সোমবার ১৬ জুন ২০২৫, আষাঢ় ২ ১৪৩২, ১৯ জ্বিলহজ্জ ১৪৪৬

ব্রেকিং

লন্ডনে ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও তারেক রহমানের বৈঠক ১৩ জুন তারেক রহমান শিগগিরই দেশে ফিরবেন: ফখরুল রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হবে কাঁচের মতো স্বচ্ছ ঘর: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নির্বাচনের ঘোষিত সময় মাথায় রেখে যথাসময়ে রোডম্যাপ দেবে ইসি: উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুললেন ছাত্রদল নেতা নাছির উদ্দিন মণিপুরে আবার উত্তেজনা, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের চাপে ঢাকার ৪ থানায় সক্রিয় অর্ধশতাধিক অপরাধী দল জাতীয় নির্বাচন ২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধে: প্রধান উপদেষ্টা প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণায় জাতির প্রত্যাশা পূরণ হয়নি: সালাহউদ্দিন আহমদ জুলাই সনদ–ঘোষণাপত্র হলে ঘোষিত সময়ে নির্বাচনে আপত্তি নেই: এনসিপি ২৫ কিলোমিটার যানজট, ২৪ ঘণ্টায় পারাপার ৬৪ হাজার যানবাহন বান্দরবানের রুমা ও থানচি ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আংশিকভাবে প্রত্যাহার গাজায় যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্রের ভেটো, জাতিসংঘ নিরাপত্তা গরম মসলার বাজার শীতল: ক্রেতা কমে যাচ্ছে, দাম কিছুটা স্থিতিশীল ঈদে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে দই-মিষ্টি মজুত, রংপুরে হিমাগারে অভিযান ও দুই লাখ টাকা জরিমানা বান্দরবানের লামায় পাহাড় ধসের শঙ্কায় ৬০ রিসোর্ট বন্ধ নির্বাচন নিয়ে তরুণদের প্রতি অসত্য অভিযোগ ও বাস্তবতা ভারতের মুসলমানদের কেন বারবার দেশপ্রেমের প্রমাণ দিতে হয় সংবিধান পরিবর্তন ছাড়া ফ্যাসিবাদ বিলোপ সম্ভব নয়: এনসিপি মুখ্য সমন্বয়ক একুশের বন্ধুত্বে আগামীর পথচলা: বার্ষিক সম্মেলনে ২১তম বিসিএস প্রশাসন ফোরাম বিজিএমইএ`র নতুন নেতৃত্বে আসছেন বাবু, নিরঙ্কুশ জয়ের ইঙ্গিত জিলহজ মাসের আমল ও কোরবানির তাৎপর্য চট্টগ্রামে নারীকে লাথির ঘটনায় ভাইরাল আকাশ চৌধুরী বহিষ্কৃত, জামায়াতের বিবৃতি সংকট নিরসনে উদ্যোগ নেই, আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিল পবিস শ্রমিকরা আনচেলত্তির স্বপ্ন - রিয়াল মাদ্রিদের মতো করে খেলাবেন ব্রাজিলকে ডিমের দাম এখনো চড়া, ডজন ১৩০–১৪০ টাকায় বিক্রি বৈরী আবহাওয়ার কারণে নোয়াখালীর হাতিয়া দ্বীপের সঙ্গে সারাদেশের নৌ-যোগাযোগ বন্ধ হারের পর লিটনের মনোভাব - এখনো দুই ম্যাচ বাকি কাল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য দেশের সব জুয়েলারি দোকান বন্ধ ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্র চীনা শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু করবে ডিএনএ টেস্ট করে নামফলক ও মর্যাদা চায় শহীদ পরিবারের সদস্যরা বেতন না পেয়ে ডাকাতি, জাহাজের চিফ ইঞ্জিনিয়ারসহ তিনজন আটক “বাংলাদেশে কৌশলগত স্বার্থ নেই দক্ষিণ কোরিয়ার”—রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং সিক “শাপলার হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই”—হেফাজতের বিবৃতি মির্জা আব্বাস: “করিডর আর স্টারলিংক আনা হচ্ছে আরাকান আর্মির জন্য” জিলহজ মাসের চাঁদ দেখে যে দোয়া পড়বেন নির্বাচনের আগে যতটুকু দরকার, ততটুকুই সংস্কার করতে হবে: মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ‘চিন্তার স্বাধীনতাও হারাচ্ছি?’