গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে তার অবদান অপরিসীম: শেখ হাসিনা
সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন তার রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
চব্বিশের অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা ভারতে নির্বাসিত জীবন কাটাচ্ছেন। সেখান থেকে এক শোক বার্তায় তিনি বলেছেন, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ‘অবদান অপরিসীম’।
কার্যক্রমে নিষিদ্ধ থাকা আওয়ামী লীগের ফেইসবুক পেইজে এক পোস্টে শেখ হাসিনার এই শোক বার্তা প্রকাশ করা হয়।
তিনি বলেন, “বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করছি।”
গত ৪০ দিন ধরে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়াকে মঙ্গলবার ভোর ৬টায় মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।
নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ‘আপসহীন নেত্রী’ অভিধা পাওয়া খালেদা জিয়া বিএনপির নেতৃত্ব দিয়েছেন ৪১ বছর। তিনি পাঁচবারের সংসদ সদস্য, তিনবারের প্রধানমন্ত্রী, আর বিরোধী দলীয় নেতার দায়িত্ব পালন করেছেন দুইবার।
দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় খালেদা জিয়ার অবদান তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন. “বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে তাঁর অবদান অপরিসীম। তাঁর মৃত্যুতে বাংলাদেশের বর্তমান রাজনীতিতে এবং বিএনপি নেতৃত্বের এক অপূরণীয় ক্ষতি হল। আমি বেগম খালেদা জিয়ার আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।”
পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “আমি তাঁর ছেলে তারেক রহমান ও পরিবারের অন্যান্য শোকাহত সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাই। আশা করছি মহান আল্লাহ তার পরিবারের সদস্যদের এবং বিএনপির সবাইকে এই শোক কাটিয়ে উঠতে সহায়তা করবেন।”
প্রবল গণ আন্দোলনের মুখে গত ৫ অগাস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে সেখানেই আছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
লিভার সংক্রান্ত জটিলতা, কিডনি সংক্রান্ত জটিলতা, হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, আথ্রাইটিস ও ইনফেকশনজনিত সমস্যাসহ বিভিন্ন জটিল ও দীর্ঘস্থায়ী স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছিলেন খালেদা জিয়া। গত ২৩ নভেম্বর থেকে তিনি বসুন্ধরায় এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন।
অবস্থার অবনতি হলে তার বড় ছেলে, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং পরিবারের সদস্যারা হাসপাতালে ছুটে যান। রাত ২টার পর এজেডএম জাহিদ হোসেন হাসপাতালের সামনে এসে সাংবাদিকদের বলেন, খালেদা জিয়া ‘অত্যন্ত সঙ্কটকময়’ সময় অতিক্রম করছেন।
এর কয়েক ঘণ্টা পর হাসপাতালের চিকিৎসকরা বিএনপি চেয়ারপারসনকে মৃত ঘোষণা করেন।
নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে ‘আপসহীন নেত্রী’ হয়ে ওঠা খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক জীবনের বড় সময় কেটেছে রাজপথের আন্দোলনে। তিনি গ্রেপ্তার হয়েছেন, জেল খেটেছেন; তবে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাননি। সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে কখনো তিনি হারেননি।