হাদির মরদেহ রাখা হবে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরীফ ওসমান বিন হাদির মরদেহ রাজধানীর জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউটের হিমঘরে রাখা হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউটের পরিচালক আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, "হাদির মরদেহ এখানে রাখার ব্যাপারে আপাতত সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। তারা আমাদের বলার পর আমরা প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি।"
এটার পরিবর্তনও হতে পারে বলে আভাসও দিয়েছেন তিনি।
হৃদরোগ ইন্সটিটিউটে নিরাপত্তা জোরদার করেছে পুলিশ।
পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেন, "হাদির মরদেহ এখানে রাখার কথা বলার পর আমরা আমাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছি।”
শুক্রবার সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে হাদির মরদেহ বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটটি ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে বলে বিমানবন্দর থানার ওসি মোবারক হোসেন জানান।
বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টা ৩ মিনিটে সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ফ্লাইটটি ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হয়।
বিমানবন্দরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ৮ নম্বর হ্যাঙ্গার গেট দিয়ে হাদির মরদেহ বের করা হবে। কফিন বহনের জন্য ইতোমধ্যে সেখানে একটি গাড়ি নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
তার আগেই হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়; মোতায়েন করা হয় অতিরিক্ত পুলিশ, বিজিবি, এপিবিএন ও আনসার সদস্য।
বিমানবন্দর থেকে হাদির মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে রাজধানীর জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউটের হিমঘরে। রাতে সেখানেই রাখা হবে কফিন।
ইনকিলাব মঞ্চ এক ফেইসবুক পোস্টে লিখেছে, “পরিবারের দাবির ভিত্তিতে শহীদ ওসমান হাদিকে কবি নজরুলের পাশে সমাহিত করার এবং মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে বাদ জোহর জানাজার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
এ দিন বিমানবন্দর থেকে হাদির কফিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে নেওয়ার কথা থাকলেও তার বদলে শনিবার নেওয়া হবে বলে ইনকিলাব মঞ্চ জানিয়েছে।
গত ১২ ডিসেম্বর দুপুর সোয়া ২টার দিকে রাজধানীর বিজয়নগর পানির ট্যাংকির সামনে রিকশায় করে যাওয়ার সময় ওসমান হাদির উপর আক্রমণ হয়। ওই সময় মোটরসাইকেলে করে এসে দুজন তাকে খুব কাছ থেকে গুলি করে পালিয়ে যায়।
পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় দ্রুত তাকে ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। একপর্যায়ে পরিবারের ইচ্ছায় তাকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। এরপর সেখানে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) তার চিকিৎসা চলে।
পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য সোমবার এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে হাদিকে সিঙ্গাপুর নিয়ে যাওয়া হয়েছিল; সেখানেই বৃহস্পতিবার তার মৃত্যু হয়।
সিঙ্গাপুরের হাসপাতালে ওসমান হাদির মৃত্যুর খবর এলে বৃহস্পতিবার রাতে প্রথমে শাহবাগ অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু হয়। পরে একদল লোক কারওয়ানবাজারে প্রথম আলো কার্যালয়ে এংপরে ডেইলি স্টার ভবনে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ করে।
পরে ধানমন্ডিতে ছায়ানট ভবনেও হামলা হয়। সেখানেও ভাঙচুর-লুটপাট চালিয়ে আগুন দেওয়া হয়।
এদিকে হাদির মরদেহ দেশে আসার পর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বিজিবি মোতায়ন করা হয়েছে।
শুক্রবার বিকালে সীমান্ত রক্ষাকারী বাহিনীটির এক বার্তায় বলা হয়, বিমানবন্দর এলাকা, কারওয়ানবাজার ও হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল এলাকাসহ নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বিজিবি মোতায়ন করা হয়েছে।