সোমবার ১৭ নভেম্বর ২০২৫, অগ্রাহায়ণ ৩ ১৪৩২, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

জাতীয়

খুলনায় একই পরিবারের ৩ জনসহ ৪ খুন

 আপডেট: ১১:৩৪, ১৭ নভেম্বর ২০২৫

খুলনায় একই পরিবারের ৩ জনসহ ৪ খুন

খুলনা মহানগরীর ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের মুক্তা কমিশনারের বাড়ির কাছে দরবেশ মোল্লা গল্লির ভেতরের সড়কে একটি বাসায় নানি ও দুই নাতিকে দুর্বৃত্তরা হত্যা করেছে।

নিহতরা হলেন- আব্দুল হান্নানের স্ত্রী মহিদুন্নেসা (৫৫), নাতি মুস্তাকিম ( ৮) ও ফাতিহা (৬)। তিনজনের লাশ তাদের বসত ঘরের পাশে মুরগির খামারের মধ্যে পাওয়া যায়।

তাদের মা শাহীতুন নেসা ও বাবা শিফার আহমেদ। শিশুদের বাবা-মা দুইজনই চাকুরী করেন। তারা কর্মস্থলে থাকায় তাদের দেখাশোনা করতেন নানি।

লবনচরা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সানওয়ার হুসাইন মাসুম বলেন, রাতে লবণচরা এলাকা থেকে তিনজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এদের মধ্যে দুই শিশু ও তাদের নানি রয়েছেন। শিশু দুটির বাবা-মা চাকরি করেন। সকালে তারা শিশু দুটিকে নানির কাছে রেখে কাজের উদ্দেশে বের হয়ে যান। সন্ধ্যায় তারা দুজন বাড়িতে ফিরে এসে দরজায় নক করলে তাদের সাড়াশব্দ না পেয়ে প্রতিবেশীদের সহায়তায় ঘরের দরজা ভেঙে নানির মরদেহ ঘরের মধ্যে পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেন। এরপর তারা ঘরের পাশে মুরগির ঘর থেকে শিশু দুটির লাশ উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে।

ওসি আরও বলেন, তাদের তিনজনের শরীরেই আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। আর মরদেহগুলো শক্ত হয়ে রয়েছে। কে বা কারা এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত তা এখনো জানা যায়নি। তদন্ত সাপেক্ষে বলা সম্ভব হবে। লাশের সুরতহাল রিপোর্ট শেষে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হবে।

স্থানীয়রা জানান, রোববার দুপুর থেকে সন্ধ্যার মধ্যবর্তী কোনো সময়ে অজ্ঞাত কেউ বা কারা তাদের হত্যা করে থাকতে পারে। পরিবার ও প্রতিবেশীরা দীর্ঘক্ষণ ধরে তাদের খোঁজ না পেয়ে সন্ধ্যা নাগাদ বাড়ির মধ্যে থাকা মুরগির খোপের পাশে লাশ তিনটি দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেন।

 

 

খবর পেয়ে লবণচরা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রাথমিক সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে। হত্যাকাণ্ডের পদ্ধতি, উদ্দেশ্য ও সম্ভাব্য জড়িতদের বিষয়ে এখনো কিছু নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

স্থানীয়দের মধ্যে নেমে এসেছে গভীর শোক ও আতঙ্ক। শিশুসহ তিনজনকে হত্যার এই নির্মম ঘটনায় এলাকাবাসী দোষীদের দ্রুত শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন।

লবণচরা থানার কর্মকর্তারা জানান, ঘটনাটি অত্যন্ত রহস্যজনক। তদন্ত চলছে এবং হত্যার কারণ উদ্ঘাটনে পুলিশ সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে।

এর আগে পূর্ব শত্রুতার জেরে আলাউদ্দিন মৃধা (৩৫) নামে এক যুবককে গলা কেটে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। রোববার (১৬ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে নগরীর সোনাডাঙ্গা থানাধীন করিমনগর সৈয়দ আলী হোসেন স্কুলের পাশে এ ঘটনা ঘটে। নিহত আলাউদ্দিন ওই এলাকার বাসিন্দা মনা মুন্সির ছেলে।

সোনাডাঙ্গা মডেল থানার এসআই সুমন হাওলাদার জানান, আলাউদ্দিন করিমনগর এলাকার ইলোরা বেগমের বাড়ির ভাড়াটিয়া ছিলেন। সন্ধ্যায় তিনি স্ত্রীসহ ঘরের বারান্দার সিঁড়িতে বসে কথা বলছিলেন। এসময় ৬–৭ জন দুর্বৃত্ত বাড়িতে ঢুকে আলাউদ্দিনের সঙ্গে কথা বলতে থাকে। হঠাৎ তারা তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। দু’টি গুলি তার বুকে ও পেটে লাগে। পরে তারা ধারালো ছুরি দিয়ে তার গলায় আঘাত করলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।

খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে সিআইডিকে জানায়। সুরতহাল শেষে লাশ উদ্ধার করা হবে বলে জানান এসআই সুমন। ঘটনাস্থল থেকে তিনটি গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, নিহত আলাউদ্দিন মাদক কারবারের সঙ্গে জড়িত ছিলেন এবং দীর্ঘদিন কারাভোগের পর মাত্র ১০ দিন আগে জামিনে মুক্তি পান। মুক্তির পর তিনি দিনমজুরের কাজ করতেন। তবে কোন কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে- তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।