মঙ্গলবার ০১ জুলাই ২০২৫, আষাঢ় ১৬ ১৪৩২, ০৫ মুহররম ১৪৪৭

ব্রেকিং

মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েলের সংঘাত বিস্তার: বিশ্লেষণ কলম্বিয়ায় পাহাড়ধসে মৃত্যু ১৬, নিখোঁজ অন্তত ৮ “ত্রাণ নিতে এলে গুলি করতাম”—গাজার ঘটনায় মুখ খুললেন ইসরায়েলি সেনারা তেহরানে ধ্বংসস্তূপে উদ্ধার চলছেই, মৃতের সংখ্যা ছাড়াল ৪৫০ ইরানে বাংলাদেশিদের সহায়তায় হটলাইন চালু উপদেষ্টার গাড়িবহর আটকে বিক্ষোভ: সিলেটে তিনজন কারাগারে ইসরায়েলের টার্গেটে ইরানের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার ভবন লন্ডনে ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও তারেক রহমানের বৈঠক ১৩ জুন তারেক রহমান শিগগিরই দেশে ফিরবেন: ফখরুল রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হবে কাঁচের মতো স্বচ্ছ ঘর: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নির্বাচনের ঘোষিত সময় মাথায় রেখে যথাসময়ে রোডম্যাপ দেবে ইসি: উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুললেন ছাত্রদল নেতা নাছির উদ্দিন মণিপুরে আবার উত্তেজনা, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের চাপে ঢাকার ৪ থানায় সক্রিয় অর্ধশতাধিক অপরাধী দল জাতীয় নির্বাচন ২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধে: প্রধান উপদেষ্টা প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণায় জাতির প্রত্যাশা পূরণ হয়নি: সালাহউদ্দিন আহমদ জুলাই সনদ–ঘোষণাপত্র হলে ঘোষিত সময়ে নির্বাচনে আপত্তি নেই: এনসিপি ২৫ কিলোমিটার যানজট, ২৪ ঘণ্টায় পারাপার ৬৪ হাজার যানবাহন বান্দরবানের রুমা ও থানচি ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আংশিকভাবে প্রত্যাহার গাজায় যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্রের ভেটো, জাতিসংঘ নিরাপত্তা গরম মসলার বাজার শীতল: ক্রেতা কমে যাচ্ছে, দাম কিছুটা স্থিতিশীল ঈদে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে দই-মিষ্টি মজুত, রংপুরে হিমাগারে অভিযান ও দুই লাখ টাকা জরিমানা বান্দরবানের লামায় পাহাড় ধসের শঙ্কায় ৬০ রিসোর্ট বন্ধ নির্বাচন নিয়ে তরুণদের প্রতি অসত্য অভিযোগ ও বাস্তবতা ভারতের মুসলমানদের কেন বারবার দেশপ্রেমের প্রমাণ দিতে হয় সংবিধান পরিবর্তন ছাড়া ফ্যাসিবাদ বিলোপ সম্ভব নয়: এনসিপি মুখ্য সমন্বয়ক একুশের বন্ধুত্বে আগামীর পথচলা: বার্ষিক সম্মেলনে ২১তম বিসিএস প্রশাসন ফোরাম বিজিএমইএ`র নতুন নেতৃত্বে আসছেন বাবু, নিরঙ্কুশ জয়ের ইঙ্গিত জিলহজ মাসের আমল ও কোরবানির তাৎপর্য চট্টগ্রামে নারীকে লাথির ঘটনায় ভাইরাল আকাশ চৌধুরী বহিষ্কৃত, জামায়াতের বিবৃতি সংকট নিরসনে উদ্যোগ নেই, আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিল পবিস শ্রমিকরা আনচেলত্তির স্বপ্ন - রিয়াল মাদ্রিদের মতো করে খেলাবেন ব্রাজিলকে ডিমের দাম এখনো চড়া, ডজন ১৩০–১৪০ টাকায় বিক্রি বৈরী আবহাওয়ার কারণে নোয়াখালীর হাতিয়া দ্বীপের সঙ্গে সারাদেশের নৌ-যোগাযোগ বন্ধ হারের পর লিটনের মনোভাব - এখনো দুই ম্যাচ বাকি কাল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য দেশের সব জুয়েলারি দোকান বন্ধ ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্র চীনা শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু করবে ডিএনএ টেস্ট করে নামফলক ও মর্যাদা চায় শহীদ পরিবারের সদস্যরা বেতন না পেয়ে ডাকাতি, জাহাজের চিফ ইঞ্জিনিয়ারসহ তিনজন আটক “বাংলাদেশে কৌশলগত স্বার্থ নেই দক্ষিণ কোরিয়ার”—রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং সিক “শাপলার হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই”—হেফাজতের বিবৃতি মির্জা আব্বাস: “করিডর আর স্টারলিংক আনা হচ্ছে আরাকান আর্মির জন্য” জিলহজ মাসের চাঁদ দেখে যে দোয়া পড়বেন নির্বাচনের আগে যতটুকু দরকার, ততটুকুই সংস্কার করতে হবে: মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ‘চিন্তার স্বাধীনতাও হারাচ্ছি?’