মঙ্গলবার ০২ ডিসেম্বর ২০২৫, অগ্রাহায়ণ ১৮ ১৪৩২, ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪৭

ব্রেকিং

খালেদা জিয়া-তারেককে নিয়ে এভারকেয়ারের সামনে গুজবের ছড়াছড়ি তারেক এখনও ট্রাভেল পাস চাননি, জানালেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ১২ কেজি এলপিজির দাম বাড়ল ৩৮ টাকা ৮ থেকে ১২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট টঙ্গীতে দোয়া-মোনাজাতে শেষ হলো পাঁচ দিনের ‘জোড় ইজতেমা’ খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় এভারকেয়ারে এসএসএফ খালেদা জিয়ার ‘ভিভিআইপি মর্যাদা’ কার্যকরের নির্দেশ সরকারের চিকিৎসা গ্রহণ করতে পারছেন খালেদা জিয়া, গুজবে কান দেবেন না: ডা. জাহিদ ভোটের প্রস্তুতিতে ‘সন্তুষ্ট’ ইইউ, পর্যবেক্ষণে থাকবে বড় দল: রাষ্ট্রদূত মিলার প্রগতি সরণি আটকে মোবাইল হ্যান্ডসেট ব্যবসায়ীদের বিক্ষোভ শ্রীলঙ্কায় বন্যায় মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪১০ জন ইউক্রেন চুক্তি নিয়ে ‘খুবই আশাবাদী’ হোয়াইট হাউস ট্রাম্পের স্বাস্থ্য পরিস্থিতি চমৎকার : চিকিৎসক দেশবাসীর সম্মিলিত সমর্থনই আমাদের পরিবারের প্রেরণার উৎস: তারেক রহমান শিগগিরই দেশে ফিরবেন তারেক রহমান: সালাহউদ্দিন হিলি দিয়ে ভারত থেকে চাল আমদানি বন্ধ মাদুরোর ‘অনেক অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছেন’ ট্রাম্প বন্যা কেড়ে নিয়েছে ইন্দোনেশিয়ার অনেকের মাথা গোঁজার ঠাঁই সিরিয়ায় হস্তক্ষেপ না করতে ইসরাইলকে সতর্ক করলেন ট্রাম্প

সংস্কৃতি

বিশ্ব এইডস দিবস ২০২৫: অজ্ঞতা ভাঙলেই কমবে সংক্রমণের ঝুঁকি

 প্রকাশিত: ২০:০৪, ২ ডিসেম্বর ২০২৫

বিশ্ব এইডস দিবস ২০২৫: অজ্ঞতা ভাঙলেই কমবে সংক্রমণের ঝুঁকি

আজ সোমবার, ১ ডিসেম্বর—বাংলাদেশসহ বিশ্বের বহু দেশে সচেতনতা সভা, মানববন্ধন, র‍্যালি, স্কুল–কলেজে স্বাস্থ্যশিক্ষা আয়োজন, গণমাধ্যম প্রচার, আলোচনা ও পোস্টার ক্যাম্পেইনের মধ্য দিয়ে পালিত হচ্ছে বিশ্ব এইডস দিবস ২০২৫। ১৯৮৮ সাল থেকে প্রতি বছর ১ ডিসেম্বরকে বিশ্ব এইডস দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়—বিশ্ববাসীকে এইচআইভি/এইডস সম্পর্কে জানানো, ভুল ধারণা সংশোধন করা এবং এইডসে মৃত্যুবরণকারী মানুষদের স্মরণ করার উদ্দেশ্যে। এইডসকে কেবল একটি চিকিৎসাবিজ্ঞানের সমস্যা হিসেবে দেখলে ভুল হবে; এটি একই সঙ্গে একটি সামাজিক, মানসিক ও আচরণগত সংকট। দারিদ্র্য, বৈষম্য, কুসংস্কার, সচেতনতার অভাব, সঠিক যৌনশিক্ষার অভাব এবং সামাজিক লজ্জা—সব মিলেই এই রোগের বিস্তারকে জটিল করে তুলেছে। এখনো অনেক মানুষ এইডসের নাম শুনলেই ভীত হয়ে পড়েন, আক্রান্ত ব্যক্তিকে এড়িয়ে চলেন, এমনকি ভুল তথ্যের কারণে অকারণে আতঙ্কিত হন। অথচ অজ্ঞতা ও কুসংস্কারই সংক্রমণের সবচেয়ে বড় অনুঘটক। তাই ২০২৫ সালের বিশ্ব এইডস দিবসের মূল লক্ষ্য—সচেতনতার আলো ছড়িয়ে অজ্ঞতার দেয়াল ভেঙে ফেলা।

