রোববার ১৩ জুলাই ২০২৫, আষাঢ় ২৯ ১৪৩২, ১৭ মুহররম ১৪৪৭

ব্রেকিং

এনবিআর সংস্কার পরিষদের বহু সদস্যের ‘ক্ষমা প্রার্থনা’, মাঠে ফেরার প্রস্তুতি ৭.৭৫ কোটি টাকার স্থাপনা ভেঙে নতুন স্মৃতিস্তম্ভ গড়ার কাজ শুরু ইসরায়েল আমাকে হত্যা করতে চেয়েছিল: ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান সংস্কার ছাড়া যেনতেন নির্বাচন চায় না জামায়াত: শফিকুর রহমান আশরাফুল, সাকিবদের পর এবার নতুনদের চিনছে শ্রীলঙ্কা বিচার ও সংস্কারকে নির্বাচনের মুখোমুখি করা যাবে না: সাকি সংখ্যানুপাতিক ব্যবস্থায়(পিআর) ‘ভবিষ্যৎ বিভক্তি’র শঙ্কা তারেক রহমানের জুলাই বিপ্লব নিয়ে কটূক্তি করায় কুষ্টিয়ায় ট্রাফিক পুলিশ সদস্য ক্লোজড কলেজ প্যাডে ছাত্রদলের প্রচারণা? অধ্যক্ষের ব্যাখ্যা ঘিরে বিতর্ক মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েলের সংঘাত বিস্তার: বিশ্লেষণ কলম্বিয়ায় পাহাড়ধসে মৃত্যু ১৬, নিখোঁজ অন্তত ৮ “ত্রাণ নিতে এলে গুলি করতাম”—গাজার ঘটনায় মুখ খুললেন ইসরায়েলি সেনারা তেহরানে ধ্বংসস্তূপে উদ্ধার চলছেই, মৃতের সংখ্যা ছাড়াল ৪৫০ ইরানে বাংলাদেশিদের সহায়তায় হটলাইন চালু উপদেষ্টার গাড়িবহর আটকে বিক্ষোভ: সিলেটে তিনজন কারাগারে ইসরায়েলের টার্গেটে ইরানের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার ভবন লন্ডনে ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও তারেক রহমানের বৈঠক ১৩ জুন তারেক রহমান শিগগিরই দেশে ফিরবেন: ফখরুল রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হবে কাঁচের মতো স্বচ্ছ ঘর: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নির্বাচনের ঘোষিত সময় মাথায় রেখে যথাসময়ে রোডম্যাপ দেবে ইসি: উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুললেন ছাত্রদল নেতা নাছির উদ্দিন মণিপুরে আবার উত্তেজনা, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের চাপে ঢাকার ৪ থানায় সক্রিয় অর্ধশতাধিক অপরাধী দল জাতীয় নির্বাচন ২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধে: প্রধান উপদেষ্টা প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণায় জাতির প্রত্যাশা পূরণ হয়নি: সালাহউদ্দিন আহমদ জুলাই সনদ–ঘোষণাপত্র হলে ঘোষিত সময়ে নির্বাচনে আপত্তি নেই: এনসিপি ২৫ কিলোমিটার যানজট, ২৪ ঘণ্টায় পারাপার ৬৪ হাজার যানবাহন বান্দরবানের রুমা ও থানচি ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আংশিকভাবে প্রত্যাহার গাজায় যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্রের ভেটো, জাতিসংঘ নিরাপত্তা গরম মসলার বাজার শীতল: ক্রেতা কমে যাচ্ছে, দাম কিছুটা স্থিতিশীল ঈদে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে দই-মিষ্টি মজুত, রংপুরে হিমাগারে অভিযান ও দুই লাখ টাকা জরিমানা বান্দরবানের লামায় পাহাড় ধসের শঙ্কায় ৬০ রিসোর্ট বন্ধ নির্বাচন নিয়ে তরুণদের প্রতি অসত্য অভিযোগ ও বাস্তবতা ভারতের মুসলমানদের কেন বারবার দেশপ্রেমের প্রমাণ দিতে হয় সংবিধান পরিবর্তন ছাড়া ফ্যাসিবাদ বিলোপ সম্ভব নয়: এনসিপি মুখ্য সমন্বয়ক একুশের বন্ধুত্বে আগামীর পথচলা: বার্ষিক সম্মেলনে ২১তম বিসিএস প্রশাসন ফোরাম বিজিএমইএ`র নতুন নেতৃত্বে আসছেন বাবু, নিরঙ্কুশ জয়ের ইঙ্গিত জিলহজ মাসের আমল ও কোরবানির তাৎপর্য চট্টগ্রামে নারীকে লাথির ঘটনায় ভাইরাল আকাশ চৌধুরী বহিষ্কৃত, জামায়াতের বিবৃতি সংকট নিরসনে উদ্যোগ নেই, আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিল পবিস শ্রমিকরা আনচেলত্তির স্বপ্ন - রিয়াল মাদ্রিদের মতো করে খেলাবেন ব্রাজিলকে ডিমের দাম এখনো চড়া, ডজন ১৩০–১৪০ টাকায় বিক্রি বৈরী আবহাওয়ার কারণে নোয়াখালীর হাতিয়া দ্বীপের সঙ্গে সারাদেশের নৌ-যোগাযোগ বন্ধ হারের পর লিটনের মনোভাব - এখনো দুই ম্যাচ বাকি কাল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য দেশের সব জুয়েলারি দোকান বন্ধ ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্র চীনা শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু করবে ডিএনএ টেস্ট করে নামফলক ও মর্যাদা চায় শহীদ পরিবারের সদস্যরা বেতন না পেয়ে ডাকাতি, জাহাজের চিফ ইঞ্জিনিয়ারসহ তিনজন আটক “বাংলাদেশে কৌশলগত স্বার্থ নেই দক্ষিণ কোরিয়ার”—রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং সিক “শাপলার হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই”—হেফাজতের বিবৃতি মির্জা আব্বাস: “করিডর আর স্টারলিংক আনা হচ্ছে আরাকান আর্মির জন্য” জিলহজ মাসের চাঁদ দেখে যে দোয়া পড়বেন নির্বাচনের আগে যতটুকু দরকার, ততটুকুই সংস্কার করতে হবে: মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ‘চিন্তার স্বাধীনতাও হারাচ্ছি?’— নারী কমিশন বিতর্কে গীতিআরার উদ্বেগ ইউক্রেনে রাশিয়ার টানা হামলায় নিহত ১২, কঠোর চাপের আহ্বান জানালেন জেলেনস্কি সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন – তিনটি কঠিন দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট আমরা জুলাই অভ্যুত্থান ক্ষমতার পালাবদল নয়, এটি মৌলিক সংস্কার: নাহিদ হলুদ সাংবাদিকতা’ বিরোধী স্লোগানে উত্তাল শিক্ষক মিছিল ভারতের নিষেধাজ্ঞায় আখাউড়া বন্দর দিয়ে রপ্তানি কমেছে ৪০% বিএনপির অবস্থান কর্মসূচি চলছে, দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি জাতীয় স্বার্থে অভিমান ভুলে দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান : জামায়াত আমির আন্দোলনের পর