— নারী কমিশন বিতর্কে গীতিআরার উদ্বেগ ইউক্রেনে রাশিয়ার টানা হামলায় নিহত ১২, কঠোর চাপের আহ্বান জানালেন জেলেনস্কি সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন – তিনটি কঠিন দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট আমরা জুলাই অভ্যুত্থান ক্ষমতার পালাবদল নয়, এটি মৌলিক সংস্কার: নাহিদ হলুদ সাংবাদিকতা’ বিরোধী স্লোগানে উত্তাল শিক্ষক মিছিল ভারতের নিষেধাজ্ঞায় আখাউড়া বন্দর দিয়ে রপ্তানি কমেছে ৪০% বিএনপির অবস্থান কর্মসূচি চলছে, দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি জাতীয় স্বার্থে অভিমান ভুলে দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান : জামায়াত আমির আন্দোলনের পর অবশেষে নিয়োগ পেলেন ৪৩তম বিসিএসের বাদ পড়া ১৬২ জন নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের দাবিতে ইসির সামনে এনসিপির বিক্ষোভ কাল বাংলাদেশে স্টারলিংকের যাত্রা, স্যাটেলাইট ইন্টারনেটের নতুন যুগ শুরু নরওয়ের দৃঢ় সমর্থন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি বিগত সরকারের সময় প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংসপ্রাপ্ত, এমন অবস্থা ছিল যে খতিবকেও পালাতে হয়েছিল: বাণিজ্য উপদেষ্টা গায়ের জোরে নগর ভবন দখল করে আন্দোলন চালাচ্ছে বিএনপি আবারও রাজপথে নামার ইঙ্গিত আসিফের, সতর্ক করলেন হাসনাত গোপন অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে আন্দোলন স্থগিত, ২০ মে আলোচনায় বসবে ঐক্য পরিষদ ভারতের আমদানি নিষেধাজ্ঞা সীমান্ত বাণিজ্যে অনিশ্চয়তা তৈরি করছে ভারতের নতুন সিদ্ধান্তে উত্তর-পূর্বাঞ্চল দিয়ে বাংলাদেশি ভোগ্যপণ্য আমদানি বন্ধ গত ৯ মাসে জুলাই-যোদ্ধাদের ওপর ৩৮টি হামলা জবি’র ৪ দফা দাবি মেনে নেওয়ায় আন্দোলনের সমাপ্তি ঘোষণা ডিবি থেকে মুক্তির পর আন্দোলনে উল্লাস জবি শিক্ষার্থীর গাজা দখলে নেওয়ার আকাঙ্ক্ষা পুনর্ব্যক্ত করলেন ট্রাম্প শাহরিয়ার হত্যাকাণ্ডে বিচার নিশ্চিতের অঙ্গীকার উপদেষ্টা আসিফের সোনার দাম ভরিতে কমল ৩ হাজার ৪৫২ টাকা, নতুন দর কার্যকর শুক্রবার থেকে ঢাবি শিক্ষার্থীর মৃত্যু: নিরাপত্তা নিশ্চিতে বড় পদক্ষেপ প্রশাসনের আওয়ামী লীগের কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধে ভারতের উদ্বেগ শ্রীনগরজুড়ে বিস্ফোরণ, যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ ওমর আব্দুল্লাহর উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্ত: আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে শাহবাগ অবরোধ ‘চলবে’, শনিবার গণজমায়েত ড্রোন যুদ্ধ: ভারত-পাকিস্তান বিরোধের নতুন অধ্যায় আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে সরকার গুরুত্বসহকারে বিবেচনায় নিচ্ছে: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং আ.লীগ নিষিদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত শাহবাগ ছাড়বেন না আন্দোলনকারীরা ‘আপ বাংলাদেশ’–এর আত্মপ্রকাশ পূর্বঘোষণা ছাড়া ভারত সফরে সৌদি প্রতিমন্ত্রী, পাকিস্তান-ভারত উত্তেজনায় কূটনৈতিক তৎপরতা তুঙ্গে দ্রুত সিদ্ধান্ত না এলে সারা দেশ থেকে ঢাকা অভিমুখে মার্চের হুঁশিয়ারি নাহিদ ইসলামের দেশীয় ওষুধ কোম্পানি রেনাটাকে ৭০০ কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে আইএফসি তারেক রহমান: সরকার হয়তো স্বৈরাচারের দোসরদের দেশত্যাগে সহায়তা করছে জাতীয় নিরাপত্তা ইস্যুতে ভারতের নির্দেশে ৪ বাংলাদেশি টিভি চ্যানেল ইউটিউবে বন্ধ

মহিলা

তাঁদের জননীগণ যেমন ছিলেন

সায়্যিদ আবুল হাসান আলী নদভী রাহ.