এইচআইভি ভাইরাসের উৎপত্তি-

বিজ্ঞান যা বলছেঃ

গবেষণার মাধ্যমে জানা যায়, আফ্রিকার কঙ্গো অঞ্চলে ১৯২০ সালের দিকে এই ভাইরাসের বিস্তার শুরু হয়। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় দেখা যায়—কিনসাসা শহর ছিল তৎকালীন সময়ে বাণিজ্য, চাকরি এবং অভিবাসনের কেন্দ্র, যে কারণে বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষের জমায়েত হতো। বন থেকে বন্যপ্রাণীর মাংস সংগ্রহ, শ্রমিকদের আবাস পরিবর্তন, নদীপথ ও রেলপথে মানুষের অবাধ যাতায়াত এবং স্বাস্থ্যবিষয়ক অজ্ঞতা মিলেই ভাইরাসটি মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। শিম্পাঞ্জি, বানর, গোরিলা থেকে একাধিক ধরনের ভাইরাস মানুষের শরীরে আসে; তবে এইচআইভি–১ এর ‘এম গ্রুপ’ সবচেয়ে বেশি ছড়িয়েছে এবং এটিই আজ বিশ্বব্যাপী এইডস বিস্তারের মূল কারণ। ১৯৬০ সালের পর যৌনকর্ম কেন্দ্রিক শহুরে পরিবর্তন, দূষিত সিরিঞ্জ ব্যবহার, দুর্বল স্বাস্থ্যব্যবস্থা এবং অনিরাপদ যৌন আচরণের ফলে ভাইরাসটির বিস্তার আরও ত্বরান্বিত হয়। এসব তথ্য প্রমাণ করে —এইডস কোনো রহস্যময় অভিশাপ নয়, বরং বিজ্ঞানভিত্তিক একটি সংক্রামক রোগ যার বিস্তারে সামাজিক কাঠামো ও আচরণগত ঝুঁকি বড় ভূমিকা রাখে।

বিশ্বে ও বাংলাদেশে বর্তমান পরিস্থিতিঃ

বিশ্বে বর্তমানে প্রায় ৪ কোটি ৪১ লাখ মানুষ এইচআইভিতে আক্রান্ত। এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে প্রায় ১৫ লাখ ৪০ হাজার মানুষের। উন্নত চিকিৎসা, সচেতনতা ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের ফলে মৃত্যুহার আগের তুলনায় অনেক কমে এসেছে। বাংলাদেশে বর্তমানে আনুমানিক ১৪ হাজার মানুষ এইচআইভি আক্রান্ত। শনাক্ত হওয়া ৮,৭৩২ জনের মধ্যে প্রায় ৭৬ শতাংশ চিকিৎসার আওতায় রয়েছে। ২০২৪ সালে নতুন শনাক্ত হওয়া ৭২৯ জনের মধ্যে পুরুষ ৪২০, নারী ২১০, তৃতীয় লিঙ্গ ১২, রোহিঙ্গা ১৮৮, বিদেশফেরত প্রবাসী ও তাদের পরিবার ১৪৪, ইনজেকশন ড্রাগ ব্যবহারকারী ৬১, সমকামী ৬৭, নারী যৌনকর্মী ১৭ এবং পুরুষ যৌনকর্মীর সংখ্যা ৫৩ জন। একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হলো—বাংলাদেশে ১৯৮৯ সালে প্রথম এইডস রোগী শনাক্ত হন এবং তিনি এখনো চিকিৎসার মাধ্যমে স্বাভাবিক জীবনযাপন করছেন, যা প্রমাণ করে—এইচআইভি সময়মতো শনাক্ত ও চিকিৎসা নিলে জীবন অনেকদিন সুস্থভাবে চলতে পারে।

কেন পালন করা হয় বিশ্ব এইডস দিবসঃ?

এইডসের বিস্তার রোধে চারটি বড় সামাজিক বাধা—অজ্ঞতা, কুসংস্কার, লজ্জা এবং বৈষম্য। অনেকে এখনো ভুলভাবে মনে করেন, কেবল যৌন সম্পর্কেই এইডস হয়। কিন্তু বাস্তবে দূষিত রক্ত, ব্যবহৃত সুচ–সিরিঞ্জ, আক্রান্ত মায়ের দুধ, বীর্য বা যোনি নিঃসরণ, দূষিত চিকিৎসা যন্ত্রপাতি এবং খোলা ক্ষতের সংস্পর্শে (বিশেষ পরিস্থিতিতে) ভাইরাসটি ছড়াতে পারে। তাই বিশ্ব এইডস দিবসের লক্ষ্য—ভুল ধারণা ভাঙা, সংক্রমণ প্রতিরোধে মানুষকে সচেতন করা, আক্রান্ত ব্যক্তির প্রতি সহমর্মিতা বাড়ানো এবং বৈষম্য কমানো।

কীভাবে ছড়ায় এইডসঃ?

অসুরক্ষিত যৌন সম্পর্ক, কনডম ছিঁড়ে যাওয়া, একই সুচ বা সিরিঞ্জ একাধিকবার ব্যবহার, আক্রান্ত মায়ের দুধের মাধ্যমে সংক্রমণ, অনিরাপদ রক্ত গ্রহণ, দূষিত চিকিৎসা সরঞ্জাম এবং খোলা ক্ষতের সংস্পর্শ—এসবই এইচআইভি সংক্রমণের প্রধান পথ।