অবশেষে নিয়োগ পেলেন ৪৩তম বিসিএসের বাদ পড়া ১৬২ জন নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের দাবিতে ইসির সামনে এনসিপির বিক্ষোভ কাল বাংলাদেশে স্টারলিংকের যাত্রা, স্যাটেলাইট ইন্টারনেটের নতুন যুগ শুরু নরওয়ের দৃঢ় সমর্থন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি বিগত সরকারের সময় প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংসপ্রাপ্ত, এমন অবস্থা ছিল যে খতিবকেও পালাতে হয়েছিল: বাণিজ্য উপদেষ্টা গায়ের জোরে নগর ভবন দখল করে আন্দোলন চালাচ্ছে বিএনপি আবারও রাজপথে নামার ইঙ্গিত আসিফের, সতর্ক করলেন হাসনাত গোপন অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে আন্দোলন স্থগিত, ২০ মে আলোচনায় বসবে ঐক্য পরিষদ ভারতের আমদানি নিষেধাজ্ঞা সীমান্ত বাণিজ্যে অনিশ্চয়তা তৈরি করছে ভারতের নতুন সিদ্ধান্তে উত্তর-পূর্বাঞ্চল দিয়ে বাংলাদেশি ভোগ্যপণ্য আমদানি বন্ধ গত ৯ মাসে জুলাই-যোদ্ধাদের ওপর ৩৮টি হামলা জবি’র ৪ দফা দাবি মেনে নেওয়ায় আন্দোলনের সমাপ্তি ঘোষণা ডিবি থেকে মুক্তির পর আন্দোলনে উল্লাস জবি শিক্ষার্থীর গাজা দখলে নেওয়ার আকাঙ্ক্ষা পুনর্ব্যক্ত করলেন ট্রাম্প শাহরিয়ার হত্যাকাণ্ডে বিচার নিশ্চিতের অঙ্গীকার উপদেষ্টা আসিফের সোনার দাম ভরিতে কমল ৩ হাজার ৪৫২ টাকা, নতুন দর কার্যকর শুক্রবার থেকে ঢাবি শিক্ষার্থীর মৃত্যু: নিরাপত্তা নিশ্চিতে বড় পদক্ষেপ প্রশাসনের আওয়ামী লীগের কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধে ভারতের উদ্বেগ শ্রীনগরজুড়ে বিস্ফোরণ, যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ ওমর আব্দুল্লাহর উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্ত: আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে শাহবাগ অবরোধ ‘চলবে’, শনিবার গণজমায়েত ড্রোন যুদ্ধ: ভারত-পাকিস্তান বিরোধের নতুন অধ্যায় আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে সরকার গুরুত্বসহকারে বিবেচনায় নিচ্ছে: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং আ.লীগ নিষিদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত শাহবাগ ছাড়বেন না আন্দোলনকারীরা ‘আপ বাংলাদেশ’–এর আত্মপ্রকাশ পূর্বঘোষণা ছাড়া ভারত সফরে সৌদি প্রতিমন্ত্রী, পাকিস্তান-ভারত উত্তেজনায় কূটনৈতিক তৎপরতা তুঙ্গে দ্রুত সিদ্ধান্ত না এলে সারা দেশ থেকে ঢাকা অভিমুখে মার্চের হুঁশিয়ারি নাহিদ ইসলামের দেশীয় ওষুধ কোম্পানি রেনাটাকে ৭০০ কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে আইএফসি তারেক রহমান: সরকার হয়তো স্বৈরাচারের দোসরদের দেশত্যাগে সহায়তা করছে জাতীয় নিরাপত্তা ইস্যুতে ভারতের নির্দেশে ৪ বাংলাদেশি টিভি চ্যানেল ইউটিউবে বন্ধ

