শুক্রবার ০২ মে ২০২৫, বৈশাখ ১৮ ১৪৩২, ০৪ জ্বিলকদ ১৪৪৬

ব্রেকিং

পহেলগাঁও হামলায় ‘র’-এর জড়িত থাকার গোপন নথি ফাঁস চিন্ময় কৃষ্ণের জামিন নিয়ে ইন্টারিম সরকারকে হুঁশিয়ারি হাসনাত আবদুল্লাহর পুলিশের বিশেষ অভিযানে ২৪ ঘণ্টায় গ্রেফতার ১১৩৭ ‘মানবিক করিডোরের’ সিদ্ধান্ত আসতে হবে নির্বাচিত সংসদ থেকে: তারেক রহমান ‘জাতীয় স্বার্থে প্রস্তুত পাকিস্তান’—ট্যাংকের ওপর দাঁড়িয়ে বললেন সেনাপ্রধান বৈষম্যবিরোধী হয়ে থাকলে শ্রমিকের বেতন বাড়ান: ইউনূসকে সেলিম ‘দুর্দশায়’ ২৬ বাংলাদেশি, ‘ব্যবস্থার’ নির্দেশ ফিজি প্রধানমন্ত্রীর ভোটার তালিকায় রোহিঙ্গা: বিশেষ এলাকায় ‘কঠোর পদক্ষেপ’ ‘শ্রমিক-মালিক এক হয়ে গড়বো এ দেশ নতুন করে’ স্লোগানের মধ্য দিয়ে আজ পালিত হচ্ছে মে দিবস উত্তেজনা কমাতে একসঙ্গে কাজ করুন: ভারত-পাকিস্তানকে যুক্তরাষ্ট্র ৩৩ বছর পর জাকসু নির্বাচনের তফসিল পাকিস্তানে ভারতের সম্ভাব্য হামলার ধরন যেমন হতে পারে ঐকমত্য কমিশন যেন বিভাজনের কমিশন না হয় পোপ হতে চান ট্রাম্প অবশেষে সেই খনিজ চুক্তিতে সই করল যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেইন

ইসলাম

অল্প দানে বেশি মিলে

মো: ওমর ফারুক

 প্রকাশিত: ১৯:২৯, ৩১ অক্টোবর ২০২৩

অল্প দানে বেশি মিলে

ছবি: সংগৃহীত

তোমাকে যদি কেউ বলে, আমাকে এক মুষ্টি চকোলেট দাও আমি তোমাকে এক কৌটা ভর্তি চকোলেট দিব! তাহলে তুমি কেমন খুশি হবে? বলার সাথে সাথে তুমি তাকে এক মুষ্টি চকোলেট দিয়ে দেবে। এমনই এক ঘটনা ঘটেছে নবীজীর যুগে, তাবুকের যুদ্ধে।

কাফেরদের সাথে নবীজীর যত যুদ্ধ হয়েছে তাবুকের যুদ্ধ ছিল সবচেয়ে কঠিন যুদ্ধ। মুসলিমদের খুব অভাব ছিল তখন। যুদ্ধের সরঞ্জাম ও খাবার ছিল অতি অল্প। সে যুগের বাহন উট-ঘোড়াও ছিল সামান্য হাতে গোনা। পথ ছিল দীর্ঘ। তারপরও আল্লাহ্র উপর ভরসা করে সাহাবীদের নিয়ে নবীজী বের হয়ে পড়লেন যুদ্ধে। ফলে আল্লাহ তাদের সাহায্য করলেন এবং বিজয় দিলেন। নবীজীর দুআয় সামান্য খাবারে অনেক বরকত হল। এসো শুনি সেই কাহিনী-

তাবুকের যুদ্ধে অনেক বড় সৈন্য বাহিনী নিয়ে নবীজী মদীনা থেকে বের হলেন তাবুকের পথে। দীর্ঘ পথ; কিন্তু তাদের সাথে খাবার ছিল খুব সামান্য। ফলে অল্প সময়েই খাবার শেষ হয়ে এল। নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও সাহাবীদের খুব কষ্ট হতে লাগল। সকলে ক্ষুধায় কাতর হয়ে পড়লেন। তখন সাহাবীগণ নবীজীর কাছে গিয়ে বললেন, আপনি অনুমতি দিলে আমরা আমাদের কিছু উট জবাই করে খাই।

