোগ্যপণ্য আমদানি বন্ধ গত ৯ মাসে জুলাই-যোদ্ধাদের ওপর ৩৮টি হামলা জবি’র ৪ দফা দাবি মেনে নেওয়ায় আন্দোলনের সমাপ্তি ঘোষণা ডিবি থেকে মুক্তির পর আন্দোলনে উল্লাস জবি শিক্ষার্থীর গাজা দখলে নেওয়ার আকাঙ্ক্ষা পুনর্ব্যক্ত করলেন ট্রাম্প শাহরিয়ার হত্যাকাণ্ডে বিচার নিশ্চিতের অঙ্গীকার উপদেষ্টা আসিফের সোনার দাম ভরিতে কমল ৩ হাজার ৪৫২ টাকা, নতুন দর কার্যকর শুক্রবার থেকে ঢাবি শিক্ষার্থীর মৃত্যু: নিরাপত্তা নিশ্চিতে বড় পদক্ষেপ প্রশাসনের আওয়ামী লীগের কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধে ভারতের উদ্বেগ শ্রীনগরজুড়ে বিস্ফোরণ, যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ ওমর আব্দুল্লাহর উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্ত: আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে শাহবাগ অবরোধ ‘চলবে’, শনিবার গণজমায়েত ড্রোন যুদ্ধ: ভারত-পাকিস্তান বিরোধের নতুন অধ্যায় আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে সরকার গুরুত্বসহকারে বিবেচনায় নিচ্ছে: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং আ.লীগ নিষিদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত শাহবাগ ছাড়বেন না আন্দোলনকারীরা ‘আপ বাংলাদেশ’–এর আত্মপ্রকাশ পূর্বঘোষণা ছাড়া ভারত সফরে সৌদি প্রতিমন্ত্রী, পাকিস্তান-ভারত উত্তেজনায় কূটনৈতিক তৎপরতা তুঙ্গে দ্রুত সিদ্ধান্ত না এলে সারা দেশ থেকে ঢাকা অভিমুখে মার্চের হুঁশিয়ারি নাহিদ ইসলামের দেশীয় ওষুধ কোম্পানি রেনাটাকে ৭০০ কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে আইএফসি তারেক রহমান: সরকার হয়তো স্বৈরাচারের দোসরদের দেশত্যাগে সহায়তা করছে জাতীয় নিরাপত্তা ইস্যুতে ভারতের নির্দেশে ৪ বাংলাদেশি টিভি চ্যানেল ইউটিউবে বন্ধ

স্পেশাল

‘ছোট একটা ছেলে, ওরে কিভাবে গুলি করতে পারলো? ওরা না হয় আমারে দুইটা গুলি করতো’

 প্রকাশিত: ১০:০৬, ৭ জানুয়ারি ২০২৫

‘ছোট একটা ছেলে, ওরে কিভাবে গুলি করতে পারলো? ওরা না হয় আমারে দুইটা গুলি করতো’

পড়ালেখা না শিখিয়ে যদি আমার সাথে ছেলেডারে ব্যবসায় বসিয়ে দিতাম, তাহলে আমি তারে হারাইতাম না। কেন যে আমি ওরে শিক্ষিত বানাইতে গেলাম? ওর মৃত্যুর জন্য আমি দায়ি। শিক্ষিত বানাইতে গিয়ে ওরে আমি নিজ হাতে মেরে ফেললাম।  

কে জানতো ছেলেটা এই অসময়ে চলে যাবে। আমি চেয়েছিলাম ও আমাকে কাঁধে নিয়ে গিয়ে কবর দেবে। কিন্তু এই বুড়ো বয়সে আমি আমার ছেলের লাশ কাঁধে করে কবরস্থানে নিয়ে গেছি। ওকে কবরে নামিয়ে শুইয়ে এসেছি। একজন বাবা হিসাবে এটা আমার জন্য যে কত কষ্টের সেটা আমি বুঝাতে পারবো না। এই বলে কাঁদতে থাকেন আবু বক্কর সিদ্দিকী।  

সম্প্রতি রাজধানীর বংশাল থানাধীন ধোলাইখালের টং মার্কেটের দোকানে রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা বাসস’র প্রতিবেদকের সাথে আলাপকালে এসব কথা বলেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত ছাত্র আব্দুল্লাহ সিদ্দিকীর বাবা আবু বক্কর সিদ্দিকী। 

