বৃহস্পতিবার ০৩ জুলাই ২০২৫, আষাঢ় ১৯ ১৪৩২, ০৭ মুহররম ১৪৪৭

ব্রেকিং

সংখ্যানুপাতিক ব্যবস্থায়(পিআর) ‘ভবিষ্যৎ বিভক্তি’র শঙ্কা তারেক রহমানের জুলাই বিপ্লব নিয়ে কটূক্তি করায় কুষ্টিয়ায় ট্রাফিক পুলিশ সদস্য ক্লোজড কলেজ প্যাডে ছাত্রদলের প্রচারণা? অধ্যক্ষের ব্যাখ্যা ঘিরে বিতর্ক মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েলের সংঘাত বিস্তার: বিশ্লেষণ কলম্বিয়ায় পাহাড়ধসে মৃত্যু ১৬, নিখোঁজ অন্তত ৮ “ত্রাণ নিতে এলে গুলি করতাম”—গাজার ঘটনায় মুখ খুললেন ইসরায়েলি সেনারা তেহরানে ধ্বংসস্তূপে উদ্ধার চলছেই, মৃতের সংখ্যা ছাড়াল ৪৫০ ইরানে বাংলাদেশিদের সহায়তায় হটলাইন চালু উপদেষ্টার গাড়িবহর আটকে বিক্ষোভ: সিলেটে তিনজন কারাগারে ইসরায়েলের টার্গেটে ইরানের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার ভবন লন্ডনে ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও তারেক রহমানের বৈঠক ১৩ জুন তারেক রহমান শিগগিরই দেশে ফিরবেন: ফখরুল রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হবে কাঁচের মতো স্বচ্ছ ঘর: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নির্বাচনের ঘোষিত সময় মাথায় রেখে যথাসময়ে রোডম্যাপ দেবে ইসি: উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুললেন ছাত্রদল নেতা নাছির উদ্দিন মণিপুরে আবার উত্তেজনা, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের চাপে ঢাকার ৪ থানায় সক্রিয় অর্ধশতাধিক অপরাধী দল জাতীয় নির্বাচন ২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধে: প্রধান উপদেষ্টা প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণায় জাতির প্রত্যাশা পূরণ হয়নি: সালাহউদ্দিন আহমদ জুলাই সনদ–ঘোষণাপত্র হলে ঘোষিত সময়ে নির্বাচনে আপত্তি নেই: এনসিপি ২৫ কিলোমিটার যানজট, ২৪ ঘণ্টায় পারাপার ৬৪ হাজার যানবাহন বান্দরবানের রুমা ও থানচি ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আংশিকভাবে প্রত্যাহার গাজায় যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্রের ভেটো, জাতিসংঘ নিরাপত্তা গরম মসলার বাজার শীতল: ক্রেতা কমে যাচ্ছে, দাম কিছুটা স্থিতিশীল ঈদে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে দই-মিষ্টি মজুত, রংপুরে হিমাগারে অভিযান ও দুই লাখ টাকা জরিমানা বান্দরবানের লামায় পাহাড় ধসের শঙ্কায় ৬০ রিসোর্ট বন্ধ নির্বাচন নিয়ে তরুণদের প্রতি অসত্য অভিযোগ ও বাস্তবতা ভারতের মুসলমানদের কেন বারবার দেশপ্রেমের প্রমাণ দিতে হয় সংবিধান পরিবর্তন ছাড়া ফ্যাসিবাদ বিলোপ সম্ভব নয়: এনসিপি মুখ্য সমন্বয়ক একুশের বন্ধুত্বে আগামীর পথচলা: বার্ষিক সম্মেলনে ২১তম বিসিএস প্রশাসন ফোরাম বিজিএমইএ`র নতুন নেতৃত্বে আসছেন বাবু, নিরঙ্কুশ জয়ের ইঙ্গিত জিলহজ মাসের আমল ও কোরবানির তাৎপর্য চট্টগ্রামে নারীকে লাথির ঘটনায় ভাইরাল আকাশ চৌধুরী বহিষ্কৃত, জামায়াতের বিবৃতি সংকট নিরসনে উদ্যোগ নেই, আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিল পবিস শ্রমিকরা আনচেলত্তির স্বপ্ন - রিয়াল মাদ্রিদের মতো করে খেলাবেন ব্রাজিলকে ডিমের দাম এখনো চড়া, ডজন ১৩০–১৪০ টাকায় বিক্রি বৈরী আবহাওয়ার কারণে নোয়াখালীর হাতিয়া দ্বীপের সঙ্গে সারাদেশের নৌ-যোগাযোগ বন্ধ হারের পর লিটনের মনোভাব - এখনো দুই ম্যাচ বাকি কাল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য দেশের সব জুয়েলারি দোকান বন্ধ ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্র চীনা শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু করবে ডিএনএ টেস্ট করে নামফলক ও মর্যাদা চায় শহীদ পরিবারের সদস্যরা বেতন না পেয়ে ডাকাতি, জাহাজের চিফ ইঞ্জিনিয়ারসহ তিনজন আটক “বাংলাদেশে কৌশলগত স্বার্থ নেই দক্ষিণ কোরিয়ার”—রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং সিক “শাপলার হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই”—হেফাজতের বিবৃতি মির্জা আব্বাস: “করিডর আর স্টারলিংক আনা হচ্ছে আরাকান আর্মির জন্য” জিলহজ মাসের চাঁদ দেখে যে দোয়া পড়বেন নির্বাচনের আগে যতটুকু দরকার, ততটুকুই সংস্কার করতে হবে: মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ‘চিন্তার স্বাধীনতাও হারাচ্ছি?’— নারী কমিশন বিতর্কে গীতিআরার উদ্বেগ ইউক্রেনে রাশিয়ার টানা হামলায় নিহত ১২, কঠোর চাপের আহ্বান জানালেন জেলেনস্কি সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন – তিনটি কঠিন দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট আমরা জুলাই অভ্যুত্থান ক্ষমতার পালাবদল নয়, এটি মৌলিক সংস্কার: নাহিদ হলুদ সাংবাদিকতা’ বিরোধী স্লোগানে উত্তাল শিক্ষক মিছিল ভারতের নিষেধাজ্ঞায় আখাউড়া বন্দর দিয়ে রপ্তানি কমেছে ৪০% বিএনপির অবস্থান কর্মসূচি চলছে, দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি জাতীয় স্বার্থে অভিমান ভুলে দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান : জামায়াত আমির আন্দোলনের পর অবশেষে নিয়োগ পেলেন ৪৩তম বিসিএসের বাদ পড়া ১৬২ জন নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের দাবিতে ইসির সামনে এনসিপির