খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় এভারকেয়ারে এসএসএফ
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে রাষ্ট্রের ‘অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি’ (ভিভিআইপি) ঘোষণা করার পর রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতাল ঘিরে গড়ে তোলা হয়েছে নিরাপত্তা বলয়।
মঙ্গলবার সকালে হাসপাতালের প্রধান ফটকে ব্যারিকেড বসায় পুলিশ। দুপুরে স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সের (এসএসএফ) সদস্যদের গাড়ি ঢুকতে দেখা যায় হাসপাতালের ফটকে।
বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এসএসএফ সদস্যরা হাসপাতালের নিরাপত্তার দায়িত্ব নিয়েছেন। তারা আমাদের স্থায়ী কমিটির সদস্য এ জেড এম জাহিদ হোসেনের সঙ্গে কথা বলেছেন। উনারা বলেছেন, প্রধান উপদেষ্টা ম্যাডামকে দেখতে আসতে পারেন।”
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী সৈয়দা শামিলা রহমান এবং খালেদা জিয়ার মেডিকেল বোর্ডের প্রধান অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদার সে সময় হাসপাতালে ছিলেন।
তবে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস এভারকেয়ারে যাবেন কি না, কিংবা কখন যাবেন, সে বিষয়ে তার দপ্তর থেকে এখানো কোনো ঘোষণা দেওয়া হয়নি।
এদিন সকালে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে খালেদা জিয়াকে রাষ্ট্রের ‘অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি’ (ভিভিআইপি) ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। এর মধ্য দিয়ে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্ব এসএসএফকে দেওয়ার ব্যবস্থা হয়।
পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ যমুনার সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “সভায় তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী, সাবেক রাষ্ট্রপতির স্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপরসন বেগম খালেদা জিয়ার আশু রোগমুক্তি কামনা করে দোয়া ও প্রার্থনা করা হয় এবং জাতির কাছে তার জন্য দোয়া ও প্রার্থনার আহ্বান জানানো হয়।”
তিনি বলেন, “সভায় বেগম খালেদা জিয়ার বর্তমান শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় হাসপাতালে তার নির্বিঘ্ন চিকিৎসা, প্রয়োজনে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা, তার নিরাপত্তা ও যাতায়াতের সুবিধা এবং উচ্চ মর্যাদা বিবেচনায় তাকে রাষ্ট্রের অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (ভিভিআইপি) ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এই সিদ্ধান্ত অবিলম্বে কার্যকরের জন্য সংশ্লিষ্ট সকল সংস্থাকে নির্দেশনা প্রদান করা হয়।”
এ বিষয়ে খালেদা জিয়ার পরিবার এবং দল ‘অবগত আছেন’ বলেও জানান ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।
গত ২৩ নভেম্বর রাতে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল, কিন্তু বুকে সংক্রমণ ধরা পড়ায় তাকে ভর্তি করে নেওয়া হয়। সোমবার ভোর সাড়ে ৩টার দিকে শারীরিক অবস্থার অবিনতি হলে তাকে হাসপাতালে রাখা হয়েছে ‘স্পেশাল কেয়ারে’।
তার চিকিৎসায় যুক্তরাজ্যের বিশেষজ্ঞ বুধবার দল আসছেন বলে খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এজেডএম জাহিদ হোসেন জানিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্র, চীন, কাতার, সৌদি আরব, পাকিস্তান ও ভারত ইতোমধ্যে চিকিৎসা সহায়তার হাত বাড়িয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “খালেদার জন্য দেশের বাইরে নেওয়ার জন্য যে কথাটি আমি পূর্বেও বলেছি, মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা উনাকে দেখেছেন। আজকেও ইউকে থেকে উনাকে দেখার জন্য বিশেষজ্ঞ আসবেন এবং উনারা দেখবেন।
“দেখার পরবর্তীতে উনাকে যদি ট্রান্সফারেবল হয়, আমাদের যদি ট্রান্সফার করার প্রয়োজন পড়ে— মেডিকেল বোর্ড মনে করে, তখনই সেই যথাযথ সময়ে উনাকে চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়া হবে।”