— নারী কমিশন বিতর্কে গীতিআরার উদ্বেগ ইউক্রেনে রাশিয়ার টানা হামলায় নিহত ১২, কঠোর চাপের আহ্বান জানালেন জেলেনস্কি সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন – তিনটি কঠিন দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট আমরা জুলাই অভ্যুত্থান ক্ষমতার পালাবদল নয়, এটি মৌলিক সংস্কার: নাহিদ হলুদ সাংবাদিকতা’ বিরোধী স্লোগানে উত্তাল শিক্ষক মিছিল ভারতের নিষেধাজ্ঞায় আখাউড়া বন্দর দিয়ে রপ্তানি কমেছে ৪০% বিএনপির অবস্থান কর্মসূচি চলছে, দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি জাতীয় স্বার্থে অভিমান ভুলে দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান : জামায়াত আমির আন্দোলনের পর অবশেষে নিয়োগ পেলেন ৪৩তম বিসিএসের বাদ পড়া ১৬২ জন নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের দাবিতে ইসির সামনে এনসিপির বিক্ষোভ কাল বাংলাদেশে স্টারলিংকের যাত্রা, স্যাটেলাইট ইন্টারনেটের নতুন যুগ শুরু নরওয়ের দৃঢ় সমর্থন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি বিগত সরকারের সময় প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংসপ্রাপ্ত, এমন অবস্থা ছিল যে খতিবকেও পালাতে হয়েছিল: বাণিজ্য উপদেষ্টা গায়ের জোরে নগর ভবন দখল করে আন্দোলন চালাচ্ছে বিএনপি আবারও রাজপথে নামার ইঙ্গিত আসিফের, সতর্ক করলেন হাসনাত গোপন অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে আন্দোলন স্থগিত, ২০ মে আলোচনায় বসবে ঐক্য পরিষদ ভারতের আমদানি নিষেধাজ্ঞা সীমান্ত বাণিজ্যে অনিশ্চয়তা তৈরি করছে ভারতের নতুন সিদ্ধান্তে উত্তর-পূর্বাঞ্চল দিয়ে বাংলাদেশি ভোগ্যপণ্য আমদানি বন্ধ গত ৯ মাসে জুলাই-যোদ্ধাদের ওপর ৩৮টি হামলা জবি’র ৪ দফা দাবি মেনে নেওয়ায় আন্দোলনের সমাপ্তি ঘোষণা ডিবি থেকে মুক্তির পর আন্দোলনে উল্লাস জবি শিক্ষার্থীর গাজা দখলে নেওয়ার আকাঙ্ক্ষা পুনর্ব্যক্ত করলেন ট্রাম্প শাহরিয়ার হত্যাকাণ্ডে বিচার নিশ্চিতের অঙ্গীকার উপদেষ্টা আসিফের সোনার দাম ভরিতে কমল ৩ হাজার ৪৫২ টাকা, নতুন দর কার্যকর শুক্রবার থেকে ঢাবি শিক্ষার্থীর মৃত্যু: নিরাপত্তা নিশ্চিতে বড় পদক্ষেপ প্রশাসনের আওয়ামী লীগের কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধে ভারতের উদ্বেগ শ্রীনগরজুড়ে বিস্ফোরণ, যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ ওমর আব্দুল্লাহর উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্ত: আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে শাহবাগ অবরোধ ‘চলবে’, শনিবার গণজমায়েত ড্রোন যুদ্ধ: ভারত-পাকিস্তান বিরোধের নতুন অধ্যায় আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে সরকার গুরুত্বসহকারে বিবেচনায় নিচ্ছে: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং আ.লীগ নিষিদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত শাহবাগ ছাড়বেন না আন্দোলনকারীরা ‘আপ বাংলাদেশ’–এর আত্মপ্রকাশ পূর্বঘোষণা ছাড়া ভারত সফরে সৌদি প্রতিমন্ত্রী, পাকিস্তান-ভারত উত্তেজনায় কূটনৈতিক তৎপরতা তুঙ্গে দ্রুত সিদ্ধান্ত না এলে সারা দেশ থেকে ঢাকা অভিমুখে মার্চের হুঁশিয়ারি নাহিদ ইসলামের দেশীয় ওষুধ কোম্পানি রেনাটাকে ৭০০ কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে আইএফসি তারেক রহমান: সরকার হয়তো স্বৈরাচারের দোসরদের দেশত্যাগে সহায়তা করছে জাতীয় নিরাপত্তা ইস্যুতে ভারতের নির্দেশে ৪ বাংলাদেশি টিভি চ্যানেল ইউটিউবে বন্ধ