ইসলাম

কুরআনের ভাষায় আখেরাতে অবিশ্বাসীদের স্বীকারোক্তি ও আর্তনাদ

মাওলানা ফযলুদ্দীন মিকদাদ

 প্রকাশিত: ২২:৩১, ১৮ জানুয়ারি ২০২২

কুরআনের ভাষায় আখেরাতে অবিশ্বাসীদের স্বীকারোক্তি ও আর্তনাদ

আল্লাহ তাআলা আখেরাতে ইহজীবনের ভালো-মন্দ কাজের প্রতিদান দেবেন। যারা পার্থিব জীবনে আল্লাহ তাআলার বিধান মেনে জীবন কাটিয়েছে, আল্লাহ তাআলা তাদেরকে জান্নাতসহ আরও অনেক নিআমত দান করবেন। কুরআন কারীমের ভাষায় তারাই সফলকাম। জান্নাতে তারা নিআমত উপভোগ করতে করতে বলবে, (তরজমা) ‘আমাদের প্রতিপালক আমাদেরকে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, আমরা তা সত্য পেয়েছি।’ -সূরা আরাফ (৭) : ৪৪

অন্যদিকে যারা দুনিয়ায় আল্লাহ ও রাসূলের অবাধ্যতায় জীবন কাটিয়েছে, তারা সেদিন চরম ব্যর্থ হবে। সেদিন অনুতাপ করে তারা নিজেদেরকেই দোষারোপ করতে থাকবে। আর বলবে, (তরজমা) ‘হায় আফসোস! যদি এমন না করতাম!’ 

আখেরাতে বিফল জাহান্নামীরা কীভাবে আফসোস করবে, তা বিশদভাবে আল্লাহ তাআলা কুরআন কারীমে বলে দিয়েছেন। 

অপরাধীদের আমলনামা উপস্থিত করা হলে, তারা তা দেখে চমকে উঠবে এবং আফসোস করতে থাকবে,

কুরআন কারীমে ইরশাদ হয়েছে-

وَ وُضِعَ الْكِتٰبُ فَتَرَی الْمُجْرِمِیْنَ مُشْفِقِیْنَ مِمَّا فِیْهِ وَ یَقُوْلُوْنَ یٰوَیْلَتَنَا مَالِ هٰذَا الْكِتٰبِ لَا یُغَادِرُ صَغِیْرَةً وَّ لَا كَبِیْرَةً اِلَّاۤ اَحْصٰىهَا وَ وَجَدُوْا مَا عَمِلُوْا حَاضِرًا وَ لَا یَظْلِمُ رَبُّكَ اَحَدًا.

‘আমলনামা’ সামনে রেখে দেওয়া হবে। তখন তুমি অপরাধীদেরকে দেখবে, তাতে যা (লেখা) আছে, তার কারণে তারা আতঙ্কিত এবং তারা বলছে, হায়! আমাদের দুর্ভোগ! এটা কেমন কিতাব, যা আমাদের ছোট-বড় যত কর্ম আছে, সবই পুঙ্খানুপুঙ্খ হিসাব করে রেখেছে। তারা তাদের সমস্ত কৃতকর্ম সামনে উপস্থিত পাবে। তোমার প্রতিপালক কারও প্রতি কোনো জুলুম করবেন না। -সূরা কাহ্ফ (১৮) : ৪৯

আমলনামা উপস্থিত করা হলে তারা দেখবে দুনিয়াতে ছোট-বড় যা কিছু করেছে, সব সেখানে লেখা রয়েছে।  ইহজীবনে  যে গুনাহকে তুচ্ছ ভেবে উদাসীন থেকেছে। আমলনামায় তা দেখে হতভম্ব হয়ে যাবে, হায় হায়! এ কী! কোনো কিছুই বাদ দেওয়া হয়নি!  

আরও ইরশাদ হয়েছে-

وَ اَمَّا مَنْ اُوْتِیَ كِتٰبَهٗ بِشِمَالِهٖ  فَیَقُوْلُ یٰلَیْتَنِیْ لَمْ اُوْتَ كِتٰبِیَهْ وَ لَمْ اَدْرِ مَا حِسَابِیَهْ یٰلَیْتَهَا كَانَتِ الْقَاضِیَةَ مَاۤ اَغْنٰی عَنِّیْ مَالِیَهْ هَلَكَ عَنِّیْ سُلْطٰنِیَهْ.

