ইউক্রেইন যুদ্ধ নিয়ে ‘আগামী সপ্তাহে মায়ামিতে বৈঠকে বসবে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া’
মস্কো ও কিইভের মধ্যে প্রায় চার বছর ধরে চলা যুদ্ধ শেষ করার জন্য ট্রাম্প প্রশাসনের উদ্যোগের অংশ হিসেবে আগামী সপ্তাহে ফ্লোরিডার মায়ামি শহরে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার কর্মকর্তা বৈঠকে বসবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিষয়টি সম্পর্কে জ্ঞাত দুই ব্যক্তির বরাতে এ খবর জানিয়েছে মার্কিন অনলাইন সংবাদপত্র পলিটিকো। সংবাদপত্রটি জানিয়েছে, উভয় ব্যক্তিই পরিচয় না প্রকাশ করার শর্তে স্পর্শকাতর এই বৈঠক নিয়ে আলোচনা করতে রাজি হয়েছেন।
পলিটিকো লিখেছে, এই যুদ্ধ শেষ করতে প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের উদ্যোগ হোঁচট খাওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেইনের ওপর ছাড় দেওয়ার জন্য চাপ বৃদ্ধি করছে যাতে যুদ্ধ শেষ করা যায়। এই পরিকল্পনার কোনো কিছু এখনও স্থির হয়নি কিন্তু রাশিয়া তাদের দাবিগুলো থেকে খুব একটা নড়েনি। যদি দুই দেশের কর্মকর্তারা আগামী রোববার বৈঠকে মিলিত হন তবে ট্রাম্প প্রশাসন রুশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে সর্বশেষ আলোচনার ফলাফল তুলে ধরতে পারবে।
পরিকল্পিত বৈঠকের বিষয়ে জ্ঞাত একজন সংবাদপত্রটিকে জানিয়েছেন, রাশিয়ার প্রতিনিধি দলে দেশটির সার্বভৌম সম্পদ তহবিলের প্রধান কিরিল দিমিত্রিয়েভও থাকবেন বলে আশা করা হচ্ছে। আর মার্কিন পক্ষের প্রতিনিধিত্ব করবেন ট্রাম্প প্রশাসনের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ এবং ট্রাম্পের জামাতা জ্যারের্ড কুশনার।
তবে এ বৈঠকের বিষয়ে মন্তব্যের অনুরোধে হোয়াইট হাউজ তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া দেয়নি বলে জানিয়েছে পলিটিকো।
চলতি সপ্তাহের প্রথমদিকে উইটকফ ও কুশনার বার্লিনে প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিসহ ইউক্রেইনীয় ও ইউরোপীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে টানা দীর্ঘ বৈঠক করেন। এই বৈঠকে কিইভের জন্য মার্কিন নিরাপত্তা নিশ্চয়তা, ভূখণ্ডগত ছাড় ও অন্যান্য প্রস্তাবগুলোতে ইউক্রেইনীয় ও ইউরোপীয় কর্মকর্তাদের রাজি করানোর চেষ্টা করেন মার্কিন দূতরা।
যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেইন যুদ্ধ বন্ধের চেষ্টা চালাচ্ছে আর এই লক্ষ্যে কিইভকে ধারাবাহিকভাবে চাপে রাখছে ওয়াশিংটন।
যুক্তরাষ্ট্র নেটো সদস্যদের দেওয়া প্রতিশ্রুতির অনুরূপ ইউক্রেইনকে একটি পারস্পরিক প্রতিরক্ষা প্রতিশ্রুতি প্রস্তাব দিয়েছে আর ইউক্রেইনও অবিলম্বে নেটোতে যোগ দেওয়া দাবি থেকে সরে এসেছে।
ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তাদের বিশ্বাস, চূড়ান্ত চুক্তিতে রাশিয়া ইউক্রেইনের ক্ষেত্রে পশ্চিমা নিরাপত্তা নিশ্চয়তা এবং দেশটির ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) যোগদানের বিষয়টি মেনে নেবে।
কিন্তু ‘সার্বভৌমৈ রাষ্ট্র হিসেবে ইউক্রেইনের অস্তিত্বের অবসান ঘটানোই তার একমাত্র ইচ্ছা’ বলে জানিয়ে আসছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। বুধবার মস্কোতে দেশটির উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে করা পুতিনের সর্বশেষ মন্তব্যেও কোনো ইঙ্গিত মেলেনি যে তিনি তার ওই মনোভাব থেকে সরে এসেছেন।