 আপডেট: ১০:০১, ১৫ জানুয়ারি ২০২৫

তাঁদের জননীগণ যেমন ছিলেন

হযরত খাজা নিযামুদ্দীন আওলিয়া রাহ.-এর মাতা

হযরত খাজা নিযামুদ্দীনের বয়স পাঁচ বছর হলে তাঁর বাবা ইন্তেকাল করেন। মা সে সময়ের একজন নেককার আল্লাহওয়ালা নারী ছিলেন। এই এতীম বাচ্চার সার্বিক তত্ত্বাবধান, দ্বীনী ও আখলাকী তরবিয়তসহ পিতৃ দায়িত্বের সবটুকুই এ মাকেই কাঁধে তুলে নিতে হয়েছিল।

পাগড়ী গ্রহণের সময় এলে উস্তায পাগড়ী নিয়ে আসতে বললেন। খাজা নিজামুদ্দীন রাহ. মাকে বললেন, মা! উস্তায পাগড়ী নিয়ে যেতে বলেছেন; পাগড়ী কোথায় পাব? মা বললেন, বাবা অস্থির হয়ো না, আমি ব্যবস্থা করছি। অনেক কষ্টে মা পাগড়ীর ব্যবস্থা করে দিলেন। পাগড়ী গ্রহণের এই বরকতপূর্ণ অনুষ্ঠানে তাঁর মা সময়ের বড় বড় আলেম ও বুযুর্গদের দাওয়াত করেছিলেন।

খাজা নিযামুদ্দীন বলেন, মায়ের একটি অভ্যাস ছিল, যেদিন খাবারের কোনো ব্যবস্থা থাকত না, সেদিন বলতেন, আমরা সকলেই আজ আল্লাহর মেহমান। ‘আল্লাহর মেহমান’ হওয়ার এই বোলটি আমার কাছে বেশ আনন্দের বিষয় ছিল। (কারণ আল্লাহর মেহমানকে তো আল্লাহ তাঁর শান অনুযায়ীই মেহমানদারী করাবেন।)

একদিন আল্লাহর এক বান্দা বাড়িতে এক ঝুড়ি খাদ্যশস্য দিয়ে গেল। তা দিয়ে বেশ কয়েকদিন চলল। কিন্তু এই খাদ্য শেষ হতে দেরি হওয়ায় আমার মাঝে অস্থিরতা সৃষ্টি হল। কেননা এই খাবারগুলোর কারণেই মায়ের মুখ থেকে ‘আল্লাহর মেহমান’ হওয়ার সেই মজার বাক্যটি শুনতে পারছি না।

একসময় তা শেষ হল। এবার মা জানিয়ে দিলেন, আজ আমরা আল্লাহর মেহমান। একথা শুনে আমি যারপরনাই আনন্দিত হলাম।

একদিন হযরত খাজা তার মায়ের মৃত্যুর আলোচনা শুরু করলেন। একপর্যায়ে এমন কান্না শুরু করলেন যে, তাঁর কথাগুলো বোঝা যাচ্ছিল না।

খাজা রাহ. একদা নতুন চাঁদ দেখে অভ্যাসানুযায়ী মায়ের কাছে এসে নতুন চাঁদের মোবারকবাদ জানালেন। মা তখন বললেন, আগামি মাসের চাঁদ দেখে কাকে মোবরকবাদ জানাবে? তাঁর আর বুঝতে বাকী রইল না- মায়ের বিদায়ের সময় ঘনিয়ে এসেছে। তিনি কাঁদতে শুরু করলেন আর তাঁর অন্তর ভারী হয়ে এল। বললেন, মা! আপনি এই অসহায়কে কার কাছে রেখে যাচ্ছেন? মা জবাব দিলেন, কাল বলল।

আমি মনে মনে বললাম, কী ব্যাপার! আজ জবাব দিচ্ছেন না কেন? সাথে এও বললেন, যাও আজ শায়েখ নযীবুদ্দীনের কাছে থাক। কথামত আমি তাঁর কাছে গেলাম।

