বুধবার ০৫ নভেম্বর ২০২৫, কার্তিক ২১ ১৪৩২, ১৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

ব্রেকিং

পদ ছেড়ে ভোট করবো: অ্যাটর্নি জেনারেল এনসিপি এককভাবে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে: নাহিদ ইসলাম নাসার নজরুল কাঠগড়ায় বসতে চাইলেন টুল ভাল্লুকের আক্রমণের পর সেনা মোতায়েন করল জাপান চীনকে লক্ষ্য করে ফেন্টানাইল-সম্পর্কিত শুল্ক কমানোর আদেশে ট্রাম্পের স্বাক্ষর চকরিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের ৫ জন নিহত খাগড়াছড়ির মহালছড়ি বাজারে আগুনে পুড়ল ২৩ দোকান বগুড়ায় তারেক রহমানের পক্ষে ধানের শীষে ভোট চেয়ে লিফলেট বিতরণ রামপালে বিএনপি’র সভা শেষে ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় তিন কর্মী নিহত যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম শহর নিউ ইয়র্কের প্রথম মুসলিম মেয়র মামদানি টাইফুন কালমায়েগির তাণ্ডব, ফিলিপিন্সে অর্ধ শতাধিক মৃত্যু

পর্যটন

দুবলার চরে তিন দিনব্যাপী রাসপূজা সমাপ্ত

 প্রকাশিত: ১৬:১৭, ৫ নভেম্বর ২০২৫

দুবলার চরে তিন দিনব্যাপী রাসপূজা সমাপ্ত

বাগেরহাট, ৫ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস): সুন্দরবনের দুবলার চরে সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের তিন দিনব্যাপী ঐতিহ্যবাহী ‘রাসপূর্ণিমা, পূজা ও পুণ্যস্নান’ উৎসব আজ সকালে সমাপ্ত হয়েছে।

বুধবার ভোরে সমুদ্র তীরে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার জুড়ে নারী-পুরুষ সারি সারি বসে ফুল, ফল, ডাব, কলা ও পূজার সামগ্রী নিয়ে দেবতার উদ্দেশে প্রার্থনা করেন। করজোড়ে প্রণাম, গুরুজনের পায়ে হাত রেখে আশীর্বাদ গ্রহণ এবং ভক্তদের কান্নামিশ্রিত আবেগঘন পরিবেশে উপকূলের আকাশ-বাতাস মুখরিত হয়ে ওঠে। উপস্থিত লাখো ধর্মপ্রাণ ভক্তের কাছে এটি যেন স্বর্গীয় অনুভূতির এক অনন্য মুহূর্ত।বিশ্বাস করা হয়, সমুদ্র স্নান করলে পাপমোচন ও পুণ্যলাভ হয়। এই বিশ্বাসে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত ছাড়াও জাপান, কানাডাসহ প্রায় ১৫টি দেশের ভক্ত ও পর্যটক অংশ নেন এই মহাউৎসবে।

গত সোমবার সকালে বাংলা একাডেমির উপ-পরিচালক ড. সায়মন জাকারিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে রাসমেলার উদ্বোধন করেন। দুপুরে মতুয়া সম্প্রদায়ের আগত প্রতিনিধিদলসহ হাজারো নারী-পুরুষ বিশাল র‌্যালিতে অংশ নেন। সাগরতীরে র‌্যালি শেষে স্থায়ী মন্দিরে বিকেল থেকে রাতভর চলে পূজা-অর্চনা। ঢাক, ঢোল, তবলা ও সানাইয়ের তালে তালে নেচে-গেয়ে সমুদ্র তীরজুড়ে সৃষ্টি হয় অপূর্ব উৎসবমুখর পরিবেশ।

সোলার বাতি আর পূর্ণিমার চাঁদের আলোয় আলোকিত দুবলার চর যেন এক টুকরো ভুস্বর্গে পরিণত হয়। ভক্তদের বিশ্বাস, ‘একটি রাত এখানে কাটাতে পারলেই এই জীবন ধন্য।’

সোমবার সকাল থেকে শত শত পুণ্যার্থী ট্রলার ও লঞ্চযোগে বনরক্ষী ও কোস্টগার্ডের নিরাপত্তা স্কটে দুবলার চরে পৌঁছান। আজ সকালেও একই নিরাপত্তা ব্যবস্থায় পুণ্যার্থীদের চাঁদপাই ও ঢাংমারী স্টেশনে ফেরত আনা হয়।

সানি ট্যুরস এন্ড ট্রাভেলসের পরিচালক মো,সোহরাব হোসেন বাসসকে জানান ২৫ বছর ধরে পর্যটন কেন্দ্রে পর্যটক নিয়ে এখানে আসি।এবারও ঢাকা থেকে ৫০ জন পুণ্যার্থীদের নিয়ে লঞ্চ যোগে তিনদিনের উৎসব এটি এতোটাই নির্ভিঘ্ন যে আগে এমনটা চোখে পড়েনি।সব কিছুই ছিলো পরিপাটি পরিচ্ছন্ন ছিমছাম পরিবেশ। বনবিভাগের এমন আয়োজন সত্যিই প্রশংসনীয় এবং আমরাও অনেক খুশি এই সুন্দর ব্যবস্থাপনা দেখে।

পূর্ব সুন্দরবন বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বাসসকে জানান, ‘অত্যন্ত সুশৃঙ্খল ও ধর্মীয় গাম্ভীর্যপূর্ণ পরিবেশে দেশি-বিদেশি ভক্তদের অংশগ্রহণে রাসমেলা, পূজা-অর্চনা ও পুণ্যস্নান সম্পন্ন হয়েছে। কোনো ধরনের অপ্রীতিকর  ঘটনা ঘটেনি।’

তিনি আরও জানান, রাসউৎসবকে ঘিরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি জলদস্যু ও বনদস্যু দমনেও বন বিভাগ ও কোস্টগার্ড কঠোর নজরদারিতে ছিল।

প্রতি বছর তিথি অনুযায়ী কার্তিকের শেষ বা অগ্রহায়ণের প্রথমার্ধে ভরা পূর্ণিমায় সুন্দরবনের এই ঐতিহ্যবাহী রাসমেলা অনুষ্ঠিত হয়। ধর্মপ্রাণ ভক্তদের বিশ্বাস, রাসপূজা ও পুণ্যস্নানের মাধ্যমে আত্মিক পরিশুদ্ধি ও পরিপূর্ণতা অর্জন সম্ভব।