বিক্ষোভ কাল বাংলাদেশে স্টারলিংকের যাত্রা, স্যাটেলাইট ইন্টারনেটের নতুন যুগ শুরু নরওয়ের দৃঢ় সমর্থন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি বিগত সরকারের সময় প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংসপ্রাপ্ত, এমন অবস্থা ছিল যে খতিবকেও পালাতে হয়েছিল: বাণিজ্য উপদেষ্টা গায়ের জোরে নগর ভবন দখল করে আন্দোলন চালাচ্ছে বিএনপি আবারও রাজপথে নামার ইঙ্গিত আসিফের, সতর্ক করলেন হাসনাত গোপন অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে আন্দোলন স্থগিত, ২০ মে আলোচনায় বসবে ঐক্য পরিষদ ভারতের আমদানি নিষেধাজ্ঞা সীমান্ত বাণিজ্যে অনিশ্চয়তা তৈরি করছে ভারতের নতুন সিদ্ধান্তে উত্তর-পূর্বাঞ্চল দিয়ে বাংলাদেশি ভোগ্যপণ্য আমদানি বন্ধ গত ৯ মাসে জুলাই-যোদ্ধাদের ওপর ৩৮টি হামলা জবি’র ৪ দফা দাবি মেনে নেওয়ায় আন্দোলনের সমাপ্তি ঘোষণা ডিবি থেকে মুক্তির পর আন্দোলনে উল্লাস জবি শিক্ষার্থীর গাজা দখলে নেওয়ার আকাঙ্ক্ষা পুনর্ব্যক্ত করলেন ট্রাম্প শাহরিয়ার হত্যাকাণ্ডে বিচার নিশ্চিতের অঙ্গীকার উপদেষ্টা আসিফের সোনার দাম ভরিতে কমল ৩ হাজার ৪৫২ টাকা, নতুন দর কার্যকর শুক্রবার থেকে ঢাবি শিক্ষার্থীর মৃত্যু: নিরাপত্তা নিশ্চিতে বড় পদক্ষেপ প্রশাসনের আওয়ামী লীগের কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধে ভারতের উদ্বেগ শ্রীনগরজুড়ে বিস্ফোরণ, যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ ওমর আব্দুল্লাহর উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্ত: আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে শাহবাগ অবরোধ ‘চলবে’, শনিবার গণজমায়েত ড্রোন যুদ্ধ: ভারত-পাকিস্তান বিরোধের নতুন অধ্যায় আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে সরকার গুরুত্বসহকারে বিবেচনায় নিচ্ছে: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং আ.লীগ নিষিদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত শাহবাগ ছাড়বেন না আন্দোলনকারীরা ‘আপ বাংলাদেশ’–এর আত্মপ্রকাশ পূর্বঘোষণা ছাড়া ভারত সফরে সৌদি প্রতিমন্ত্রী, পাকিস্তান-ভারত উত্তেজনায় কূটনৈতিক তৎপরতা তুঙ্গে দ্রুত সিদ্ধান্ত না এলে সারা দেশ থেকে ঢাকা অভিমুখে মার্চের হুঁশিয়ারি নাহিদ ইসলামের দেশীয় ওষুধ কোম্পানি রেনাটাকে ৭০০ কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে আইএফসি তারেক রহমান: সরকার হয়তো স্বৈরাচারের দোসরদের দেশত্যাগে সহায়তা করছে জাতীয় নিরাপত্তা ইস্যুতে ভারতের নির্দেশে ৪ বাংলাদেশি টিভি চ্যানেল ইউটিউবে বন্ধ