শেষ রাতে সুবহে সাদিকের কিছু পূর্বে মায়ের খাদিমা দৌড়ে এসে বলল, বেগম ছাহেবা (খাজা ছাহেবের মা) তোমাকে ডাকছেন। আমি গেলাম। জিজ্ঞাসা করলাম, কেমন আছেন? জবাবে বললেন হাঁ, ভালো আছি। তারপর বললেন, কাল তুমি আমাকে জিজ্ঞাসা করেছিলে, কার কাছে তোমাকে রেখে যাচ্ছি, আমি তোমাকে আজকে জবাব দেয়ার অঙ্গিকার করেছিলাম। শোনো, আমি এখন সেই প্রশ্নের জবাব দিচ্ছি। তোমার ডান হাত বের করো। আমি হাত বের করে দিলাম। আমার ডান হাতকে তিনি তার ডান হাতে নিয়ে বললেন, হে আল্লাহ! আমার এই কলিজার টুকরাকে তোমার কাছে সোপর্দ করছি। একথা বলেই তিনি ইন্তিকাল করলেন।

এ কথায় আমি এমন খুশি হয়েছি যে, আমার মমতাময়ী মা যদি আমার জন্য ঘরভর্তি স্বর্ণ ও মনি-মুক্তা রেখে যেতেন তাহলেও আমি এত খুশি হতাম না। (কারণ আল্লাহ যার অভিভাবক হয়ে যাবেন, তার আর চিন্তা কী?)

হযরতসায়্যিদ আহমদ শহীদ রায়বেরেলী রাহ.-এর মাতা

এমন মায়ের সংখ্যা খুব বেশি হবে না, যিনি সন্তানের জানের পরীক্ষায় অবতীর্ণ হয়ে সফল হয়েছেন। হযরতের মাতা তাকে মৃত্যুর হাতে সোর্পদ করেছিলেন; যার নমুনা হযরত আসমা বিনতে আবু বকর রা.।

একদা সায়্যিদ আহমাদ এক যুদ্ধের ময়দানে যাওয়ার ইচ্ছা পোষণ করলেন। দাইমা যেতে দিচ্ছিলেন না। মা নামাযে ছিলেন, সায়্যিদ সাহেব অপেক্ষায় ছিলেন- মা নামায শেষ করলে তারপর অনুমতি নেবেন। সালাম ফিরিয়ে তাঁর মা  দাইমাকে বললেন, আহমাদের সাথে আপনার মহব্বতের সম্পর্ক অবশ্যই আছে তবে তা আমার মত নয়। এখন বাধা দেয়ার সময় নয়। যাও, আল্লাহর নাম নিয়ে বের হয়ে পড়। জিহাদের ময়দান থেকে পিঠ ফেরাবে না। অন্যথায় তোমার চেহারাও দেখাবে না আমাকে।

হযরত মাওলানা ফজলুর রহমান গঞ্জ মুরাদাবাদী রাহ.-এর মাতা

তাঁর মাতা একজন বড় দুনিয়াবিরাগী ও তাওয়াক্কুলের অধিকারী বুযুর্গ ছিলেন। তিনি বলেন, আমার এগার-বার বসর বয়সে আমার বাবা ইন্তেকাল করেন। মা’র নিকট জমানো কিছু পয়সা ছিল, ধীরে ধীরে তাও শেষ হয়ে গেল। তারপর এল চরম অভাবের দিন। এ সময় আমার মা সর্বদা দরজা বন্ধ রাখতেন। আর বাড়িতে থাকা শাক-লতাপাতা সেদ্ধ করে খেয়ে নিতেন। আর এই দুরবস্থার কথা কাউকেই বুঝতে দিতেন না। অথচ এমন অসংখ্য মানুষ ছিল, যারা সাহায্য করার জন্য প্রস্তুত ছিলেন; কিন্তু তা তাঁর জন্য গ্রহণ করা সম্ভব ছিল না।

হযরত মাওলানা মুহাম্মাদ ইলিয়াস কান্ধলভী রাহ.-এর মাতা

হযরত মাওলানা ইলিয়াস রাহ. মুজাফফর নগর জেলার বিখ্যাত বংশের সন্তান ছিলেন। যার অবদানেই দাওয়াত ও তাবলীগের বিশ্বব্যাপী মেহনত দ্বারা মানুষ উপকৃত হচ্ছে।

এ বংশকে সেসময় খোদাভীরুতা ও দ্বীনদারির মারকায মনে করা হত। এ খানদানের পুরুষদের পাশাপাশি নারীদের ইবাদত-বান্দেগী, রাত্রি জাগরণ, যিকির ও তিলাওয়াতের বিবরণ সাধারণ মুসলিমদের বিস্মিত না করে পারে না। ঘরের মহিলারা রমযানে একা একা নফল নামাযে কুরআন খতম করা ছাড়াও ঘরের পুরুষদের পিছনে তারাবীহ ও নফলে কুরআন শুনতেন। এটা ঐ পরিবারের ঐতিহ্য ছিল।

