গুলিস্তানে আওয়ামী লীগ অফিসে ভাঙচুর, আগুন
শেখ হাসিনার রায়ের তারিখ ঘোষণা ঘিরে উত্তেজনার মধ্যে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ভাঙচুর ও আগুন দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বেলা ১টার দিকে ইনকিলাব মঞ্চের ব্যানারে মিছিল থেকে গুলিস্তানে আওয়ামী লীগ অফিসে এই হামলা চালানো হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ১৫-২০ জনের একটি দল আওয়ামী লীগ অফিসের কয়েকটি ম্যুরাল ভাঙচুর করে।
পরে তারা ওই ভবনের চতুর্থ তলার ফাঁকা জায়গায় কাঠ ও বিভিন্ন জিনিসপত্র জড়ে করে আগুন লাগিয়ে দেয়। কিছু ব্যানার স্তুপ করে তাতেও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এ সময় নিচ থেকে সেখানে ধোঁয়া উঠতে দেখা যায়।
এদিন সকাল থেকে আওয়ামী লীগ বিরোধী নানা স্লোগানসহ দলটির কার্যালয়ের আশেপাশে বিভিন্ন গ্রুপে বিভক্ত হয়ে মিছিল করতে দেখা গেছে।
আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যরাও ওই এলাকায় কয়েকদফা টহল দিচ্ছিলেন, এর মধ্যে বেলা ১টার পর মিছিলসহ একটি দল কার্যালয়টির ভেতরে গিয়ে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে।
এ সময় তারা ‘আওয়ামী লীগের আস্তানা ভেঙে ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও’; 'গোপালগঞ্জের গোলাপি আর কতকাল জ্বালাবি', 'আওয়ামী লীগের কালো হাত, ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও'সহ নানান স্লোগান শোনা যায়।
ওই সময়ে এ বিষয়ে পুলিশের কাছে কোনো খবর নেই বলে জানান পল্টন থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মনিরুজ্জামান শেখ।
তিনি বলেন, “ভাঙচুর বা আগুন দেওয়ার খবর আমাদের জানা নেই।”
তবে পল্টন থানার ডিউটি অফিসার এসআই নিশাত বলেন, “গুলিস্তানে আওয়ামী পার্টি অফিসের ভেতরে কিছু মানুষ কাঠ দিয়ে আগুন ধরিয়েছিল আর সামনে কিছু ভাঙচুর হয়েছে বলে শুনেছি। তবে সেটি বড় কোন আগুন নয়।”
সেখানে থাকা পল্টন থানার এস আই আল আমিন বেলা তিনটার দিকে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “জুলাই যোদ্ধা, ইনকিলাব মঞ্চ, ছাত্রশিবির ব্যানারে সকাল থেকে আওয়ামী লীগের অফিসের সামনে অবস্থান নিয়েছে।
"তারা সেখানে বিভিন্ন প্রকার স্লোগান দিচ্ছে, দেওয়ালে যে টেরাকোটার নকশা আছে তা তুলে ফেলার চেষ্টা করছে।"
পরিস্থিতি ‘স্বাভাবিক রয়েছে’ জানিয়ে তিনি বলেন, “তারা আওয়ামী লীগের অফিসের ভেতরে-বাইরে এখনো অবস্থান করছে।
জুলাই অভ্যুত্থান দমানোর চেষ্টায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ‘পলাতক’ সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাস্তি হবে কি না, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সেই রায় দেবে ১৭ নভেম্বর।
এই তারিখ ঘোষণা ঘিরে বৃহস্পতিবার ‘ঢাকা লকডাউন’ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ। তাদের ঘোষিত বিক্ষোভ কর্মসূচির মধ্যে গত কয়েক দিন ধরে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষিপ্ত বোমাবাজি এবং যানবাহনে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে।
এদিকে আওয়ামী লীগকে প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়ে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই মাঠে রয়েছে জামায়াতে ইসলামী, ইনকিলাব মঞ্চ, জুলাই সংসদসহ কয়েকটি সংগঠন।
সকালে শাহবাগ থেকৈ মিছিল নিয়ে হাই কোর্ট হয়ে গুলিস্তানে যায় সংগঠনগুলো। দুপুরে সেখান থেকে আওয়ামী লীগ অফিসে হামলা হয়।
গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরও এক দফা ভবনটিতে আগুন দেওয়া হয়েছিল। তখন থেকে ভবনটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে ছিল। এক পর্যায়ে ভবনের কিছু অংশ পরিষ্কার করে সেখানে 'আন্তর্জাতিক ফ্যাসিজম ও গণহত্যা গবেষণা ইনস্টিটিউট' নামে ব্যানার লাগিয়ে দেওয়া হয়।