ইসলাম

অপরাধীদের নিষ্ফল আর্তনাদ

জুবাইর আহমদ আশরাফ

 প্রকাশিত: ২২:২৪, ৪ মার্চ ২০২২

অপরাধীদের নিষ্ফল আর্তনাদ

আল্লাহ তাআলা মানুষকে তাঁর ইবাদত ও আনুগত্য করার জন্য সৃষ্টি করেছেন। তিনি ইবাদত-বন্দেগী ও দৈনন্দিন জীবন সঠিকভাবে নির্বাহ করার জন্য যুগে যুগে নবী-রাসূলের মাধ্যমে আমাদেরকে পথ-নির্দেশ দান করেছেন। যারা আল্লাহ প্রদত্ত এ নির্দেশনা যথাযথভাবে অনুসরণ করে নিজেদের জীবন পরিচালিত করবে তাদের জন্য মহা পুরস্কারের কথা ঘোষণা করা হয়েছে। তারাই প্রকৃত সফলকাম। তাদের জন্য রয়েছে শান্তিময় অনন্ত জীবন। সে জীবনে আরাম-আয়েশ ও বিলাশিতার সব উপকরণ অপরিমিতভাবে আপন অধিকারে থাকবে। সর্বোপরি তাদের প্রতি ঝরে পড়বে মহান রবের স্থায়ী সন্তুষ্টি।

