সোমবার ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, পৌষ ১৫ ১৪৩২, ০৯ রজব ১৪৪৭

ব্রেকিং

অবশেষে এনসিপিতে আসিফ মাহমুদ, অংশ নেবেন না নির্বাচনে আসন্ন নির্বাচন আয়োজনে ‘আমরা পুরোপুরি প্রস্তুত’ : প্রধান উপদেষ্টা দেশ গড়তে যার যার অবস্থান থেকে সবাইকে উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান তারেকের মাহফুজ ‘নির্বাচন করবেন না’ নানা নাটকীয়তার পর এনসিপিতে আসিফ মাহমুদ! হাদির সেই আসন ঢাকা-৮ এ মনোনয়নপত্র জমা দিলেন নাসীরুদ্দীন হাদির খুনিকে ধরিয়ে দিতে ৫৫ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা শিখ সংগঠনের বগুড়ায় খালেদা জিয়ার মনোনয়নপত্র জমা, ‘বিকল্পও’ আছে ফেব্রুয়ারির নির্বাচনকে একপাক্ষিক আখ্যা দিয়ে বর্জনের ঘোষণা জাসদের ঢাকা-১৫ আসনে জামায়াত আমিরের মনোনয়নপত্র জমা ঢাকা-১৭ আসনে তারেক রহমানের মনোনয়নপত্র জমা সিলেট থেকেই নির্বাচনী কার্যক্রম শুরু করবেন তারেক রহমান খালেদা জিয়ার অসুস্থতায় তিন আসনে বিকল্প প্রার্থী প্রস্তুত বিএনপির এবার নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন এনসিপি নেত্রী ঝুমা ইকুয়েডরের সমুদ্র সৈকতের পাশে বন্দুকধারীর গুলিতে নিহত ৬ মেক্সিকোতে ট্রেন লাইনচ্যুত হয়ে ১৩ জনের প্রাণহানি, আহত ৯৮

ইসলাম

ঐতিহ্য ও নান্দনিকতা চেচনিয়ার ফাখরুল মুসলিমিন মসজিদ

 প্রকাশিত: ১৮:২৪, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫

ঐতিহ্য ও নান্দনিকতা চেচনিয়ার ফাখরুল মুসলিমিন মসজিদ

চেচনিয়ার ‘ফাখরুল মুসলিমিন মসজিদ’ আজ রাশিয়া ও বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের দর্শনার্থীদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। নান্দনিক সৌন্দর্য, আধ্যাত্মিক মাহাত্ম্য ও স্থাপত্যিক বৈশিষ্ট্যের কারণে এটি শুধু রাশিয়ারই নয়, বরং সমগ্র ককেশাস অঞ্চলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক নিদর্শন হিসেবে পরিচিত। 

রাশিয়ান ফেডারেশনের অন্তর্ভুক্ত চেচেন প্রজাতন্ত্রের রাজধানী শালি শহরে অবস্থিত এই মসজিদটি আধুনিক স্থাপত্যশৈলীর সঙ্গে ঐতিহ্যবাহী ইসলামী নান্দনিকতার চমত্কার সমন্বয় ঘটিয়েছে। মধ্য এশীয় ইসলামী স্থাপত্যের চেতনা থেকে অনুপ্রাণিত এর নকশা সমসাময়িক মসজিদ স্থাপত্যের ক্ষেত্রে একটি ব্যতিক্রমী ও অনুসরণযোগ্য মডেল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। মসজিদটির বিশাল ও সুউচ্চ গম্বুজ, সূক্ষ্ম কারুকাজে অলংকৃত মিনার এবং দৃষ্টিনন্দন বাহ্যিক কাঠামো দর্শনার্থীদের চোখে সহজেই দৃষ্টি কেড়ে নেয়। ভেতরের প্রশস্ত ও সুসজ্জিত প্রাঙ্গণ একদিকে যেমন মহান আল্লাহর ইবাদতে মনোনিবেশের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করে, অন্যদিকে তেমনি আগত মুসল্লি ও দর্শনার্থীদের মনে প্রশান্তি ও প্রশস্ততার এক গভীর অনুভূতি জাগিয়ে তোলে।একজন খ্যাতনামা উজবেক স্থপতির নকশায় নির্মিত ফাখরুল মুসলিমিন মসজিদটির সামগ্রিক অবয়ব গভীরভাবে মধ্য এশিয়ার ইসলামী স্থাপত্যধারাকে প্রতিফলিত করে। এর নকশা অনুপ্রাণিত হয়েছে সমরকন্দ ও বুখারার মতো প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী নগরীর স্থাপত্যশৈলী থেকে—যেখানে প্রতিসম বিন্যাস, ধ্রুপদী অলংকরণ এবং রাজকীয় গম্বুজ ইসলামী সভ্যতার গৌরবময় ঐতিহ্যকে বহন করে। একসঙ্গে প্রায় ৩০ হাজার মুসল্লি ধারণক্ষমতা থাকায় এই মসজিদ রাশিয়ার বৃহত্তম মসজিদগুলোর অন্যতম।