তিনি বলেন, ‘আমার অনেক ইচ্ছা ছিল ছেলে-মেয়েরে লেখা পড়া শিখানোর। আমি কষ্ট করে ওদের লেখাপড়া শিখিয়েছি। কিন্তু আমার স্বপ্ন অধরাই থেকে গেল। আমি আমার স্বপ্ন পূরণ করতে গিয়ে একমাত্র ছেলেরে হারিয়ে ফেললাম। ছেলেডারে মেরে ফেললাম।’

আব্দুল্লাহ’র ছোট বেলার একটা ছবি দেখিয়ে ওর স্মৃতিচারণ করে তার বাবা বলেন, ‘ওর তো সুন্দর ভাবে জীবন কাটানোর কথা ছিল। কেন ছেলেডারে পৃথিবী থেকে চলে যেতে হল? এই তো কয়েক বছর আগেই ও খেলতো, ঘুরে বেড়াতো। ছেলেটার মায়াবী মুখ ছিল। ও অনেক মেধাবী ছিল। ছোট একটা ছেলে। ওরে কিভাবে গুলি করতে পারলো? ওরা না হয় আমারে দুইটা গুলি করতো।’    

প্রধান উপদেষ্টার সাথে দেখা করার ইচ্ছা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘অনেক চেষ্টা করেছি প্রধান উপদেষ্টার সাথে দেখা করার জন্য। কিন্তু পারি নাই। আমার একটা ইচ্ছা প্রধান উপদেষ্টার সাথে দেখা করার। আমার ছেলেটা দেশের জন্য জীবন দিল, আর কেউ আমার সাথে দেখাও করলো না। এটা আমার জন্য খুব কষ্টের। আমি প্রধান উপদেষ্টার সাথে দেখা করতে চাই।’

শহিদ আব্দুল্লাহ সিদ্দিকী ২০০৩  সালের ১৩ অক্টোবর জন্মগ্রহণ করেন। তার বয়স হয়েছিল ২১ বছর। আব্দুল্লাহ হাবিবুল্লাহ বাহার কলেজের ২১-২২ শিক্ষাবর্ষের মার্কেটিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। তিনি রায় শাহ বাজার সূত্রাপুর এলাকায় বসবাস করতেন। বাবা আবু বক্কর সিদ্দিকী (৫৯) ও মা আবেদা সুলতানা (৫০)।  সিফা সিদ্দিকী (২৮) ও আফ্রিন সিদ্দিকী সাফা (১১) নামে আব্দুল্লাহ’র দু’বোন রয়েছে। বড় বোনের বিয়ে হয়ে গেলেও ছোট বোন সাফা স্থানীয় একটি স্কুলে চতুর্থ শ্রেণীতে পড়ালেখা করছে। আব্দুল্লাহ’র মা গৃহিণী। 

 

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত বছরের ৪ আগস্ট বিকেল ৪ টার  দিকে রাজধানীর ঝিগাতলায় পুলিশের গুলিতে শহিদ হন আব্দুল্লাহ সিদ্দিকী। বুকের ডান পাশে গুলি লাগে আব্দুল্লাহ’র। পরে ৫ আগস্ট যোহরের নামাজের পর রায় শাহ বাজার মসজিদে জানাজা শেষে তাকে দাফন করা হয়। 

সেদিন আব্দুল্লাহ’র সাথে যারা আন্দোলনে সম্পৃক্ত ছিলেন তাদের বরাত দিয়ে আবু বক্কর সিদ্দিকী বলেন, ‘আমি ওই দিন সকালে ওরে কিছু টাকা দিয়ে, দোকানে থাকার কথা বলে সিলেট যাই। পরে বিকেল সাড়ে চারটার দিকে ফোনে খবর পাই, আন্দোলন করতে গিয়ে আব্দুল্লাহ’র পায়ে গুলি লাগছে। এটা শুনে আমার বুকের মধ্যে কেমন যেন করে ওঠে। তখন ওর বন্ধুকে বলি আব্দুল্লাহকে ফোনটা দিতে। ওই পাশ থেকে বলে সে অজ্ঞান হয়ে গেছে। তখন আমি যা বোঝার বুঝে ফেলি এবং তাড়াতাড়ি ঢাকায় ফিরে আসার চেষ্টা করি।’

বন্ধুদের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসক ওকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে আমাকে ওর বন্ধুরা ফোন করে জানতে চায় এখন ওর লাশ কি করবে। আমি ওদের বলি, লাশ বাসায় পৌঁছে দিতে। 

