রোববার ২৬ অক্টোবর ২০২৫, কার্তিক ১১ ১৪৩২, ০৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

ব্রেকিং

উপদেষ্টা পরিষদের সভা নভেম্বরেই শেষ: তথ্য উপদেষ্টা নন-ক্যাডার বিধি সংশোধন, বিসিএসের নম্বর প্রকাশসহ ১৫ দফা দাবি এনসিপির বরিশালে গৃহবধূকে ধর্ষণ: চার জনের মৃত্যুদণ্ড নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা হবে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আজকে বিদায় দিতে চাইনি: মেট্রো দুর্ঘটনায় নিহতের স্ত্রী মেট্রোরেলে দুর্ঘটনায় নিহতের পরিবার পাবে ৫ লাখ টাকা : রেল উপদেষ্টা বিয়ারিং প্যাড কী, কেন বসানো হয়? বিকট শব্দে কেঁপে ওঠে আশপাশ, ফুটপাতে লুটিয়ে পড়েন আজাদ আরপিও-এর ২০ অনুচ্ছেদের বহাল চেয়ে ইসিতে বিএনপির চিঠি সাংঘর্ষিক রাজনীতির পুরানো ধারায় ফেরা যাবে না : খসরু ট্রাম্পের উপস্থিতিতে থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তি সই

ফিচার

টাঙ্গাইলে সোনালী রঙের ফুলে সেজেছে সোনালু গাছ

 প্রকাশিত: ১৫:১০, ১৫ মে ২০২৪

টাঙ্গাইলে সোনালী রঙের ফুলে সেজেছে সোনালু গাছ

সবুজ পাতা ছাপিয়ে সোনালী রঙের ফুলে সেজেছে সোনালু গাছ। প্রতিটি গাছের গা থেকে যেনো হলুদ ঝরণা নেমে এসেছে। বাতাসে কিশোরীর কানের দুলের মতো দুলতে থাকে এ ফুল, আকৃষ্ট করে পথচারীদের। টাঙ্গাইল পৌর শহরের ধুলের চর মাদ্রাসার সামনের ডিসি লেকের পশ্চিম দিকের পাকা সিঁড়ির পাশে একটি, লেকের পাড়ের রাস্তার ধারে আরও দুটি ও উদ্যান তত্ত্ব অফিসের আঙিনায় আরও তিনটি সোনালু গাছ ফুলে শোভিত হয়ে আছে। এ সড়কে চলাচলকারী পথচারী, মোটরসাইকেল আরোহী, প্রাইভেট কার আরোহীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে প্রকৃতির অপূর্ব সৌন্দর্র্যের ভান্ডার এ সোনালু ফুল গাছগুলো।

জানা গেছে, সোনালু গাছ পাতা ঝরা মাঝারি আকৃতির বৃক্ষ। এটি আট থেকে ৯ মিটার উঁচু হয়। হলুদ বরণ এ ফুল দেখতে যেমন আকর্ষণীয় তেমনি আছে তার বাহারি নামও। পরিচিত নামগুলো হলো- সোনালু, সোনাইল, সোঁদাল, বান্দরলাঠি ইত্যাদি। বৈজ্ঞানিক নাম ক্যাসিয়া ফিস্টুলা, ইংরেজি নাম গোল্ডেন শাওয়ার ট্রি। হাজার বছর আগেও এ গাছ আমাদের উপমহাদেশে ছিল। এ গাছের বৈশিষ্ট্য হলো ঝাড় লণ্ঠনের মতো দীর্ঘ মঞ্জরি এবং উজ্জ্বল হলুদ ফুল। এ গাছের আদি নিবাস হলো ভারত, মিয়ানমার ও বাংলাদেশ। এর ফুল, ফল ও পাতা বানরের খুব প্রিয়। সোনালু কাঠের রং ইটের মতো লাল। ঢেঁকি ও সাঁকো বানানোর কাজেও এ গাছের কাঠ ব্যবহার করা হয়।

এ ফুলের সৌন্দর্য প্রসঙ্গে মাহবুব চৌধুরী মনি বলেন, এ সময়ে আমি যতবার মোটরসাইকেল নিয়ে এ সড়ক দিয়ে যাতায়াত করি, কিছুটা সময় হলেও মোটরসাইকেল থামিয়ে এ ফুলের শোভা উপভোগ করি। এ লেকের পাড়ে আরও আছে কৃষ্ণচূড়া, পলাশসহ বেশ কিছু গাছ, যেগুলো সব সময়ই আমাকে কাছে টানে। ইট-কাঠের- এ শহরে আরও কিছু এ ধরনের গাছ লাগানো জরুরি হয়ে পড়েছে।

টাঙ্গাইল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং ও কনস্ট্রাকশন ডিপার্টমেন্টের ষষ্ঠ সেমিস্টারের ছাত্র শৈবাল চৌধুরী বলেন, আমি জন্মসূত্রে কক্সবাজার জেলার হলেও পড়ালেখার কারণে টাঙ্গাইল পৌরসভার ধুলেরচর এলাকায় থাকি। যখনই আমি সময় পাই ডিসি লেকের এ ঘাটলায় বসে সোনালু ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করি। পড়ালেখা করতে করতে যখন একঘেয়েমি পেয়ে বসে তখনই আমি এ গাছগুলোর সামনে এসে দাঁড়াই। নিমিষেই আমার সেই একঘেয়েমি ও ক্লান্তি দূর হয়ে যায়। হাকিম ইকবাল হোসেন (ঢাবি) জানান, সোনালু গাছের বাকল এবং পাতায় ওষুধি গুণাগুণ রয়েছে।ব্লার্ড প্রেসারে নাক দিয়ে রক্ত পরলে সোনালুর ফলমজ্জা আধা কাপ পানিতে মিশিয়ে তা ছেঁকে চিনি বা মধু দিয়ে পান করলে এ সমস্যার সমাধান হয়। অন্ত্রের সমস্যায় চার-পাঁচ গ্রাম ফলমজ্জা চার কাপ পানিতে সেদ্ধ করে ছেঁকে সকালে ও বিকেলে পান করলে সুবিধা পাওয়া যায়। কোষ্ঠ্যকাঠিন্যও দূর হয়। এটি খুবই ওষুধ গুণসম্পন্ন উদ্ভিদ। ইউনানী চিকিৎসায় এখনো এ গাছের ব্যবহার রয়েছে।

টাঙ্গাইল বিভাগীয় বন কর্মকর্তা সাজাদুজ্জামান জানান, সোনালু গাছ একটি বনজ শোভা বর্ধনকারী গাছ। এ গাছটি ভারত উপমহাদেশের একটি গাছ। এ শোভাবর্ধনকারী বৃক্ষ, পাখিদের আশ্রয়স্থল হিসেবে কাজ করে। গাছের উজ্জ্বল হলুদ ফুল মৌমাছি ও প্রজাপতিদের আকর্ষণ করে পরাগায়নের সহযোগিতা করে থাকে। এ গাছ মূলতঃ সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য লাগানো হয়ে থাকে। সোনালু গাছের সাথে কৃষ্ণচূড়া, পলাশ প্রভৃতি গাছ লাগালে আরও বেশি সৌন্দর্য বর্ধন করে থাকে।