সেই ব্যক্তি, যার আমলনামা দেওয়া হবে তার বাম হাতে; সে বলবে, আহা! আমাকে যদি আমলনামা দেওয়াই না হত! আর আমি জানতেই না পারতাম, আমার হিসাব কী? আহা! মৃত্যুতেই যদি আমার সব শেষ হয়ে যেত! আমার অর্থ-সম্পদ আমার কোনো কাজে আসল না! আমার সব ক্ষমতা লুপ্ত হয়ে গেল। -সূরা আলহাক্কাহ (৬৯) : ২৫-২৯

অপরাধীদের বাম হাতে আমলনামা দেওয়া হবে, তারা আমলনামা গ্রহণ করতে চাইবে না। বলবে, হায়! যদি আমলনামা না দেওয়া হত! পৃথিবীতে যে মৃত্যু থেকে বাঁচতে সর্বস্ব ত্যাগ করতেও পিছপা হত না, সেই মৃত্যুই তখন বড় কামনার বিষয় হবে। জাগতিক ধন-সম্পদ বিত্ত-বৈভব ও ক্ষমতা সেদিন কোনো কাজে আসবে না। 

শয়তানের অনুসরণে যারা জীবন কাটায়। শয়তানের দোসর হয়ে নিজেও আল্লাহ-রাসূলকে ভুলে থাকে, মুমিনদেরকেও দ্বীনের পথে বাঁধা দান ও পথভ্রষ্ট করার চেষ্টা করে। কিয়ামতের দিন যখন তারা এর ভয়ঙ্কর পরিণতি দেখবে, তখন শয়তান থেকে যোজন যোজন দূরত্ব কামনা করবে। কুরআনে ইরশাদ হয়েছে-

حَتّٰۤی اِذَا جَآءَنَا قَالَ یٰلَیْتَ بَیْنِیْ وَ بَیْنَكَ بُعْدَ الْمَشْرِقَیْنِ فَبِئْسَ الْقَرِیْنُ.

পরিশেষে এরূপ ব্যক্তি যখন আমার কাছে আসবে তখন (সে তার সঙ্গী শয়তানকে) বলবে, আহা! আমার ও তোমার মধ্যে যদি পূর্ব ও পশ্চিমের ব্যবধান থাকত। কেননা তুমি বড় মন্দ সঙ্গী ছিলে। -সূরা যুখরুফ (৪৩) : ৩৮

অথচ আল্লাহ তাআলা কুরআনে বহুবার সতর্ক করে দিয়েছেন, শয়তান কিয়ামত পর্যন্ত মানুষকে পথভ্রষ্ট করার অঙ্গীকার করেছে। শয়তান মানুষের প্রকাশ্য শত্রু। শয়তান দুনিয়াতে মানুষকে মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিপথগামী করে রাখছে। আখেরাতে সে বলবে, আমি তো তোমাদেরকে জোর করিনি, আমি শুধু ডেকেছিলাম, তোমরা সাড়া দিয়েছো। কাজেই আমাকে দোষ না দিয়ে নিজেদেরকেই দোষারোপ কর। বস্তুত শয়তানের তখন তাদেরকে সাহায্য করার কোনো উপায়ও থাকবে না। 

যারা অসৎ সঙ্গীর পাল্লায় পড়ে আল্লাহ তাআলার বিধান ভুলে যায়। আল্লাহর হুকুম মানতে অবহেলা করে। বন্ধুর মন রক্ষার্থে আল্লাহ যা করতে আদেশ করেছেন, তা করে না। যা করতে নিষেধ করেছেন, তা-ই করে। আখেরাতে  তারাই এদের মনস্তাপ ও সর্বনাশের কারণ হবে। সেদিন কোনো বন্ধুত্ব থাকবে না। আল্লাহ তাআলা কুরআনে বলেন-

وَ یَوْمَ یَعَضُّ الظَّالِمُ عَلٰی یَدَیْهِ یَقُوْلُ یٰلَیْتَنِی اتَّخَذْتُ مَعَ الرَّسُوْلِ سَبِیْلًا یٰوَیْلَتٰی لَیْتَنِیْ لَمْ اَتَّخِذْ فُلَانًا خَلِیْلًا لَقَدْ اَضَلَّنِیْ عَنِ الذِّكْرِ بَعْدَ اِذْ جَآءَنِیْ  وَ كَانَ الشَّیْطٰنُ لِلْاِنْسَانِ خَذُوْلًا.