উট যবাই করে খেলে বাহন কমে যাবে। এত দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে তখন খুব কষ্ট হবে। কিন্তু কী করা যাবে, ক্ষুধার কষ্টের উপরে কি আর কোনো কষ্ট আছে? তো উপায় না দেখে নবীজী তাদেরকে উট জবাই করে খাওয়ার অনুমতি দিলেন। একথা জানতে পেরে ওমর রা. খুব চিন্তিত হলেন; উট জবাই করে খেলে আমরা কীভাবে পথ চলব। তখন কষ্ট আরো বেশি হবে।

ওমর রা. ভাবতে লাগলেন, কী করা যায়। হঠাৎ তার মাথায় বুদ্ধি এল। আমাদের সাথে তো আল্লাহ্র রাসূল আছেন। তিনি যদি আমাদের কারো কারো সাথে থাকা খাবারের মাঝে দুআ করে দেন আর আল্লাহ বরকত দেন তাহলেই খাবারের সংকট দূর হয়ে যেতে পারে। ওমর রা. ছিলেন পাক্কা মুমিন; তাঁর বিশ্বাস ছিল, নবীজী দুআ করলে অবশ্যই আল্লাহ বরকত দেবেন। তখন তিনি নবীজীর কাছে গিয়ে আদবের সাথে বললেন, আল্লাহ্র রাসূল! আমরা যদি উট জবাই করে খেতে থাকি তাহলে তো আমাদের বাহন কমে যাবে, পথ চলতে কষ্ট হবে। তো আমরা এক কাজ করতে পারি কি না- আমাদের সাথে সামান্য যা খাবার আছে আমরা যদি সেগুলো জমা করি আর আপনি তাতে বরকতের দুআ করে দেন তাহলে আশা করা যায় আল্লাহ তাতে বরকত দেবেন এবং আমাদের খাবারের সংকট দূর হয়ে যাবে।

ওমর রা.-এর এ পরামর্শ নবীজীর পছন্দ হল। তিনি বললেন, হাঁ, তাই তো; এটা হতে পারে। তখন সকলে নিজেদের কাছে থাকা সামান্য খাবার এক জায়গায় জমা করতে আরম্ভ করল; কেউ আনল এক মুষ্টি খেজুর, কেউ আনল এক মুষ্টি যব/ভুট্টা। কেউ আনল রুটির টুকরা। এভাবে সকলের মুষ্টি মুষ্টি খাবারে কিছু খাবার জমা হল। নবীজী বরকতের দুআ করলেন এবং বললেন, যাও তোমরা যার যার পাত্র নিয়ে আসো এবং পাত্র ভরে এখান থেকে নিয়ে যাও। সকলে নিজ নিজ পাত্র ভরে নিতে থাকল। নবীজীর দুআর কারণে এত বরকত হল যে, তাদের সাথে থাকা সকল পাত্র ভরে খাবার নেওয়ার পরও খাবার শেষ হল না। তখন বাকি খাবার সকলে মিলে পেট ভরে খেল।

নবীজীর দুআর বরকতে আল্লাহ খাবারে এত বরকত দিলেন। এটি ছিল নবীজীর মুজেযা। নবীজীর সত্যতার প্রমাণ। তখন নবীজী বললেন, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই-ইবাদতের যোগ্য কেউ নেই এবং আমি আল্লাহ্র রাসূল। যে কোনো ব্যক্তি এ দুই বিষয়ের (অর্থাৎ, আল্লাহ একমাত্র ইলাহ ও মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহ্র রাসূল) দৃঢ় বিশ্বাস নিয়ে আল্লাহ্র সাথে সাক্ষাৎ করবে তার আর জান্নাতে প্রবেশে কোনো বাধা থাকবে না। অর্থাৎ সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। (দ্র. সহীহ মুসলিম, হাদীস ২৭)

Online_News_Portal_24