অপরদিকে যারা আল্লাহপ্রদত্ত নির্দেশনা ঔদ্ধত্য প্রদর্শনপূর্বক স্বেচ্ছায় সজ্ঞানে লঙ্ঘন করবে, তাদের জন্য রয়েছে মর্মন্তুদ শাস্তি। তারা আল্লাহ রাববুল আলামীনের ক্রোধের পাত্রে পরিণত হবে। তারা আল্লাহ পাকের বিচারে অপরাধী সাব্যস্ত হবে। যেকোনো অপরাধী তার বিপথগামিতার কথা অনুধাবন করতে পেরে যদি সঠিক পথে ফিরে আসে, তবে আল্লাহ পাক তাকেও সৎকর্মপরায়ণদের অন্তর্ভুক্ত করবেন। সে আপন কৃতকর্মে অনুতপ্ত হয়ে এবং ভবিষ্যতে এরূপ না করার সংকল্প  করে তওবা করলে আল্লাহ গফুরুর রাহীম তাকে ক্ষমা করে দেবেন। এই সুযোগ থাকবে মৃত্যু অবধি। মৃত্যুর পর দুরবস্থা প্রত্যক্ষ করে অপরাধীদের অনুতপ্ত বা তওবা করার দ্বারা কোনো ফলোদয় হবে না। সে কঠিন মুহূর্তের আফসোস ও হাহুতাশ নিষ্ফল আর্তনাদে পরিণত হবে।

অপরাধীরা মৃত্যুর পর নির্দিষ্ট সময়ে পুনরায় জীবিত হয়ে হাশরের ময়দানে উঠবে অতিশয় ঘৃণিত ও অপমানজনক অবস্থায়। তারা পা দ্বারা চলার পরিবর্তে মুখ দিয়ে ভর দিয়ে অস্বাভাবিক অবস্থায় আসবে।১ প্রথমত তাদের দৃষ্টিশক্তি, শ্রবণশক্তি ও বাকশক্তি কিছুই থাকবে না। বাকশক্তি পাওয়ার পর তারা বেদনায় ভারাক্রান্ত হয়ে বলবে-

رب لم حشرتنى اعمى وقد كنت بصيرا

‘হে আমার প্রতিপালক! কেন আমাকে অন্ধ অবস্থায় উত্থিত করলে? আমি তো পৃথিবীতে ছিলাম চক্ষুষ্মান।’ -সূরা ত্বহা ১২৫

আল্লাহ পাক তখন বলবেন, আমার নির্দেশাবলী দুনিয়ায় তোমার নিকট এসেছিল। তুমি সেগুলো বর্জন করেছিলে এবং ভুলে গিয়েছিলে, সেভাবে আজ তোমার সাথে বিস্মৃতির আচরণ করা হল, তোমাকে দৃষ্টিশক্তি রহিত করে উত্থিত করা হল।

হাশরের ময়দানে অপরাধীরা থাকবে ভীত-সন্ত্রস্ত। ভয়-বিহবলতায় তাদের চক্ষুদ্বয় হবে নীলবর্ণ,২ দৃষ্টি হবে নিষ্পলক,৩ চেহারা বিবর্ণ, ফ্যাকাশে ও গ্লাণিময় আচ্ছন্ন৪ এবং হৃদয় আশা-শূন্য।৫ এহেন দুর্বিষহ অবস্থার প্রেক্ষিতে তারা পুনর্বার পৃথিবীতে চলে আসার প্রার্থনা করবে। যা আদৌ সম্ভব নয়। তারা বলবে-

ربنا ابصرنا وسمعنا فارجعنا نعمل صالحا انا موقنون

‘হে আমাদের প্রতিপালক! আমরা প্রত্যক্ষ করলাম ও শ্রবণ করলাম, এখন তুমি আমাদেরকে পুনরায় পৃথিবীতে প্রেরণ কর, আমরা সৎকর্ম করব, নিশ্চয় আমরা দৃঢ় বিশ্বাসী।’ -সূরা সাজদা ১২

আল্লাহ পাকের নিষিদ্ধ কাজ করা এবং যে কাজ গুরুত্বের সাথে আদেশ করা হয়েছে তা না করাই অপরাধ। এসব অপরাধের বহু শ্রেণী ও প্রকার রয়েছে। স্থান, কাল ও পাত্রভেদেও অপরাধের তারতম্য হয়। এর মধ্যে সর্ববিচারে সর্বাধিক নিকৃষ্ট ও ভয়াবহ অপরাধ হল আল্লাহ পাকের সঙ্গে কাউকে শরীক সাব্যস্ত করা। একেই বলা হয় শিরক। আর এ নিকৃষ্টতম অপরাধ যারা করে তাদেরকে বলা হয় মুশরিক। আল্লাহ পাক বলেছেন, ‘শিরক চরম পর্যায়ের জুলুম।’৬

