শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৫, কার্তিক ২৯ ১৪৩২, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

ব্রেকিং

ভোটের দিনে গণভোট: ‘আলোচনা করে’ মত জানাবে ইসি জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি জুলাই সনদ লঙ্ঘন করেছেন প্রধান উপদেষ্টা: সালাহউদ্দিন সরকারের সিদ্ধান্তে ‘জনআকাঙ্ক্ষা পূরণ হয়নি’: জামায়াত ইসরাইলের মন্ত্রিত্ব থেকে পদত্যাগ করলেন গাজা যুদ্ধবিরতির আলোচক ডারমার ২০২৫ সালে রেকর্ড ছাড়াবে জীবাশ্ম জ্বালানির নিঃসরণ : গবেষণা জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে: প্রধান উপদেষ্টা গুলিস্তানে আওয়ামী লীগ অফিসে ভাঙচুর, আগুন আগাম পোস্টার সরিয়ে ফেলুন, দলগুলোকে সিইসি পঞ্চদশ সংশোধনীর রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি দৃষ্টান্তমূলক রায়ে হাসিনার সর্বোচ্চ শাস্তির আশা চিফ প্রসিকিউটরের ‘মানবতাবিরোধী অপরাধ’: শেখ হাসিনার মামলার রায় ১৭ নভেম্বর

ইসলাম

একটি ভিত্তিহীন বর্ণনা : ওযুর পর সূরা ক্বদর পাঠ করা ও তার ফযীলত

 আপডেট: ১৫:২৪, ১২ মার্চ ২০২৫

একটি ভিত্তিহীন বর্ণনা : ওযুর পর সূরা ক্বদর পাঠ করা ও তার ফযীলত

লোকমুখে প্রসিদ্ধ, যে ব্যক্তি ওযুর পর একবার সূরা ক্বদর পাঠ করবে তাকে আল্লাহ ছিদ্দীকগণের অন্তর্ভুক্ত করবেন। যে দুইবার পাঠ করবে তাকে শহীদগণের অন্তর্ভুক্ত করবেন। যে তিনবার পাঠ করবে তার হাশর হবে নবীগণের সাথে।

আবার এভাবেও বলতে শোনা যায়, যে একবার পাঠ করবে তাকে রাতের ইবাদত ও দিনের রোযাসহ পঞ্চাশ বছর আমলের সাওয়াব দেয়া হবে। যে দুইবার পাঠ করবে তাকে আল্লাহ ইবরাহীম আলাইহিস সালাম ও মূসা আলাইহিস সালাম-এর সমপরিমাণ সওয়াব দান করবেন। আর যে তিনবার পাঠ করবে তার জন্য জান্নাতের আটটি দরজা খুলে দেওয়া হবে, সে বিনা হিসাবে যে দরজা দিয়ে ইচ্ছা প্রবেশ করতে পারবে। 

এটি একটি ভিত্তিহীন বর্ণনা। কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে তা পাওয়া যায় না। ইমাম সাখাবী রাহ. বলেন-

قراءة سورة إِنَّا أَنْزَلْنَاهُ عقب الوضوء لا أصل له .

ওযুর পর সূরা কদ্র পাঠ করা বিষয়ক বর্ণনার কোনো ভিত্তি নেই। -আলমাকাসিদুল হাসানা, পৃ. ৪৯৬, ১১৬২ নং বর্ণনার অধীনে; আলজাদ্দুল হাছীছ ফী বায়ানি মা লাইসা বি হাদীস, বর্ণনা নং ৫৩০

সুতরাং উপরোক্ত আমল ও তার ফযীলত ভিত্তিহীন। নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে তা প্রমাণিত নয়। এটিকে ওযুর পরের আমল হিসেবে প্রচার করা বৈধ হবে না। তাছাড়া ওযুর পরে পড়ার জন্য বেশ কিছু ফযীলতপূর্ণ সহীহ দুআ রয়েছে। আমরা সেগুলো অনুযায়ীই আমল করব। সহীহ দুআসমূহ থেকে কয়েকটি নিচে দেয়া হল।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-

مَا مِنْكُمْ مِنْ أَحَدٍ يَتَوَضَّأُ فَيُبْلِغُ - أَوْ فَيُسْبِغُ - الْوَضُوءَ ثُمَّ يَقُولُ: أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُ اللهِ وَرَسُولُهُ إِلَّا فُتِحَتْ لَهُ أَبْوَابُ الْجَنَّةِ الثَّمَانِيَةُ يَدْخُلُ مِنْ أَيِّهَا شَاءَ .

কেউ যখন ভালোভাবে ওযু করে এই দুআ পড়ে-

أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُ اللهِ وَرَسُولُهُ.

তখন তার জন্য জান্নাতের আটটি দরজাই খুলে দেওয়া হয়। সে যে কোনো দরজা দিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারে। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ২৩৪

বিশিষ্ট তাবিঈ সালিম ইবনে আবিল জা‘দ রাহ. বলেন, আলী রা. বলেছেন, কেউ যখন ওযু করে তখন (ওযুর পরে) যেন বলে-

أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ، اللَّهُمَّ اجْعَلْنِي مِنَ التَّوَّابِينَ وَاجْعَلْنِي مِنَ الْمُتَطَهِّرِينَ.

-মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক, বর্ণনা নং ৭৭১; মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা, বর্ণনা নং ২০


এছাড়াও ওযুর পরের আরও কিছু সহীহ দুআ হাদীস শরীফে বর্ণিত হয়েছে। ভিত্তিহীন বিষয়ের প্রতি না ছুটে আমরা সহীহ দুআগুলোর উপর আমল করতে পারি।