শিশুর বিকাশে মাছ খাওয়া অপরিহার্য

শিশুর মস্তিষ্ক, দৃষ্টিশক্তি ও হাড়ের জন্য মাছের পুষ্টিগুণ অপরিহার্য
মাছ হচ্ছে শিশুদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ খাবারের একটি। এতে আছে উচ্চমানের প্রোটিন, ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড, আয়রন, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ডি, আয়োডিন, জিংক ও ম্যাগনেশিয়াম, যা শিশুর মস্তিষ্ক, স্নায়ুতন্ত্র, দৃষ্টিশক্তি ও হাড়ের গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
মাছের পুষ্টিগুণ
সাদা মাছে প্রোটিন বেশি ও স্যাচুরেটেড ফ্যাট কম, যা শিশুর বেড়ে ওঠার জন্য প্রয়োজনীয়। তৈলাক্ত মাছে থাকে ইপিএ ও ডিএইচএ, যা হৃদ্যন্ত্রের জন্য উপকারী এবং ভিটামিন ডি, যা হাড় ও দাঁতের ক্যালসিয়াম শোষণে সহায়তা করে। সামুদ্রিক মাছ যেমন স্যামন, ইলিশ ও পাঙাশে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন ডি ও ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড, যা স্মৃতিশক্তি ও শেখার ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
এ ছাড়া মাছে থাকা সেলেনিয়াম ও আয়োডিন শিশুর থাইরয়েড গ্রন্থির স্বাভাবিক কার্যকারিতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
শিশুকে মাছ খাওয়াবেন কীভাবে?
বেশিরভাগ শিশুই মাছ খেতে চায় না। অনেক ক্ষেত্রে এর জন্য অভিভাবকের মনোভাব দায়ী। শিশুর নতুন কোনো খাবার খাওয়ানোর ক্ষেত্রে ধৈর্য ধরে পর্যবেক্ষণ করতে হবে, অ্যালার্জি বা হজমে সমস্যা হচ্ছে কি না। একবারে নানা রকম মাছ না দিয়ে একটি করে নতুন মাছ খাওয়ানোর অভ্যাস গড়ে তুলুন। গবেষণায় দেখা গেছে, শিশুকে একটি নতুন খাবারে অভ্যস্ত করতে গড়ে ১৫ বার পর্যন্ত চেষ্টার প্রয়োজন হয়।
যেভাবে উৎসাহিত করবেন:
-
তেলাপিয়া, স্যামন বা ডোরি মাছ ফিশ ফিঙার, ফিশ টাকো বা বেকড ফর্মে দিন
-
রঙিন সবজির সঙ্গে মাছ পরিবেশন করুন
-
ভাপে রান্না করে ভর্তা, গ্রিল অথবা ফ্রাই করুন
-
কাঁটা ছাড়িয়ে চপ, নাগেট বা কোফতার মতো তৈরি করে দিন
-
ছবি বা বইয়ের মাধ্যমে মাছের পুষ্টিগুণ বোঝান
-
স্যান্ডউইচ, পাস্তা বা সালাদে টুনা বা চিংড়ি ব্যবহার করুন
সতর্কতা
-
মাছ ভালোভাবে পরিষ্কার করে রান্না করুন
-
পারদের পরিমাণ বেশি এমন মাছ শিশুকে খাওয়াবেন না, এতে স্নায়ুতন্ত্রে প্রভাব পড়তে পারে
-
টিনজাত বা প্রসেসড মাছ শিশুকে না দেওয়াই ভালো, এতে থাকে অতিরিক্ত প্রিজারভেটিভ
-
সামুদ্রিক মাছ বা চিংড়িতে অ্যালার্জি হতে পারে, সতর্ক থাকুন
পরামর্শ
গবেষকেরা পরামর্শ দেন, শিশুকে সপ্তাহে অন্তত দুই দিন সামুদ্রিক মাছ খাওয়ানো উচিত। সপ্তাহে একবার খাওয়ালেও ২৫০ থেকে ৫০০ মিলিগ্রাম পর্যন্ত ওমেগা–থ্রির চাহিদা পূরণ করা সম্ভব।