সাংবাদিকদের ওপর হামলার ‘পূর্ণ ন্যায়বিচারের’ আশ্বাস দিল সরকার
সংবাদমাধ্যম ও সাংবাদিকদের ওপর হামলার নিন্দা জানিয়ে ‘পূর্ণ ন্যায়বিচারের’ আশ্বাস দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
শুক্রবার এক বিবৃতিতে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর বলেছে, “দ্য ডেইলি স্টার, প্রথম আলো ও নিউ এজ’র সাংবাদিকদের প্রতি আমরা বলতে চাই—আমরা আপনাদের পাশে আছি। আপনারা যে সন্ত্রাস ও সহিংসতার শিকার হয়েছেন, তার জন্য আমরা গভীরভাবে দুঃখিত।
“সন্ত্রাসের মুখেও আপনাদের সাহস ও সহনশীলতা জাতি প্রত্যক্ষ করেছে। সাংবাদিকদের ওপর হামলা মানেই সত্যের ওপর হামলা। আমরা আপনাদের পূর্ণ ন্যায়বিচারের আশ্বাস দিচ্ছি।”
সিঙ্গাপুরের হাসপাতালে ওসমান হাদির মৃত্যুর খবর এলে বৃহস্পতিবার রাতে প্রথমে শাহবাগ অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু হয়। পরে একদল লোক কারওয়ানবাজারে প্রথম আলো কার্যালয়ে এবং পরে ডেইলি স্টার ভবনে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ করে। একপর্যায়ে ডেইলি স্টার ভবনের সামনে হামলাকারীদের থামাতে গিয়ে নাজেহাল হন নিউ এইজ সম্পাদক নূরুল কবীর।
এদিন রাতেই ধানমন্ডিতে ছায়ানট ভবনে হামলা হয়। সেখানেও ভাঙচুর-লুটপাট চালিয়ে আগুন দেওয়া হয়। এর বাইরে দেশের বিভিন্ন স্থানে হামলা ও অগ্নিসংযোগের খবর আসছে।
উগ্র গোষ্ঠীর সব ধরনের সহিংসতার বিষয়ে সতর্ক থাকতে বাংলাদেশের সব নাগরিকের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, “আমরা সহিংসতা, ভীতি প্রদর্শন, অগ্নিসংযোগ এবং জানমাল ধ্বংসের সকল কর্মকাণ্ডকে দৃঢ়ভাবে ও দ্ব্যর্থহীনভাবে নিন্দা জানাই।
“দেশের ইতিহাসের এই সংকটময় সময়ে আমরা একটি ঐতিহাসিক গণতান্ত্রিক রূপান্তরের মধ্য দিয়ে অগ্রসর হচ্ছি। যারা বিশৃঙ্খলাকে পুঁজি হিসেবে নেয় এবং শান্তির পথকে উপেক্ষা করে—এমন অল্প কয়েকজনের কারণে এই অগ্রযাত্রা আমরা কোনোভাবেই ব্যাহত হতে দিতে পারি না এবং দেব না।”
ওসমান হাদির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর বলেছেন, “আসন্ন নির্বাচন ও গণভোট কেবল রাজনৈতিক অনুশীলন নয়; এগুলো একটি গুরুতর জাতীয় অঙ্গীকার। এই অঙ্গীকার অবিচ্ছেদ্যভাবে জড়িয়ে আছে সেই স্বপ্নের সঙ্গে, যার জন্য শহীদ শরীফ ওসমান হাদি তার জীবন উৎসর্গ করেছেন।
“তার আত্মত্যাগ ও স্মৃতির প্রতি সম্মান জানাতে হলে সংযম, দায়িত্বশীলতা এবং ঘৃণা প্রত্যাখ্যানের প্রতি অবিচল অঙ্গীকার প্রয়োজন।”
বৃহস্পতিবার রাতেই ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলায় ধর্ম নিয়ে কটূক্তির অভিযোগ তুলে এক শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, “নতুন বাংলাদেশে এ ধরনের সহিংসতার কোনো স্থান নেই। এই নৃশংস অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।
“এই সংকটময় মুহূর্তে আমরা প্রত্যেক নাগরিকের প্রতি আহ্বান জানাই—সহিংসতা, উসকানি ও ঘৃণাকে প্রত্যাখ্যান ও প্রতিরোধের মাধ্যমে শহীদ হাদির প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করুন।”