অনশনের মধ্যেই এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বাড়ি ভাড়া আরেকটু বাড়ল

এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়িভাড়া এবার মূল বেতনের ৫ শতাংশ অথবা সর্বনিম্ম ২ হাজার টাকা করেছে সরকার।
রোববার অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের প্রবিধি অনুবিভাগের উপসচিব মিতু মরিয়ম স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে এ তথ্য জানানো হয়।
সেখানে বলা হয়, সরকারের ‘বিদ্যমান বাজেটের সীমাবদ্ধতা বিবেচনায় নিয়ে’ বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়ি ভাড়া ভাতা মূল বেতনের ৫ শতাংশ হারে (সর্বনিম্ন ২ হাজার) নির্ধারণ করা হল।
“ভাতা প্রদানের ক্ষেত্রে সব ধরনের আর্থিক বিধি-বিধান মানতে হবে এবং অনিয়ম ঘটলে বিল পরিশোধকারী কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবেন।”
এর আগে গত ৩০ সেপ্টেম্বর এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়িভাড়া ভাতা ৫০০ টাকা বাড়িয়ে ১ হাজার ৫০০ টাকা করে সরকার। তবে তা প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলনের ডাক দেয় এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণপ্রত্যাশী জোট।
এ সংগঠনের ডাকে গত ১২ অক্টোবর থেকে শিক্ষক-কর্মচারীরা জাতীয় প্রেসক্লাব ও কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান, সচিবালয় অভিমুখে লংমার্চ ও শাহবাগ মোড় অবরোধের মত কর্মসূচি পালন করছেন।
গত বৃহস্পতিবার আলোচনার পর অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়ি ভাড়া ভাতা মূল বেতনের ৫ শতাংশ বা ন্যূনতম ২ হাজার টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব দিয়েছিলেন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক চৌধুরী রফিকুল আবরার। তবে শিক্ষক-কর্মচারীরা তা প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
আন্দোলনের সপ্তম দিনে শনিবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে থেকে তারা ‘কালো পতাকা মিছিল’ করেন এবং হাই কোর্টের সামনে কদম ফোয়ারা সংলগ্ন সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ দেখান।
আন্দোলনকারীদের একটি অংশ শহীদ মিনারে ‘আমরণ অনশন’ চালিয়ে যাচ্ছেন। রোববার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ‘মার্চ টু যমুনা’ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছিলেন তারা।
মূল বেতনের ২০ শতাংশ বাড়ি ভাড়া ভাতা, এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের চিকিৎসাভাতা ৫০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১ হাজার ৫০০ টাকা করা এবং এমপিওভুক্ত কর্মচারীদের উৎসব ভাতা মূল বেতনের ৫০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৭৫ শতাংশ নির্ধারণের দাবি জানিয়ে আসছেন তারা।
এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা জাতীয় বেতন স্কেল অনুযায়ী বেতন পান। তারা মূল বেতনের সঙ্গে মাসে ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা পান। আর ১ হাজার টাকা বাড়িভাড়া ভাতা পেতেন, যা বাড়িয়ে এখন মূল বেতনের ৫ শতাংশ (সর্বনিম্ন ২ হাজার) নির্ধারণ করা হল।
এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা আগে বছরে ২৫ শতাংশ হারে বছরে দুটি উৎসব ভাতা পেতেন। গত মে মাসে বাড়ানোর পর তারা এখন মূল বেতনের ৫০ শাতাংশ হারে উৎসব ভাতা পাচ্ছেন।
৫ শতাংশ বাড়িভাড়া ভাতা বৃদ্ধিকে ‘প্রাথমিক বিজয়’ বলছেন আন্দোলনরত শিক্ষক-কর্মচারীরা। তবে তারা মূল বেতনের ২০ শতাংশ বাড়িভাড়া ভাতার দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
আন্দোলনরত শিক্ষক সংগঠনগুলোর মোর্চা এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ দেলাওয়ার হোসেন আজিজী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "২০ শতাংশ বাড়ি ভাড়া, ১৫০০ টাকা মেডিকেল ভাতা ও ৭৫ শতাংশ উৎসব ভাতার প্রজ্ঞাপন জারি না করা পর্যন্ত আমাদের সকল কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।"
রোববার দুপুরে শিক্ষক কর্মচারীরা দাবি আদায়ে 'থালা বাটি হাতে' ভুখা মিছিল করবেন বলেও জানান এ শিক্ষক নেতা।