কুরআন মাজীদের অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে, একমাত্র শিরকই ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ। সুতরাং যে শিরক করে, সে ভীষণভাবে পথভ্রষ্ট।৭

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. থেকে বর্ণিত, ‘একবার জনৈক ব্যক্তি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট জানতে চাইলেন, সবচেয়ে বড় অপরাধ কোনটি? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন বললেন, আল্লাহ পাক যিনি তোমার সৃষ্টিকর্তা তাঁর সঙ্গে কাউকে শরীক সাব্যস্ত করা।’৮

 যারা শিরকের ন্যায় ভয়াবহ অপরাধে অপরাধী, তাদেরকে আল্লাহ তাআলা হাশরের ময়দানে জিজ্ঞাসা করবেন, তোমাদের সেই প্রভুগুলো কোথায়, যেগুলোকে তোমরা আমার শরীক বা অংশীদার দাবি করেছিলে? তারা তখন কাতরকণ্ঠে বলবে-

والله ربنا ما كنا مشركين

‘আমাদের প্রতিপালক আল্লাহর শপথ! আমরা তো মুশরিক ছিলাম না।’ -সূরা আনআম ২৩

তখন তাদের এ কথা কোনো কাজে আসবে না। আল্লাহ পাক বলবেন, ‘সকলে লক্ষ্য কর! তারা নিজেদের প্রতি কিরূপ মিথ্যা আরোপ করছে। আর তারা যেগুলোকে মিথ্যা প্রভু হিসেবে গড়েছিল সেগুলো তাদের কাছ থেকে অন্তর্হিত হয়ে গেছে।’৯

যারা মূর্তিপূজা করে তারা মূলত অভিশপ্ত জিন ও শয়তানেরই পূজা করে থাকে। পূজারীদের ধারণা, মূর্তিগুলো তাদের কার্যসিদ্ধিতে সহায়ক হবে। এজন্য তারা মূর্তির সামনে আহার্য পানীয় উপস্থিত করে, ফুল চন্দন দ্বারা মূর্তির উদ্দেশ্যে শ্রদ্ধার্ঘ নিবেদন করে এবং গান-বাজনা ও  নর্তন-কুর্দন দ্বারা মূর্তির বোধ জাগ্রত করার চেষ্টা করে। তারা মূর্তির উদ্দেশ্যে নৈবেদ্য ও উপঢৌকন পেশ করে, এগুলোর কাছে ঈস্পিত বস্ত্ত লাভে সাহায্য প্রার্থনা করে। পরকালে যখন দুরাচার জিন ও তাদের পূজারী মুশরিকদের পাকরাও করা হবে, তখন পূজিত জিন ও শয়তানেরা তা সরাসরি অস্বীকার করে বলবে, ‘তোমরা কখনও আমাদের পূজা করনি।’১০ আর মুশরিকরা ভয়-বিহবলকণ্ঠে বলবে-

ربنا استمتع بعضنا ببعض وبلغنا اجلنا الذى اجلت لنا

‘হে আমাদের প্রতিপালক! আমারা একে অপরের দ্বারা লাভবান হয়েছি এবং তুমি আমাদের জন্য যে সময় নির্ধারিত করেছিলে এখন আমরা তাতে উপনীত হয়েছি।’ -সূরা আনআম ১২৮

অর্থাৎ আমরা তো ঐ পূজা করেছি পার্থিব ক্ষণিকের প্রয়োজনে, একে অপরের দ্বারা লাভবান হওয়ার উদ্দেশ্যে। আমরা উভয় দল একে অপরের দ্বারা লাভবান হয়েছি। জিনেরা মানুষের দ্বারা এই স্বার্থ লাভ করেছে যে, মানুষ তাদের আনুগত্য করেছে, তাদেরকে নেতা হিসেবে গ্রহণ করেছে। আর মানুষেরা জিন দ্বারা এ মতলব হাসিল করেছে যে, জিনেরা মানুষের জন্য দেহজ ও কামজ ভোগ্য বিষয়ে নতুন নতুন কৌশল উদ্ভাবন করেছে, তাদের কাম-চাহিদা উসকে দিয়ে তা চরিতার্থ করার বিভিন্ন অবৈধ ও মোহময় পন্থা আবিষ্কার করেছে।১১

উভয় দল বাষ্পোচ্ছ্বাস উদগিরণ করে বলবে, আমরা ভোগ-বিলাসিতায় নিমজ্জিত ছিলাম, সহসা আমরা সেই কঠিন সময়ে উপনীত হয়েছি, যা তুমি আমাদের জন্য নির্ধারিত করে রেখেছিলে। যে দিনের আগমনকে আমরা অস্বীকার করেছিলাম, এখন তা-ই আমরা স্বচক্ষে অবলোকন করছি। এ পরিস্থিতিতে তোমার ইচ্ছা ও হুকুমের সামনে আমরা বিপন্ন, অসহায়। তখন আল্লাহ পাক এসব অপরাধী জিন ও মানুষকে বলবেন, তোমরা যেহেতু তওবা করা ব্যতিরেকে নির্ধারিত কাল পূর্ণ করে আমার সামনে উপস্থিত হয়েছ, অতএব জাহান্নামই তোমাদের সকলের বাসস্থান।

দুনিয়ার অপরাধীদের পরস্পরে সদ্ভাব ও সুসম্পর্ক থাকে। তারা একে অপরকে ফুসলিয়ে দলবদ্ধ হয়ে অনাচার ও পাপাচারে লিপ্ত হয়। তারা একে অপরের অপরাধ ঢাকার চেষ্টা করে এবং একজন বিপদগ্রস্ত হলে অন্যজন ছুটে এসে তার দুর্দশা লাঘব করার চেষ্টায় যুক্ত হয়। কিন্তু হাশরের ময়দানে সম্পূর্ণ ভিন্নচিত্র পরিদৃষ্ট হবে। তারা যখন নিজেদের কৃতকর্মের করুণ পরিণতি প্রত্যক্ষ করবে, তখন একজন অন্যজনের প্রতি অভিসম্পাত বর্ষণ করবে। যখন কোনো দলকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করার জন্য আনা হবে, তখন তারা তাদের পূর্ববর্তী দলের প্রতি যাদেরকে নেতৃস্থানীয় হওয়ার কারণে পূর্বেই জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হয়েছে, লা‘নত দিয়ে বলবে-

ربنا هؤلاء اضلونا فاتهم عذابا ضعفا من النار

‘হে আমার প্রতিপালক! এরাই আমাদেরকে বিভ্রান্ত করেছিল; সুতরাং এদেরকে দ্বিগুণ অগ্নি শাস্তি দিন।’ -সূরা আরাফ ৩৮

নেতৃস্থানীয় অপরাধী ও অনুসারী অপরাধী সকলকেই শাস্তি প্রদান করা হবে। যদিও শাস্তিতে প্রবেশের সময় অগ্র পশ্চাতের তারতম্য হবে এবং শাস্তির ধরন ও প্রকৃতিতেও পার্থক্য হবে। নেতৃবর্গ প্রথমে প্রবেশের পর কোনো অনুগামী দলকে উপস্থিত করা হলে, নেতৃবৃন্দ পরস্পরে বলবে, আরও একদল এসেছে, যারা আমাদের সাথে শাস্তি ভোগ করার জন্য জাহান্নামে প্রবেশ করছে। তারা ধ্বংস হোক। তাদের প্রবেশে আমাদের কোন আনন্দ নেই, এদের প্রতি কোনো অভিনন্দনও নেই।  এরা শাস্তিযোগ্য না হলে এদের প্রতি অভিনন্দন হত। অনুসারীরা তখন বলবে, বরং তোমাদের প্রতিই আল্লাহর কঠিন শাস্তি হোক। কারণ তোমরাই তো আমাদেরকে প্রলোভন দিয়ে এরূপ দুর্দশা ও মুসীবতে পতিত করেছ। এরপর এ অনুগামী অপরাধী দল আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করে বলবে- ১৩