যেদিন জালেম ব্যক্তি (মনস্তাপে) নিজের হাত কামড়াবে এবং বলবে, হায়! আমি যদি রাসূলের সাথে পথ ধরতাম! হায় আমার দুর্ভোগ! আমি যদি অমুক ব্যক্তিকে বন্ধুরূপে গ্রহণ না করতাম! আমার কাছে তো উপদেশ এসে গিয়েছিল, কিন্তু সে (ওই বন্ধু) আমাকে তা থেকে দূরে সরিয়ে দিয়েছিল। আর শয়তান তো (এমনই চরিত্রের; সময়কালে সে) মানুষকে অসহায় অবস্থায় ফেলে চলে যায়। -সূরা ফুরকান (২৫) : ২৭-২৯।

বন্ধুদেরকে দোষারোপ করার পাশাপাশি পৃথিবীতে যারা বিপথগামীতায় তাদেরকে নেতৃত্ব দিয়েছে, তাদের প্রতি তারা ক্ষোভে ফেটে পড়বে। বলবে, (তরজমা) ‘আল্লাহ! আমরা আমাদের নেতাদের অনুসরণ করেছিলাম, তারা আমাদেরকে পথভ্রষ্ট করেছে। আল্লাহ! যারা আমাদেরকে বিপথগামী করেছে, আমাদেরকে আজ এমন শাস্তির সম্মুখীন করেছে, তাদেরকে দ্বিগুণ শাস্তি দিন এবং তাদের প্রতি লানত করুন, মহা লানত। -সূরা আহযাব (৩৩) : ৬৭-৬৮

অনুসৃতদেরকে তারা নিজেরাও শাস্তি দিতে চাইবে। বলবে, (তরজমা) ‘আল্লাহ! জীন ও মানুষের মধ্যে যারা আমাদেরকে পথভ্রষ্ট করেছে, তাদেরকে দেখিয়ে দেন, আমরা তাদেরকে পায়ের নিচে পিষে লাঞ্ছিত করব।’ -সূরা হা-মীম সাজদা (৪১) ২৯

সেদিন তাদের পারস্পরিক বন্ধুত্ব এবং সদ্ভাব শেষ হয়ে যাবে। নিজেদের সর্বনাশের কারণে তারা পরস্পরের কঠোরতম শাস্তির আবেদন করবে। 

রাসূলগণ যখন তাদেরকে আল্লাহর একত্ববাদের দিকে দাওয়াত দিতেন তখন তারা বলত, ‘এসব পাগলের প্রলাপ, কাল্পনিক কথা।’ অথচ তাদেরই মাঝে বেড়ে ওঠা রাসূলের নিষ্কলুষতা তারা একবাক্যে স্বীকার করত। কিন্তু কবর, আখেরাত, জান্নাত, জাহান্নাম এসব যেন তাদের বিশ্বাসই হতে চায় না। নিজেদের অসম্পূর্ণ ও ভ্রান্ত যুক্তিকে তাদের যুক্তিপূর্ণ কথা মনে হয় আর আসল যুক্তির কথাকে মনে করে রূপকথা। কিন্তু সেদিন বুঝতে পারবে, রাসূলের সঙ্গ ত্যাগ করে কী দুর্ভাগ্য টেনে এনেছে। প্রথমে যদিও তারা নিজেদের কর্মকা- অস্বীকার করে বলবে, আমরা শিরক করতাম না। কারণ একে তো তারা নিজেরাও বাঁচার বাহানা খুঁজবে। উপরন্তু তারা যাদের উপাসনা করত, তারাও অন্তর্হিত হয়ে যাবে। তারপর যখন আল্লাহ বলবেন, ‘দেখো! কীভাবে নিজেদের ব্যাপারে মিথ্যা বলছে।’ তখন নিজ মুখে অপরাধ স্বীকার করবে। কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, তারা বলবে-

رَبَّنَا غَلَبَتْ عَلَیْنَا شِقْوَتُنَا وَ كُنَّا قَوْمًا ضَآلِّیْنَ رَبَّنَاۤ اَخْرِجْنَا مِنْهَا فَاِنْ عُدْنَا فَاِنَّا ظٰلِمُوْنَ.

হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের উপর আমাদের দুর্ভাগ্য ছেয়ে গিয়েছিল এবং আমরা ছিলাম বিপথগামী সম্প্রদায়। হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদেরকে এখান থেকে উদ্ধার করুন। অতঃপর পুনরায় যদি আমরা সেই কাজই করি, তবে অবশ্যই আমরা জালেম হব। -সূরা মুমিনূন (২৩) : ১০৬-১০৭

সেদিন তাদের বুঝে আসবে, পার্থিব জীবনে হঠকারিতা ও রাসূলের অবাধ্যতা করে তারা কেমন জুলুম করেছে, আর সেদিন তারা একেবারে ভালো মানুষ হয়ে যেতে চাইবে। ইরশাদ হয়েছে-

وَ هُمْ یَصْطَرِخُوْنَ فِیْهَا  رَبَّنَاۤ اَخْرِجْنَا نَعْمَلْ صَالِحًا غَیْرَ الَّذِیْ كُنَّا نَعْمَلُ.

তারা তাতে আর্তনাদ করে বলবে, হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদেরকে মুক্তি দান করুন; আমরা আগে যে কাজ করতাম তা ছেড়ে ভালো কাজ করব। -সূরা ফাতির (৩৫) : ৩৭

এভাবে তারা আরেকবার পৃথিবীতে ফিরে আসার সুযোগ চাইবে। বলবে, আল্লাহ! এবার আমাদের বুঝে এসেছে, এখন আর আমরা আগের মতো ভুল করব না। আপনার সকল আদেশ নিষেধ মেনে চলব। এবার আমরা সত্যিকার মুমিন হয়ে যাব। আমাদেরকে শুধু আরেকবার ফিরে যাওয়ার সুযোগ দিন।

কিন্তু আল্লাহ তাআলা কিয়ামতের পর আর দ্বিতীয় কোনো সুযোগ দেবেন না। এজন্যই ইহজীবনে বারবার তিনি সতর্ক করছেন এবং মৃত্যুর পর কী ঘটবে তা আগেই বলে দিয়েছেন। সেদিন তিনি তাদের কোনো কথাই শুনবেন না।

যখন আক্ষেপ করে, অন্যকে দোষারোপ করে, আরেকটা সুযোগের আবেদন করে বা অন্য কোনোভাবেই পরিণতি এড়াতে পারবে না। তখন বলতে থাকবে- 

لَوْ كُنَّا نَسْمَعُ اَوْ نَعْقِلُ مَا كُنَّا فِیْۤ اَصْحٰبِ السَّعِیْرِ.

আমরা যদি শুনতাম এবং বুদ্ধিকে কাজে লাগাতাম, তবে (আজ) আমরা জাহান্নামীদের অন্তর্ভুক্ত হতাম না। -সূরা মুল্ক (৬৭) : ১০

আরও বলবে-

یٰلَیْتَنِیْ قَدَّمْتُ لِحَیَاتِی.

হায়! আমি যদি আমার এই জীবনের জন্য অগ্রিম কিছু পাঠাতাম! -সূরা ফাজর (৮৯) : ২৪

তাদের বড়ই দুর্ভাগ্য, যারা এ ক্ষণস্থায়ী জীবনের জন্যই আমৃত্যু চেষ্টা ও শ্রম ব্যয় করে যায়। কিন্তু আখেরাতের অনন্ত জীবনের জন্য প্রস্তুতি নিতে অবহেলা করে। নবীজী ওই ব্যক্তিকে বুদ্ধিমান বলেছেন, যে আখেরাতের জন্য কাজ করে। বেছে বেছে এমন কাজ করার চেষ্টা করে, যেটা অনন্ত জীবনের সম্বল হবে।

