শোকে আচ্ছন্ন বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মত্যুতে শোকে আচ্ছন্ন হয়ে পড়েছেন গুলশানে তার কার্যালয়ের কর্মকর্তা কর্মচারীরা।
খালেদা জিয়ার মত্যু সংবাদ আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণার পরপরই দলীয় পতাকা অর্ধনমিত এবং কালো পতাকা উত্তোলন করা হয় কার্যালয়ে। সেখানে ভিড় করেছেন দলের নেতা-কর্মীরাও।
খালেদা জিয়ার ছেলে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এখন আছেন এভারকেয়ার হাসাপাতালে। সেখান থেকে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে গিয়ে স্থায়ী কমিটির বৈঠকে যোগ দেবেন তিনি।
ওই বৈঠকের সভাপতিত্ব করবেন তারেক রহমান। ইতিমধ্যে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যমুনায় উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে অংশ নিয়ে কার্যালয়ে ফিরেছেন। স্থায়ী কমিটির সদস্যরাও কার্যালয়ে অবস্থান করছেন।
মঙ্গলবার ভোর ৬টায় ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয় বলে তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন জানিয়েছেন। তার বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর।
চেয়ারপারসনের মৃত্যুর খবরে কার্যালয়ের সামনে জড়ো হওয়া বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে অনেকেই আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। কেউ কেউ কান্নায় ভেঙে পড়েছেন।
এক এগারোর পট পরিবর্তনের পরে বিএনপি চেয়ারপারসনের জন্য এই কার্যালয় খোলা হয়। সে সময়ে বিএনপিকে দ্বিধা-বিভক্ত করা এবং নয়া পল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয় দখল করা এবং ২০১০ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ঢাকা সেনানিবাসের শহীদ মইনুল সড়কের বাড়ি থেকে খালেদা জিয়াকে উচ্ছেদসহ নানা ঘটনা ঘটে। এরপর বিএনপির নেতারা ওই সময় এই বাড়িটি ভাড়া করেন।
বাড়িটি দ্রুত অফিসের জন্য প্রস্তুত করে বিএনপি। প্রবেশ পথে দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান মুর্যাল রাখা হয়েছে। দলের চেয়ারপারসনের জন্য দোতলায় তৈরি করা একটি চেম্বার ও স্থায়ী কমিটির বৈঠকের জন্য মিটিং কক্ষও তৈরি করা হয়।
২০১৫ সালে ওই কার্যালয়ের খালেদা জিয়া অবরুদ্ধ ছিলেন এক মাসের বেশি সময় ধরে। সেখান থেকে খালেদা জিয়া নয়া পল্টনে যাওয়ার জন্য বের হলে তাকে বাধা দেওয়া হয় এবং গেইট বন্ধ করে সেখানে পুলিশ কাঁদুনে গ্যাসও নিক্ষেপ করেছিল।
এর মধ্যে ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে মালয়েশিয়ায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান মারা যান। তখন খালেদা জিয়া তার গুলশানের কার্যালয়ে অবরুদ্ধ। কোকোর মরদেহ দেশে আনার পর নেওয়া হয় সেখানেই।
বিএনপি তৎকালীন মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন ও বর্তমান মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই কার্যালয়ে জিয়ার সাথে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে করেছেন। এই বাড়িতে বিভিন্ন রাজনীতিবিদ, রাষ্ট্রদূত বিএনপি চেয়ারপারসনের সাথে দেখা করেছেন। এছাড়া দলের স্থায়ী কমিটিও নিয়মিত বৈঠক করেছে এই অফিসেই।
এখন এই কার্যালয়ে তারেক রহমানের জন্য আলাদা কক্ষ তৈরি করা হয়েছে। গেল বৃহস্পতিবার ১৭ বছরের নির্বাসিত জীবন শেষে দেশে ফিরে রোববার সেখানে প্রথমবার অফিস করেন তারেক রহমান।