লিবিয়ার অভিবাসী চুক্তির বিরুদ্ধে রোমে বিক্ষোভ

ইতালির সঙ্গে লিবিয়ার অভিবাসী চুক্তির বিরুদ্ধে শনিবার রোমে অভিবাসী ও অধিকার কর্মীরা বিক্ষোভ করেছে।: ভূমধ্যসাগরে সর্বশেষ নৌকাডুবিতে প্রায় ২০ জনের প্রাণহানির হওয়ার আশঙ্কার একদিন এই বিক্ষোভ হয়েছে।
রোম থেকে বার্তাসংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।
প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির কট্টর-ডানপন্থী সরকারের অধীনে নবায়ণ করা ২০১৭ সালের একটি বিতর্কিত চুক্তির অধীনে, ইতালি লিবিয়ার উপকূলরক্ষীদের তহবিল ও প্রশিক্ষণ দেয়।
বিনিময়ে, লিবিয়া অভিবাসীদের ইতালিতে যাত্রা রোধ করতে সাহায্য করবে অথবা ইতোমধ্যেই সমুদ্রে থাকা অভিবাসীদের লিবিয়ায় ফিরিয়ে আনবে বলে আশা করা হচ্ছে। আগামী মাসে এই চুক্তি নবায়নের কথা রয়েছে।
বিক্ষোভ চলাকালীন, সাব-সাহারান আফ্রিকা থেকে আসা বেশ কিছুসংখ্যক অভিবাসী লিবিয়ায় তাদের ভোগান্তির কথা স্মরণ করেন এবং ভূমধ্যসাগর পার হতে গিয়ে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
কর্মী সরিতা ফ্রাতিনিসহ শত শত মানুষ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
ফ্রাতিনি এএফপিকে বলেন, মধ্য ভূমধ্যসাগরে, মৃত্যুর রেখা নামে একটি রেখা রয়েছে ।
তিনি জানান, ‘লিবিয়ার উত্তরাঞ্চলে অভিবাসীদের বন্দী রাখা হয়। সেখানে যে কেউ মারা যেতে পারে। কারণ সেখানে কেউ থাকে না।’
লিবিয়া ভূমধ্যসাগরে অভিবাসীদের ধরে নিয়ে যাওয়ার পর সেখানে আটক কেন্দ্রে ফেরত পাঠায় ফ্রাটিনি ইতালির বিরুদ্ধে মামলা করতে অভিবাসীদের সাহায্য করে আসছেন।
যেসব কেন্দ্রে জুলুম, নির্যাতন ও অন্যান্য অপরাধ হয়ে থাকে অধিকার কর্মী ও সাবেক বন্দিরা সে ধরণের কেন্দ্রগুলোর বিরুদ্ধে নিন্দা জানান।
আইভরি কোস্টের ৪৬ বছর বয়সী আইরিন দিয়া এএফপিকে বলেন, তিনি নৌকায় করে তিনবার ইউরোপে পৌঁছানোর চেষ্টা করেছিলেন, প্রথম প্রচেষ্টাতেই ভূমধ্যসাগরে ১২ জন মারা যান।
তিনি আরো জানান, লিবিয়ান বাহিনী তার নৌকাটি পিছু হটানোর পর, তিনি ত্রিপোলির পশ্চিমে কুখ্যাত আজ-জাওইয়াহ আটক কেন্দ্রে ছয় মাস কাটান।
তিনি বলেন, ‘আমি নিজের চোখে সেখানে নারীদের ধর্ষিত হতে দেখেছি।’
সাম্প্রতিক ভূমধ্যসাগরে অভিবাসী বহনকারী নৌযানগুলোয় লিবিয়ার কোস্টগার্ডের গুলিবর্ষণের ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে বলে এনজিওগুলো জানিয়েছে।
গত সপ্তাহে, ভূমধ্যসাগরে আটকা পড়া অভিবাসীদের জন্য একটি হটলাইন পরিচালনাকারী দাতব্য সংস্থা এলার্ম ফোন মাল্টার দক্ষিণ-পূর্বে ১১৩ জন অভিবাসী বহনকারী একটি নৌকায় মারাত্মক গুলিবর্ষণের খবর দিয়েছে।
ইতালির কোস্টগার্ড আরো জানিয়েছে পরবর্তীতে উদ্ধার করা অভিবাসীরা জানিয়েছে যে, তাদের দিকে গুলি করা হয়েছে।
যদি নৌকাগুলো লিবিয়ায় ফেরত না পাঠানো হয়, তাহলেও অভিবাসীদের ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে টিকে থাকতে হবে।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার মতে, এই বছর এ পর্যন্ত এই পারাপারে একসহস্রাধিক মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে।