মাগুরার শিশুটির জীবন সংকটাপন্ন, দোয়া চেয়েছে সেনাবাহিনী

মাগুরায় ধর্ষণের শিকার শিশুটির শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হয়েছে; চারবার হার্ট অ্যাটাকের পর তার জীবন সংকটাপন্ন হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছে সেনাবাহিনী।
বুধবার রাত পৌনে ১২টার দিকে ফেইসবুকে এক পোস্টে সেনাবাহিনীর তরফে বলা হয়েছে, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন শিশুটি এদিন চারবার হার্ট অ্যাটাকের শিকার হয়েছে। পরে সিপিআর (কৃত্রিম শ্বাস দেওয়ার প্রক্রিয়া- কার্ডিও-পালমোনারি রিসাসিটেশন) দেওয়ার মাধ্যমে তার অবস্থা স্থিতিশীল করা হয়েছে।
“তার রক্তে লবণের ভারসাম্যহীনতার কারণে ডায়ালাইসিস করা হচ্ছে। অন্যান্য জটিলতার পাশাপাশি শিশুটির রক্তচাপ ৬০/৪০, যা আরো নিম্নমুখী।“
এমন অবস্থায় ফেইসবুকে পোস্টে শিশুটির সুস্থতার জন্য সেনাবাহিনী দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছে।
শারীরিক অবস্থার সামান্য উন্নতি কথা দুদিন আগে শোনা গেলেও এর আগে বুধবার বিকালে আবার তার অবস্থার অবনতির খবর দেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
পরে মধ্যরাতের দিকে সেনাবাহিনী শিশুটির সবশেষ অবস্থা তুলে ধরে লিখেছে, “প্রতিদিন স্ট্যান্ডার্ড আইসিইউ প্রটোকল অনুযায়ী প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা এবং তদানুযায়ী সর্বোচ্চ চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে।
"সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকবৃন্দের সমন্বয়ে গঠিত উচ্চপর্যায়ের চিকিৎসা পর্ষদ সর্বাধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতির মাধ্যমে শিশুটির জীবন রক্ষার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।"
গুরুতর অসুস্থ শিশুটি গত শনিবার সন্ধ্যা থেকে সিএমএইচে চিকিৎসাধীন।
মাগুরা শহরতলীর নিজনান্দুয়ালী গ্রামে বোনের বাড়ি বেড়াতে গিয়ে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে শিশুটি ধর্ষণের শিকার হয় বলে পরিবারের অভিযোগ।
নির্যাতনের শিকার শিশুটিকে প্রথমে মাগুরা সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় সেখান থেকে নেওয়া হয় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
এরপর সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বৃহস্পতিবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (পিআইসিইউ) এনে ভর্তি করা হয় এবং পরে শুক্রবার রাতে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়।
গত শনিবার ঢাকা মেডিকেলে শিশুটির অবস্থা ‘সংকটাপন্ন’ জানিয়েছিলেন চিকিৎসকরা। এরপর তার চিকিৎসায় মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হলেও সন্ধ্যায় তাকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল-সিএমএইচে আনা হয়।
রোববার সকালে শিশুটির চিকিৎসার খোঁজখবর নিতে সিএমএইচে যান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। সেখানে তিনি শিশুটির সর্বোচ্চ চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন।
ধর্ষণের ওই ঘটনায় শিশুটির বোনের শ্বশুর, শাশুড়ি, দুলাভাই ও দেবরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পরে চার আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে পেয়েছে পুলিশ।