ইসলামী ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ওবায়েদ উল্লাহ মাসুদ কারাগারে
অগ্রণী ব্যাংক থেকে ১৮৯ কোটি টাকার ঋণ কেলেঙ্কারি মামলায় ইসলামী ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
দুদকের আবেদনে ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ সাব্বির ফয়েজ বুধবার এ আদেশ দেন।
বুধবার সকালে ধানমন্ডির বাসা থেকে পুলিশের সহায়তায় ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদকে গ্রেপ্তার করে দুদক।
বিকালে তাকে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপসহকারী পরিচালক মোহাম্মদ শাহ জালাল।
আসামির পক্ষে জামিনের কোনে আবেদন ছিল না। আদালত শুনানি শেষে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয় বলে দুদক প্রসিকিউটর খন্দকার মশিউর রহমান জানান।
দায়িত্ব গ্রহণের ১১ মাসের মাথায় ২০২৫ সালের ১৬ জুলাই ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করেন ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ। তার আগে তিনি রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সোনালী ব্যাংক ও রূপালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন। তারও আগে ছিলেন অগ্রণী ব্যাংকের ঢাকা সার্কেল–২ এর মহাব্যবস্থাপক।
সম্প্রতি বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) তার দায়িত্বকালীন একাধিক অনিয়ম ও আর্থিক অসঙ্গতির অভিযোগ নিয়ে একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন দুদকে পাঠায় এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করে।
এরপর গত ২৮ সেপ্টেম্বর অগ্রণী ব্যাংকের সাবেক এমডি সৈয়দ আব্দুল হামিদ এবং ওবায়েদ উল্লাহসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। অগ্রণী ব্যাংকের চট্টগ্রামের আছাদগঞ্জ শাখা থেকে নিয়ম ভেঙে ঋণ নেওয়ার মাধ্যমে ১৮৯ কোটি ৮০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয় সেখানে।
মামলার অপর আসামিরা হলেন- অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড আছাদগঞ্জ শাখার সাবেক প্রিন্সিপাল অফিসার ও মহাব্যবস্থাপক মোস্তাক আহমেদ, সাবেক উপমহাব্যবস্থাপক মো. আবুল হোসেন তালুকদার, সাবেক মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ শামস উল ইসলাম, সাবেক উপমহাব্যবস্থাপক তাজরীনা ফেরদৌসী ও সাবেক মহাব্যবস্থাপক মো. মোফাজ্জল হোসেন।
এছাড়া চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জভিত্তিক ভোগ্যপণ্য আমদানি, মোড়কজাত ও বিপণন ব্যবসায় যুক্ত নুরজাহান গ্রুপের চার পরিচালককে মামলায় আসামি করা হয়েছে। তারা হলেন– মেসার্স মিজান ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী মো. মিজানুর রহমান, জাসমীর ভেজিটেবল ওয়েল লিমিটেডের এমডি জহির আহমেদ, ওই কোম্পানির পরিচালক টিপু সুলতান ও ফরহাদ মনোয়ারকেও আসামি করা হয়েছে।
মামলার বিবরণে বলা হয়, মেসার্স মিজান ট্রেডার্সের নামে ছোলা ও গম আমদানির জন্য ঋণ মঞ্জুর করা হলেও ‘প্রকৃত সুবিধাভোগী’ ছিল নুরজাহান গ্রুপ ও তাদের সহযোগী প্রতিষ্ঠান জাসমীর ভেজিটেবল ওয়েল লিমিটেড।
বেতনভোগী কর্মকর্তা মিজানুর রহমানকে ব্যবহার করে তারা ‘প্রতারণার মাধ্যমে’ ঋণ অনুমোদন ও উত্তোলন করেন। নুরজাহান গ্রুপের একটি বেনামি প্রতিষ্ঠানের নামে হিসাব খোলা থেকে শুরু করে হিসাব পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয় জাসমীর ভেজিটেবল অয়েলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জহির আহমেদকে।
নতুন এই কোম্পানিকে বিপুল অঙ্কের ঋণ মঞ্জুর এবং পরে ঋণ মঞ্জুরিপত্রের শর্ত যথাযথভাবে পরিপালন নিশ্চিত না করে ‘সু-পরিকল্পিতভাবে’ ব্যাংকের ৫১ কোটি টাকা (বর্তমানে সুদে-আসলে ১৮৯ কোটি ৮০ লাখ টাকা) আত্মসাৎ করা হয় বলে অভিযোগ করা হয়েছে মামলায়।