সোমবার ০৩ নভেম্বর ২০২৫, কার্তিক ১৯ ১৪৩২, ১২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

ব্রেকিং

গণভোটের আলোচনায় ইউনূসকে ‘রেফারির ভূমিকায়’ চায় ধর্মভিত্তিক ৮ দল ১৯৪৯ কোটি টাকা আত্মসাৎ: সালমান এফ রহমান, ভাই, ছেলেদের বিরুদ্ধে ৫ মামলা ডেঙ্গুতে পাঁচজনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১১৪৭ অভ্যুত্থানের পর প্রথম বছরে বৈদেশিক বিনিয়োগে রেকর্ড প্রাথমিকের সংগীত ও শারীরিক শিক্ষা শিক্ষক পদ বাদ রাজনৈতিক দলগুলোই ঠিক করবে গণভোটের সময় এমপিওভুক্তির দাবিতে ফের লাগাতার অবস্থানে শিক্ষকরা নির্বাচনের ওপর `নির্ভর করছে` দেশ কোন দিকে যাবে: সিইসি জাতীয় নির্বাচনে পোস্টাল ব্যালটে ভোট দেবেন প্রবাসীরা ভারতে বাস-ট্রাক সংঘর্ষে নিহত অন্তত ২০ লঘুচাপ: উপকূলে জোয়ারের উচ্চতা বাড়ার আভাস প্রার্থী চূড়ান্ত করতে বৈঠকে বসছে বিএনপির স্থায়ী কমিটি আফগানিস্তানে ৬.৩ মাত্রার ভূমিকম্পে নিহত ৮ আপাতত ইউক্রেইনের জন্য কোনো টমাহক নয়: ট্রাম্প দক্ষিণ আফ্রিকাকে কাঁদিয়ে প্রথমবারের মত বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ভারত

ইসলাম

দ্বীনের ওপর অবিচল থাকার পদ্ধতি

মুফতি জাওয়াদ তাহের

 প্রকাশিত: ২৩:০৯, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৩

দ্বীনের ওপর অবিচল থাকার পদ্ধতি

দ্বীনের ওপর অটল ও অবিচল থাকা একজন মুমিনের আবশ্যকীয় বিষয়। দুনিয়ায় বিভিন্ন ধরনের অবস্থার সম্মুখীন হওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু শত বাধাবিপত্তির মধ্যেও নিজেকে দ্বীনের ওপর অবিচল রাখা কর্তব্য। মহান আল্লাহ বলেন, ‘সুতরাং আপনি আহ্বান করুন এবং দৃঢ় থাকুন, যেভাবে আপনি আদিষ্ট হয়েছেন।
আর আপনি তাদের খেয়াল-খুশির অনুসরণ করবেন না।’ (সুরা : আশ শুরা, আয়াত : ৪২)

যারা দ্বীনের ওপর অবিচল থাকবে, তাদের ব্যাপারে আছে সুসংবাদ। আল্লাহ তাআলা অন্যত্র বলেন, ‘নিশ্চয় যারা বলে, আমাদের রব আল্লাহ, তারপর অবিচল থাকে, তাদের কাছে নাজিল হয় ফেরেশতা (এ বলে) যে তোমরা ভীত হয়ো না, চিন্তিত হয়ো না এবং তোমাদের যে জান্নাতের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, তার জন্য আনন্দিত হও।’ (সুরা : ফুসসিলাত, আয়াত : ৩০)

এক. আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করা এবং তাঁর কাছে অধিক হারে দোয়া করা, যেন তিনি মৃত্যু পর্যন্ত দ্বীনের ওপর অবিচল রাখেন।

রাসুল (সা.) আমাদের দোয়া শিখিয়েছেন। কারণ মানুষের মন সর্বদা আল্লাহর নিয়ন্ত্রণে থাকে। তিনি যেভাবে ইচ্ছা তা পরিবর্তন করেন। আনাস (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) এই দোয়া বেশি পাঠ করতেন, হে অন্তরসমূহের পরিবর্তনকারী! আমার অন্তরকে তোমার দ্বীনের ওপর প্রতিষ্ঠিত (দৃঢ়) রাখো। (তিরমিজি, হাদিস : ২১৪০)

