খালেদা জিয়ার জানাজার সময় জানালেন ফখরুল, জানালেন শৃঙ্খলার আহ্বান
জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজা এবং মানিক মিয়া এভিনিউ জুড়ে বুধবার বেলা ২টায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জানাজা হবে।
পরে শেরেবাংলা নগরে তার স্বামী, প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরের পাশে তাকে সমাহিত করা হবে।
বুধবার দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্ত জানান দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, “জানাজা পড়াবেন আমাদের জাতীয় মসজিদের খতিব অর্থাৎ বায়তুল মোকাররমের খতিব। আর এই জানাজায় সঞ্চালনা করবেন আমাদের জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য জনাব নজরুল ইসলাম খান।”
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, “আমরা সবাই অত্যন্ত শৃঙ্খলার সঙ্গে এই জানাজায় অংশগ্রহণ করব।… আমি বাংলাদেশের সকল স্তরের মানুষের কাছে অনুরোধ জানাব, আপনারা সেই শৃঙ্খলা মেনে অত্যন্ত সুশৃঙ্খলভাবে জানাজা পড়বেন।
এরপর খালেদা জিয়াকে দাফনের কার্যক্রমে যাদের দায়িত্ব থাকবে, কেবল তারাই অংশ নেবেন বলে জানান বিএনপি মহাসচিব।
তিনি বলেন, “অনুরোধ থাকবে আপনাদের কাছে যে আপনারা কেউ এই নিয়ম ভঙ্গ করে শুধুমাত্র ছবি তোলার জন্য সামনের দিকে এগিয়ে যাবেন না এবং ব্যাহত করবেন না এই পুরো কর্মসূচিকে।
“আমরা বিশ্বাস করি, দেশনেত্রীর প্রতি আপনাদের যে সম্মান, যে শ্রদ্ধা, সেটাকে অটুট রাখার জন্য আপনারা সেই শৃঙ্খলা রক্ষা করবেন এবং সর্বাত্মকভাবে সহযোগিতা করবেন এই জানাজা এবং দাফন কার্য সুচারুরূপে সমাধা করতে।”
নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ‘আপসহীন নেত্রী’ অভিধা পাওয়া খালেদা জিয়া বিএনপির নেতৃত্ব দিয়েছেন ৪১ বছর। তিনি পাঁচবারের সংসদ সদস্য, তিনবারের প্রধানমন্ত্রী, আর বিরোধী দলীয় নেতার দায়িত্ব পালন করেছেন দুইবার।
৪০ দিন ধরে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর মঙ্গলবার ভোর ৬টায় তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।
তার মৃত্যুতে তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে অন্তর্বর্তী সরকার, বুধবার তার জানাজার দিনে এক দিনের সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়ে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস জানাজাসহ সব ধরনের শোক পালনে শৃঙ্খলা বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, ''আমি জানি, আপনারা সবাই এই সময়ে অনেক আবেগাপ্লুত। আমি আশা করছি, শোকের এই সময়ে আপনারা ধৈর্যের পরিচয় দেবেন এবং তার জানাজাসহ সকল আনুষ্ঠানিকতা পালনে সংশ্লিষ্ট সবাইকে সহযোগিতা করবেন।”
প্রধান উপদেষ্টার ভাষণের প্রসঙ্গ ধরে বিএনপির ব্রিফিংয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, “আমরা সর্বাত্মক সহযোগিতার জন্য সরকারকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।”
সেই সঙ্গে দলের পক্ষ থেকে সাত দিন শোক পালনের ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, “এই সাত দিন আমরা কালো পতাকা ধারণ করব। কালো ব্যাজ ধারণ করব এবং কালো পতাকা উড়বে প্রতিটি কার্যালয়ে, আমাদের দলীয় কার্যালয়ে।
“এবং প্রত্যেক কার্যালয়ে দোয়া পড়া হবে, কোরআন তেলাওয়াত হবে। এই বিষয়গুলো আপনারা সবাই পালন করবেন। আমরা আবারও সকলকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানাচ্ছি।”