ইসলাম

ছোট্ট সা‘দের কুরবানী ঈদ

 প্রকাশিত: ২২:০৫, ৫ জুলাই ২০২০

ছোট্ট সা‘দের কুরবানী ঈদ

আব্বুর সাথে ফজরের নামায পড়ে ঘরে ঢুকল সা‘দ। জানালা দিয়ে বাইরে তাকাল। ক’দিন হল জামগাছটাতে এক জোড়া শালিক বাসা বেঁধেছে। ডিম পেড়েছে। সেখান থেকে এখন চিঁচিঁ আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। দুটো বাচ্চা ফুটেছে! কী মজা!

দৌড়ে গেল দাদুর কাছে। দাদু কুরআন তিলাওয়াত করছিলেন। গলা জড়িয়ে ধরে আহ্লাদী কণ্ঠে সা‘দ বলল, দাদু জানো, ঐ জামগাছটাতে না শালিকের বাসা আছে। ছোট্ট দুটো বাচ্চা ফুটেছে ডিম থেকে। কী সুন্দর!

আচ্ছা দাদু! কুরবানীর ঈদ কবে? আমি না স্বপ্নে দেখেছি, আজ কুরবানীর ঈদ! বলুন না দাদু, ঈদ কবে? দাদু বললেন, এই তো দাদু ভাই। সবে তো জিলকদের বিশ দিন গেল। আরো দশ দিন পর আসবে যিলহজ্ব মাস। যিলহজ্ব মাসে ঈদ হবে। উফ! কবে আসবে যিলহজ্ব মাস! তার যে আর তর সইছে না।

নাশতা খেয়ে সা‘দ মাদরাসায় গেল। শুরু হয়ে গেল তার প্রতীক্ষার প্রহর। প্রতিদিন সে দিন গুণতে থাকে। ত্রিশ যিলকদে তার খুশীর শেষ নেই। আজ যিলহজে¦র চাঁদ উঠবে, কাল ঈদ হবে, কী মজা! কী মজা!

সন্ধ্যায় আব্বুর সাথে ছাদে গিয়ে চাঁদ দেখল সে। চাঁদ দেখে এসে তার কী আনন্দ! কাল ঈদ, কাল ঈদ বলে লাফালাফি শুরু করে দিল। তার কথা শুনে তো আপু আর ভাইয়া হাসতে লাগলেন। আব্বু-আম্মুও মিটমিট হাসছেন। সবার হাসি দেখে সে যেন বোকা হয়ে গেল। কী এমন বলল সে, যার জন্য সবাইকে হাসতে হবে! কেন হাসছ তোমরা? বলে কান্না জুড়ে দিল সে।

দাদুমণি আদর করে সা‘দকে কোলে টেনে নিলেন। চিবুকটা ধরে চোখের পানি মুছে দিয়ে বললেন, দাদুভাই! যিলহজে¦র ১০ তারিখে কুরবানীর ঈদ হয়। কাল তো এক তারিখ। আর নয় দিন পরে ঈদ হবে। শুনে সা‘দের যেন আরো কান্না পেল। তার এতদিনের প্রতীক্ষা...!

কী আর করা, যা বাস্তব তা তো মেনে নিতেই হবে। কষ্ট করে না হয় আরো কটা দিন অপেক্ষা করবে। দিন তো নয়, যেন একেকটি বছর। একেকটা দিন পার হয় আর সা‘দ গুণতে থাকে এক, দুই, তিন...।

আট তারিখ তাদের মাদরাসা ছুটি হল।

উস্তাদজী বললেন, নয় যিলহজ্ব ফজর থেকে তের যিলহজ্ব আসর পর্যন্ত প্রত্যেক ফরজ নামাযের সালাম ফিরিয়েই সবাইকে একবার করে তাকবীরে তাশরীক পড়তে হবে। তাকবীরে তাশরীক হল-

اللهُ أَكْبَرُ اللهُ أَكْبَرُ، لَا إِلهَ إِلَّا اللهُ، وَاللهُ أَكْبَرُ اللهُ أَكْبَرُ، وَلِلهِ الْحَمْدُ.

এই দিনগুলোকে ‘আইয়ামুত তাশরীক’ বলে।

বাসায় ফেরার পথে দেখল তার প্রতিবেশীদের অনেকেই কুরবানীর পশু কিনেছে। কেউ কিনেছে গরু, কেউবা খাসী। কামাল চাচারা বড় একটি ষাঁড় কিনেছেন। বাসায় এসে সে আব্বুকে বলল, আব্বু আমাদের গরু কিনতে কবে যাবেন? আব্বু বললেন, ইনশাআল্লাহ আজই হাটে যাব।

বিকেলে সা‘দ কামরায় জানালায় দাঁড়িয়ে শালিকের ছানাদুটো দেখছিল। তখনই আব্বুর ডাক শুনতে পেল, সা‘দ, সা‘দ দেখে যাও। সা‘দ বাইরে যেতেই দেখতে পেল খুব সুন্দর সাদাকালো একটা গরুর রশি হাতে আব্বু আর ভাইয়া দাঁড়িয়ে আছেন। সা‘দ খুশীতে আটখানা। ‘আব্বু! এটা আমাদের কুরাবানীর গরু!’ খুশীভরা গলায় বলল সে। আব্বু বললেন, হাঁ, বাবা, আলহামদু লিল্লাহ আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে এটা কেনার তাওফীক দিয়েছেন। গরুটা খুব সুন্দর। পুরো শরীর সাদা-কালো। কপালের অংশটুকু সাদা। খুব ভালো লাগল সা‘দের। দৌড়ে বাড়ির ভিতরে গিয়ে আম্মু, দাদু, আপুকে নিয়ে আসল। সবাই তো এত সুন্দর গরু দেখে খুব খুশী। আল্লাহর শোকর আদায় করল।

ভাইয়া অনেকগুলো ঘাস আর লতাপাতা নিয়ে আসলেন। সা‘দ আর ভাইয়া মিলে গরুকে সেগুলো খাওয়াল। রাতে আম্মু ভাতের মাড় দিলেন গরুকে খাওয়ানোর জন্য। আব্বু খাইয়ে দাইয়ে গরুটিকে সুন্দরভাবে রাত কাটানোর ব্যবস্থা করে দিলেন। একটা কয়েলও জ্বালিয়ে দিলেন, মশা যেন না ধরে।

আব্বু বললেন, কুরবানীর পশুর যত্ন করলে অনেক সওয়াব পাওয়া যায়। আব্বুর কথা শুনে সা‘দ যেন তার সব ব্যস্ততা ভুলে গেল। তার সারাদিন এখন গরুর যত্ন করে কাটে। কখনো ঘাস খাওয়ায়, কখনো মাড় খাওয়ায়, কখনো পাতা দিয়ে মশা মাছি তাড়ায়।

দশ যিলহজ্ব সকালে ফজরের নামায আদায় করেই সে দৌড়ে গেল গরুর কাছে। আজ গরুটিকে কুরবানী করা হবে- একথা মনে হতেই তার মনটা কেমন যেন হয়ে গেল। এতদিন দশ যিলহজে¦র জন্য যে ব্যাকুল ছিল। আর আজ তার মনে হচ্ছিল, দশ যিলহজ্ব যদি আরো পরে আসত। তাহলে তো আরো কয়েকটা দিন গরুটাকে যত্ন করার সুযোগ পেত। এখন তো আর সুযোগ নেই। আজই গরুটিকে কুরবানী করা হবে। গরুটির প্রতি কেমন মায়া হয়ে গেছে তার।

আব্বু সা‘দকে ডাক দিলেন ঈদের নামাযের প্রস্তুতি নিতে। সা‘দ গোসল করল, নতুন জামা পরল। আব্বু-ভাইয়ার সাথে বের হল ঈদগাহের দিকে। সা‘দ দেখল, সবাই জোরে জোরে তাকবীর বলছে-

اللهُ أَكْبَرُ اللهُ أَكْبَرُ، لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ وَاللهُ أَكْبَرُ اللهُ أَكْبَرُ، وَلِلهِ الْحَمْدُ.

সবার সাথে সাথে সেও তাকবীর বলল। আব্বু ঈদের নামায পড়ালেন, খুতবা দিলেন, কুরবানীর আহকাম সম্পর্কে মানুষকে জানালেন আর বললেন, নামাযের পর আমরা কুরবানী করব। আল্লাহর দেয়া অর্থ দিয়ে আমরা কুরবানীর পশু ক্রয় করেছি। আজ একমাত্র আল্লাহকে খুশী করার জন্যই আমরা কুরবানী করব।

ঈদের নামায শেষে কেউ আর দেরী করল না। কারণ, কুরবানীর পশু জবাই করতে হবে। সা‘দরা এক রাস্তা দিয়ে গিয়েছিল অন্য একটি রাস্তা দিয়ে ঈদগাহ থেকে ফিরল। আব্বু গরুটিকে নিয়ে আসলেন, খোলা জায়গায়। ভাইয়া ছুরি নিয়ে আসলেন।