ربنا من قدم لنا هذا فزده عذابا ضعفا فى النار

‘হে আমাদের প্রতিপালক! যে আমাদের এ মুসীবতের সম্মুখীন করেছে, তাকে তুমি জাহান্নামে দ্বিগুণ শাস্তি দাও।’ -সূরা সাদ ৬১

আল্লাহ তাআলা তখন বলবেন, তোমাদের প্রত্যেকের জন্য দ্বিগুণ শাস্তি রয়েছে। ১৪

পূর্ববর্তী নেতৃস্থানীয়দের দ্বিগুণ শাস্তি এজন্য যে, তারা নিজেরাও বিভ্রান্ত ছিল এবং অন্যদেরকেও বিভ্রান্ত করেছে। আর অনুগামী সাধারণ অপরাধীদের দ্বিগুণ শাস্তি এজন্য হবে যে, তারা বিভ্রান্ত হয়েছে। অথচ নবী-রাসূল ও তাঁদের ওয়ারিসগণ সুস্পষ্ট দলীল-প্রমাণের মাধ্যমে সত্যকে সত্য এবং মিথ্যাকে মিথ্যা হিসেবে পৃথক করে দেখিয়েছেন। তারপরও এরা নবীদের কথা অমান্য করে অতি দুরাচার লোকদের পদাঙ্ক অনুসরণ করেছে। নবী-রাসূলগণ পূর্ববর্তী যুগের বিভ্রান্ত লোকদের ধ্বংসাত্মক পরিণতির কথা শুনিয়েছেন, তারপরও এরা উপদেশ গ্রহণ করেনি।১৫

অপরাধীদেরকে জাহান্নামে নিক্ষেপের পর তাদের মুখমন্ডল অগ্নিতে উলট-পালট করা হবে। তখন তারা আর্তস্বরে উত্থিত করে বলবে, হায়! আমরা যদি পৃথিবীতে আল্লাহকে ও রাসূলকে মান্য করতাম!১৬

তারা ব্যথিত কণ্ঠে বলবে-

ربنا انا اطعنا سادتنا وكبرائنا فاضلونا السبيل، ربنا اتهم ضعفين من العذاب والعنهم لعنا كبيرا

‘হে আমাদের প্রতিপালক! আমরা আমাদের নেতা ও বড়লোদের আনুগত্য করেছিলাম এবং তারা আমাদেরকে পথভ্রষ্ট করেছিল। হে আমাদের প্রতিপালক! তাদেরকে দ্বিগুণ শাস্তি দাও এবং তাদেরকে দাও মহাঅভিসম্পাত।’ -সূরা আহযাব ৬৭, ৬৮

(চলবে ইনশাআল্লাহ)

 

সূত্র :

১. মিশকাত শরীফ ২/৪৮৪                          

২. সূরা ত্বহা ১০২                                     

৩. সূরা ইবরাহীম ৪২                                 

৪. সূরা আবাসা ৪১                                                           

৫. সূরা ইবরাহীম ৪৩                    

৬. সূরা লুকমান ১৩

৭. সূরা নিসা ১১৬

৮. মিশকাত শরীফ ১/১৬

৯. সূরা আনআম ২৪

১০. সূরা ইউনুস

১১. ইদরীস কান্দলভী, মাআরিফুল কুরআন ৩/১৯

১২. প্রাগুক্ত ৩/১৯

১৩. বয়ানুল কুরআন, সূরা সাদ

১৪. সূরা আ‘রাফ ৩৮

১৫. ইদরীস কান্দলভী, মাআরিফুল কুরআন ৩/১১৫

১৬. সূরা আহযাব ৬৬