জাহান্নামীরা আল্লাহ তাআলার কাছে অনুনয় করে শাস্তি এড়াতে না পেরে কমাতে চাইবে। জাহান্নামের পাহারাদার ফেরেশতাগণকে তারা বলবে, আপনারা আল্লাহর কাছে সুপারিশ করুন, যেন আমাদের শাস্তি খানিকটা কমিয়ে দেন, অন্তত এক দিনের জন্য হলেও কিছুটা লাঘব করে দেন। ফিরিশতাগণ তাদের হয়ে সুপারিশ করবেন না।

তারা জান্নাতীদেরকে ডাক দিয়ে বলবে, (তরজমা) ‘আমাদের ওপর একটু পানি ঢেলে দাও, অথবা আল্লাহ তাআলা তোমাদেরকে যে নিআমত দান করেছেন, তার সামান্য কিছু হলেও দাও। জান্নাতীরা বলবে, এসব নিআমত আল্লাহ তাআলা কাফেরদের জন্য হারাম করেছেন।’ -সূরা আরাফ (৭) : ৫০

জান্নাতীদের সঙ্গে তাদের এমন কথাও হবে যে, জান্নাতীরা জিজ্ঞেস করবে, তোমরা জাহান্নামে কেন? তারা উত্তরে বলবে, (তরজমা) ‘আমরা নামায পড়তাম না, মিসকীনদেরকে খাওয়াতাম না,... আখেরাত দিবসকে অস্বীকার করতাম। এখন এই নিশ্চিত বিষয়টি আমাদের সামনে এসে গেছে।’ -সূরা মুদ্দাছ্ছির (৭৪) : ৪৩-৪৭

কাজেই এখন আর তাদের জন্য কেউ সুপারিশ করবে না।

এভাবে তারা সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত হয়ে যাবে। আরহামুর রাহিমীন তাদের কথা শুনবেন না। রাসূল ও ফিরিশতাগণ তাদের জন্য সুপারিশ করবেন না। হাশরের ময়দানে তাদের স্বজন-পরিজন তাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে। শয়তানও তাদের উপকার করতে ব্যর্থ হবে। তখন তারা আফসোস করে বলবে, ‘হায়! যদি আমরা মাটি হয়ে যেতাম।’ তারা মাটির সাথে মিশে যেতে চাইবে। নিজেদের অস্তিত্ব মুছে ফেলতে চাইবে। কিন্তু শাস্তি ভোগ করা ছাড়া কিছুই করার থাকবে না। আল্লাহ তাআলা কুরআনে অনেক জায়গায় বলেছেন, আমি জানি, শাস্তির মুখোমুখি হওয়ার পরে তারা কী বলবে। বিভিন্নভাবে তিনি কুরআনে তা ব্যক্ত করেছেন।

আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে হেদায়েত দান করুন, যেন সময় থাকতেই নিজেদেরকে শুধরে নিতে পারি। রাব্বুল আলামীন যে ভয়াবহ দিবসের ব্যাপারে বহুবার সতর্ক করেছেন, সেই চূড়ান্ত ফলাফলের দিন যেন আমাদেরকে আফসোস করতে না হয়। যাদের ব্যাপারে কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, তোমাদেরকে তো সতর্ক করা হয়েছিল, কিন্তু তোমরা তা শোনোনি। কাজেই এখন তোমাদের কথাও শোনা হবে না। তোমরা জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করতে থাকো। আমরা যেন সেদিন ওই দলভুক্ত না হই, যাদের ব্যপারে রাসূল বলবেন, আল্লাহ! এরা আপনার কথা বিলকুল পরিত্যাগ করেছিল।

আল্লাহ তাআলা সবাইকে রক্ষা করুন এবং তাঁর পথে ফিরে আসার ও দ্বীনের উপর অবিচল থাকার তাওফীক দান করুন- আমীন।