আব্বু গরুটিকে খুব আদর করলেন। আব্বুরও মনে হয় গরুটির প্রতি খুব মায়া হয়ে গিয়েছে; মনে মনে বলল সা‘দ। আব্বু বললেন, বাবা সা‘দ! তোমার বুঝি গরুটির প্রতি খুব মায়া হয়ে গেছে! আমারও হয়েছে। কিন্তু কুরবানী মানেই প্রিয় জিনিসকে আল্লাহর জন্য বিলিয়ে দেওয়া। এ পশু আল্লাহ আমাদের দান করেছেন। আবার আল্লাহই এটিকে কুরবানী করতে বলেছেন। তাই আমরা এটিকে কুরবানী করব। আল্লাহর দেয়া পশু আল্লাহর হুকুমে, আল্লাহর নামে তাঁর সন্তুষ্টি লাভের জন্য কুরবানী করব। তেমনিভাবে আল্লাহর হুকুমের সামনে আমাদের সব প্রিয় জিনিস বিলিয়ে দিব।

আমরা তো কুরবানী করছি আমাদের প্রিয় এ  সামান্য পশুকে; ইবরাহীম আলাইহিস সালাম তো আল্লাহর হুকুমে নিজ পুত্রকেই কুরবানী করতে প্রস্তুত হয়েছিলেন।

সাদের চাচ্চুরা মিলে গরুটিকে শোয়ালো। আব্বু বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার বলে জবাই করলেন।

বড়রা গরুটিকে নিয়ে ব্যস্ত হলেন। আম্মু গোশত রান্না করতে লাগলেন। তারপর সবাই মিলে গোশত ভাগ করতে বসল। বড় একটি অংশ গরীব-দুঃখীদের জন্য। আশপাশের প্রতিবেশী এবং আত্মীয়দের জন্যও এক ভাগ। আরেক ভাগ রাখা হল নিজেদের জন্য।

দাদু বললেন, আজ সবার খুশির দিন। আজকের খুশি আমরা সবাই ভাগাভাগি করে নিব। গরীব-দুঃখী কেউ বঞ্চিত হবে না এ খুশী থেকে।

আমরা আল্লাহর জন্য কুরবানী করেছি। আল্লাহর নিকট কিন্তু আমাদের এ কুরবানীর গোশত-রক্ত কিছুই পৌঁছবে না। তাঁর কাছে পৌঁছবে শুধু আমাদের নিয়ত ও তাকওয়া। আল্লাহ দেখবেন, কে আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার জন্য কুরবানী করেছে। দেখ দাদু, সারা বছরই তো আমরা গরু জবাই করি, গোশত খাই। গোশত খাওয়ার জন্য সারা বিশ্বের মানুষই গরু জবাই করে। কিন্তু আজকের গরু জবাই ও কুরবানী গোশত খাওয়ার জন্য নয়; বরং আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি হাছিলের জন্য। আল্লাহ দেখবেন আল্লাহর হুকুমের সামনে আমরা আমাদের সম্পদ খরচ করি কি না। এবং তা একমাত্র তাঁর সন্তুষ্টির জন্য ব্যয় করছি, নাকি মানুষের বাহবা পাওয়ার জন্য। এটাই কুরবানীর আসল কথা।

আর আমরা যে কুরবানীর গোশত খাই- এটা হচ্ছে আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে মেহমানদারি। সমাজের ধনী-গরিব সকলেই এ মেহমানদারি গ্রহণ করে। তাই তো আমরা এ গোস্ত একা খাই না; ধনী-গরিব সকলে মিলে খাই।

ভাইয়ার সাথে সা‘দ আশপাশের বিভিন্ন আত্মীয় ও প্রতিবেশীকে গোশত দিতে গেল। পাশের বস্তিতেও গেল বেশ কিছু গোশত নিয়ে। বস্তির এক একটি ঘরে গোশত বিলিয়ে সা‘দ খুব খুশী হল আর মনে মনে বলল, প্রতিটি দিন যদি কুরবানীর দিনের মত হত!

অনলাইন নিউজ পোর্টাল