সরকারের প্রতি আহবান জানিয়ে আব্দুল্লাহ সিদ্দিকীর বাবা আবু  বক্কর সিদ্দিকী বলেন, সকল শহিদ ও আহতদের যেন সরকারি কোষাগার থেকে সহযোগিতা করা হয়। শুধু মুখে শহিদ বললেই হবে না, তাদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দিতে হবে। বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে যত শহিদ হয়েছেন, তাদের সবার কবরে রাষ্ট্রীয় সম্মাননা জানাতে হবে। 

সকল শহিদের পরিচয় পত্র দেওয়ার পাশাপাশি তাদের পিতা ও মাতাকেও পরিচয়পত্র দেওয়ার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, গণভবনে যে জাদুঘর করা হচ্ছে, সেখানে সকল শহিদ ও আহতের ছবি রাখতে হবে। সরকার থেকে বারবার বলা হচ্ছে, প্রত্যেক শহিদের পরিবারকে ৩০ লাখ টাকা দেওয়া হবে। আমার প্রশ্ন এটা কেন বলা হচ্ছে? একটা জীবনের মূল্য কি ৩০ লাখ টাকা? এটা বলে শহিদদের অপমান করা হচ্ছে।

শহিদ আব্দুল্লার মা আবেদা সুলতানা বলেন, ‘সকালে ছেলে আমার খিঁচুড়ি খেয়েছিল। ওই খাওয়াই যে ওর শেষ খাওয়া হবে তা তো আমি জানতাম না। ৪ আগস্ট সকালে আমি ছেলেকে বলেছিলাম, আন্দোলনে কিন্তু একা যাইসনা, গেলে আমাকে নিয়ে যাইস। আমি বুঝতে পারি নাই, ছেলে আমার শহিদ হবে। আমি এই হত্যার বিচার চাই।’ 

তিনি বলেন, ‘আব্দুল্লাহ একটা বাইক ও ছবি তোলার জন্য ক্যামেরা কিনতে চেয়েছিল। সেজন্য সে টাকাও কিছু জোগাড় করেছিল। কিন্তু তা আর হলো না। আমার ছেলেডারে গুলি করে মারা হল।  গত ১৩ অক্টোবর ওর জন্মদিন ছিল। এই বছর আর জন্মদিন পালন করা হল না। আমার ছেলে জীবন দিয়ে দ্বিতীয়বার দেশ স্বাধীন করেছে। আমি চাই আমার ছেলে রাষ্ট্রীয়ভাবে যেন শহিদের মর্যাদা পায়।’ 

আব্দুল্লাহ’র ছোট বোন আফ্রিন সিদ্দিকী সাফা বলেন, ‘ওই দিন (৪ আগস্ট) ভাইয়া বাসা থেকে বের হওয়ার সময় আমাকে বলেছিল, খরগোশ গুলোকে খাবার দিতে। আরও বলেছিল, খরগোশের খাওয়ার জন্য ঘাস একটু কম আছে। আমি যেন সেই খাবারগুলো হিসেব করে খরগোশকে খেতে দেই। খরগোশ গুলো আছে, কিন্তু ভাইয়া আর নেই। এই বছর ভাইয়ার জন্মদিন আর পালন করা হল না।’ 

আব্দুল্লাহ’র বান্ধবী নূর নাহার বলেন, ‘আন্দোলনে অংশ নিয়ে আব্দুল্লাহ সিদ্দিকী ঝিগাতলায় শহিদ হয়েছে। তার বুকের ডানপাশে গুলিটি বিদ্ধ হয়। আব্দুল্লাহ খুব ভালো ছেলে ছিল। সবার সাথে মিশতে পারতো। ওকে খুব মিস করি।’ 
হাবিবুল্লাহ বাহার কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আলী বর্দ্দিন বলেন, ‘আব্দুল্লাহ আমাদের সবার জন্য এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। তার আদর্শ ও আত্মত্যাগ আমাদেরকে ন্যায়ের পথে চলতে সবসময় অনুপ্রাণিত করবে। তার আত্মত্যাগ শুধু আমাদের কলেজ নয়, সমগ্র সমাজের জন্য একটি অনুপ্রেরণার উৎস। আব্দুল্লাহ’র মত সাহসী যুবকদের কারণেই সমাজে পরিবর্তন আসে। আমাদের উচিত তার আদর্শকে বুকে ধারণ করে একটি উন্নত, সুশৃঙ্খল ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলার শপথ গ্রহণ করা।’