রমযান মাস ছিল তাদের কাছে কুরআন তিলাওয়াতের বসন্তকাল। ঘরগুলো আবাদ থাকত কুরআন তিলাওয়াতের গুঞ্জনে।

কুরআন তরজমা, উর্দু তাফসীর, মাজাহেরে হক (মিশকাতের উর্দু ভাষ্যগ্রন্থ) মাশারিকুল আনওয়ার, হিসনে হাসীন- এই পুস্তকগুলো নারীদের পারিবারিক সিলেবাস ছিল। যার পাঠন-পঠনের ব্যাপক প্রচলন ছিল।

তাদের ঘরের ভিতর ও বাহিরের মজলিসগুলাতে সায়্যিদ আহমদ শহীদ ও শাহ আবদুল আযীয রাহ.-এর আলোচনা খুব বেশি হত। তাদের জীবনের কীর্তি ও অবদানগুলো পরিবারের নারী-পুরুষদের মুখে মুখে চর্চা হত। মেয়েরা মায়েরা বাচ্চাদেরকে তোতা-ময়নার গল্পের পরিবর্তে এই বুযুর্গদের ঘটনা শোনাতেন।

একদিন মাওলানা ইলিয়াস রাহ. পরিবারের মাদের এসকল ঘটনা ও বিবিরণ শোনানোর পর বললেন, এঁদের কোলে কাঁখেই আমরা প্রতিপালিত হয়েছি। এখন আর এমন কোল দুনিয়াতে কোথায় পাবে!

মাওলানার নানী বিবি আমাতুর রহমান মাওলানা মুযাফ্ফর হুসাইন রাহ.-এর কন্যা ছিলেন; যাকে এ বংশে সকলে উম্মি-বি নামে চেনে। তিনি এ কালের রাবেয়া বসরীয়া ছিলেন। জীবনসন্ধ্যায় ইবাদত-বন্দেগীর কারণে খাবারের চাহিদাও কমে গিয়েছিল। ঘরের লোকজন যদি তাঁর কাছে খাবার নিয়ে যেত, তাহলে খেতেন নতুবা খেতেন না। কর্মব্যস্তার কারণে যদি ঘরের লোকজন ভুলে যেত, সেদিন অনাহারেই দিন কেটে যেত।  কেউ বিস্মিত হয়ে জিজ্ঞেস করল, আপনি এভাবে ক্ষুধা নিয়ে কীভাবে থাকেন? জবাব দিলেন, আল্লাহর যিকিরের মাধ্যমে আলহামদু লিল্লাহ খাবারের ব্যবস্থা হয়।

ইলিয়াস রাহ.-এর মাতা একজন বড় হাফেজা ছিলেন। তিনি বিবাহের পর কুরআন হিফ্য করেন। এত মজবুত হাফেজা ছিলেন যে, কোনো সাধারণ হাফেজ তাঁর সামনে তিলাওয়াত করা কঠিন ছিল। রমযানে প্রতিদিন এক খতম দশ পারা পড়ার রুটিন ছিল। এই তিলাওয়াতের কারণে সাংসারিক কাজে মোটেও ব্যত্যয় ঘটত না। মুখে তিলাওয়াত আর হাতে কাজ- এভাবে তিলাওয়াত জারী থাকত তাঁর।

এমন মায়ের গর্ভেই জন্ম নিয়েছেন মাওলানা ইলিয়াস রাহ.-এর মত দ্বীনের মহান দায়ীগণ।

আল্লামা ইকবাল রাহ., যার কবিতা ঈমানী চেতনায় দীপ্ত। যিনি তার কবিতার মাধ্যমে উম্মতে মুসলিমাকে নবচেতনায় উদ্দীপ্ত করেছেন। তিনি বলতেন, আমার মধ্যে আল্লাহ-রাসূল এবং দ্বীন ইসলামের প্রতি যে বিশ্বাস ও ভালবাসার স্ফুলিঙ্গ দেখতে পাও তা লাভ করেছি মায়ের কোল থেকে, তাঁর তরবিয়তে। এজন্যই উম্মতের প্রয়োজন ঈমানী চেতনায় দীপ্ত মায়ের কোল। যাদের গর্ভে জন্ম নেবে রত্ন-মানিক। উম্মতের রাহবার।

[ইসলাম মে আওরাত কা দারজাহ আওর উসকে হুকূক ওয়া ফারায়েয (পৃ. ২৪৬-২৫০) কিতাব থেকে]

ভাষান্তর : মাওলানা আব্দুল মজিদ

আলকাউসার