দুই. অধিক হারে ক্ষমা প্রার্থনা করা। ইস্তিগফার পড়া। কারণ ক্ষমা প্রার্থনার কারণে তার জন্য দ্বীনের ওপর অটল থাকা সহজ হয়। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর তোমরা নিজেদের পালনকর্তা সমীপে ক্ষমা প্রার্থনা করো। অন্তর তাঁরই প্রতি মনোনিবেশ করো।

তাহলে তিনি তোমাদের নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত উত্কৃষ্ট জীবনোপকরণ দান করবেন।’ (সুরা : হুদ, আয়াত : ৩)

তিন. ইলমে নাফে তথা উপকারী ইলম অর্জনের চেষ্টা করা। কারণ উপকারী ইলম অর্জনকারীর জন্য তা আলো ও পথ প্রদর্শক। কোনো বান্দা ইলম ছাড়া সঠিক রাস্তায় চলতে পারবে না। ইলম তাকে সত্য-মিথ্যার পথ বলে দেবে। ভালো-মন্দের পথ দেখাবে। রাসুল (সা.) আল্লাহর কাছে এই দোয়া করতেন। আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) এই দোয়া করতেন, হে আল্লাহ! আমি আপনার আশ্রয় প্রার্থনা করছি অনুপকারী বিদ্যা থেকে; এমন অন্তর থেকে, যে অন্তর (আল্লাহকে) ভয় করে না এবং এমন থেকে, যা কবুল হয় না আর ওই প্রবৃত্তি থেকে, যা তৃপ্ত হয় না। তিনি বলেন, হে আল্লাহ! আমি এই চার বস্তু থেকে আপনার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। (নাসায়ি, হাদিস : ৫৪৭০)

চার. ভালো লোকদের সাহচর্য গ্রহণ করা। এই সাহচর্য আপনাকে ভালো-মন্দের পথ দেখাবে। যদি ভালো লোকের সাহচর্য গ্রহণ করেন, তাহলে দ্বীনের ওপর অবিচল থাকা সহজ হবে। হাদিসে এসেছে, হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, মানুষ তার বন্ধুর ধ্যান-ধারণার অনুসারী হয়ে থাকে। সুতরাং তোমাদের সবার খেয়াল রাখা উচিত, সে কার সঙ্গে বন্ধুত্ব স্থাপন করছে। (তিরমিজি, হাদিস : ২৩৭৮)

পাঁচ. অশ্লীল গান-বাদ্য শোনা থেকে নিজেকে বিরত রাখা। এটি একটি পরীক্ষিত পদ্ধতি। কারণ গান-বাদ্য মানুষের দিলকে নষ্ট করে দেয় আর তখন সে ভালো জিনিস বা ভালো পথে চলতে পারে না। যদি কারো মধ্যে এই মন্দ অভ্যাস থেকে থাকে, তাহলে এক সপ্তাহের জন্য পরীক্ষা করে দেখুন আপনার মধ্যে অবশ্যই পরিবর্তন আসবে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর মানুষের মধ্যে থেকে কেউ কেউ আল্লাহর পথ থেকে বিচ্যুত করার জন্য অসার বাক্য কিনে নেয়।’ (সুরা : লুকমান, আয়াত : ৬)

বেশির ভাগ সাহাবি, তাবেয়ি ও তফসিরবিদের মতে, ‘লাহওয়াল হাদিস’ মানে গান।

ছয়. নিয়মিত কোরআন তিলাওয়াত করা। কারণ কোরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা বান্দার অন্তরকে পরিশুদ্ধ করেন। ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, যার হৃদয়ে কোরআনের কিছুই নেই, সে বর্জিত ঘরের মতো। (তিরমিজি, হাদিস : ২৯১৩)

সাত. পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ গুরুত্বসহ আদায় করা। কারণ নামাজ মানুষকে সব অনিষ্টতা থেকে দূরে রাখে এবং দ্বীনের ওপর অটল থাকা সহজ হয়ে যায়। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আপনি আপনার প্রতি প্রত্যাদিষ্ট কিতাব পাঠ করুন এবং নামাজ কায়েম করুন। নিশ্চয়ই নামাজ অশ্লীল ও গর্হিত কার্য থেকে বিরত রাখে। আল্লাহর স্মরণ সর্বশ্রেষ্ঠ। আল্লাহ জানেন তোমরা যা করো।’ (সুরা : আনকাবুত, আয়াত : ৪৫)

আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে দ্বীনের ওপর অটল থাকার তাওফিক দান করুন।

মুসলিম বাংলা