বিশেষ করে জুমার নামাজ ও ঈদসহ ধর্মীয় উত্সবের দিনগুলোতে এটি মুসল্লিদের উপস্থিতিতে প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে এবং আধ্যাত্মিকতার এক মহিমান্বিত পরিবেশ সৃষ্টি করে। মসজিদটির অভ্যন্তরভাগ অত্যন্ত প্রশস্ত ও সুপরিকল্পিত। উঁচু সিলিং এবং চারদিক থেকে প্রবেশ করা প্রাকৃতিক আলো এক শান্ত, স্নিগ্ধ ও আরামদায়ক আবহ তৈরি করে, যা মুসল্লিদের গভীর একাগ্রতা ও প্রশান্তির সঙ্গে নামাজ আদায়ে সহায়ক হয়। ভেতরের সজ্জায় ব্যবহূত মনোমুগ্ধকর আরবি ক্যালিগ্রাফি ও সূক্ষ্ম ইসলামিক জ্যামিতিক নকশা স্থাপনাটিকে নান্দনিক সৌন্দর্যের এক অনন্য মাত্রা দিয়েছে। পাশাপাশি, কলাম-মুক্ত বিশাল প্রধান নামাজ কক্ষ শব্দ প্রতিধ্বনিকে আরও স্পষ্ট ও ভারসাম্যপূর্ণ করে তোলে, ফলে জামাতে নামাজ আদায় হয় আরও সুশৃঙ্খল ও হূদয়স্পর্শী। তবে মসজিদটির গুরুত্ব কেবল তার ধর্মীয় ভূমিকার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়; বরং এটি একটি বিস্তৃত সাংস্কৃতিক ও সামাজিক তাত্পর্য বহন করে।

মসজিদ চত্বরের প্রশস্ত উঠোন এবং চারপাশের সুপরিকল্পিত সবুজ প্রাঙ্গণ একসঙ্গে বিপুল সংখ্যক মুসল্লি ও দর্শনার্থীর সমাগমের জন্য উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। বিশেষত ধর্মীয় ছুটির দিন, জুমা ও বিভিন্ন ইসলামী উত্সবের সময় এখানে বড় আকারের অনুষ্ঠান আয়োজন সহজ ও সুশৃঙ্খলভাবে সম্পন্ন করা যায়। এই সুবিন্যস্ত পরিসর ও নান্দনিক পরিবেশ মসজিদটিকে শুধু ইবাদতের স্থান নয়, বরং সাম্প্রদায়িক ঐক্য, ধর্মীয় চেতনা ও সাংস্কৃতিক বিনিময়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। এর মাধ্যমে সমসাময়িক রাশিয়ায় ইসলামের স্থাপত্যিক সৌন্দর্য, ঐতিহ্য ও সাংস্কৃতিক উপস্থিতি সুস্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হয়। সব দিক বিবেচনায় মসজিদ আজ আধুনিক রাশিয়ায় ইসলামের আত্মপরিচয় ও মর্যাদার প্রতীক হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে।