খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নিতে জনস্রোত
সাবেক প্রধানমন্ত্রী, বিএনপি চেয়ারপাসন খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নিতে মানুষের ঢল নেমেছে রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ এবং আশপাশের সড়কে।
বিএনপি নেতাকর্মীরা সেখানে হাজির হয়েছেন কালো পোশাক বা কালো ব্যাজ পরে। অনেকের হাতে দলীয় পতাকা, খালেদা জিয়ার ছবি।
বুধবার বেলা ২টায় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজার মাঠ এবং মানিক মিয়া অ্যাভিনিউজুড়ে খালেদা জিয়ার জানাজা হবে। সেজন্য আশেপাশের এলাকায় নেওয়া হয়েছে ব্যাপক নিরাপত্তা।
জানাজা পড়াবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব। আর সঞ্চালনা করবেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাতে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ঢাকায় এসেছেন।
পাকিস্তান থেকে আসছেন দেশটির জাতীয় সংসদের স্পিকার সরদার আয়াজ সাবিক।
ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডি এন ধুঙ্গেল এবং মালদ্বীপের রাষ্ট্রপতির উচ্চ শিক্ষা, শ্রম ও দক্ষতা উন্নয়ন বিষয়ক মন্ত্রী আলি হায়দার আহমেদ, নেপালের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বালা নন্দা শর্মা, শ্রীলংকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভিজিতা হেরাথেরও আসছেন।
এছাড়া মালয়েশিয়া, কাতারসহ আরও কয়েকটি দেশের সরকারের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদের আসার কথা রয়েছে।
চীন, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্রসহ ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন মিশনের প্রধানরাও তাদের দেশের পক্ষে খালেদা জিয়াকে শ্রদ্ধা জানাতে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে শেষ যাত্রায় অংশ নেবেন।
মঙ্গলবার ভোর ৬টায় রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনবারের প্রধানমন্ত্রী, ‘আপসহীন নেত্রী’ খালেদা জিয়া।
তার মৃত্যুতে দেশে তিনদিনের রাষ্ট্রীয় শোক চলছে, বুধবার ঘোষণা করা হয়েছে সাধারণ ছুটি।
বুধবার সকালে এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে খালেদা জিয়ার কফিন নেওয়া হয় গুলশানে তার ছেলে তারেক রহমানের বাড়িতে।
পরে জাতীয় পতাকা শোভিত লাশবাহী গাড়ি বুধবার বেলা পৌনে ১২টার দিকে সংসদ ভবনের সামনে পৌঁছায়।
গাড়িবহরে একটি বাসে করে সেখানে পৌঁছান খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমান ও তার পরিবারের সদস্যরা।
মানিক মিয়া অ্যাভেনিউয়ের পশ্চিম প্রান্তে স্থাপিত মঞ্চে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কফিন রাখা হবে। বাদ জোহর সেখানে তার জানাজা হবে।
এই মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতেই ১৯৮১ সালের ২ জুন তার স্বামী, তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের জানাজা হয়েছিল।
বিএনপি চেয়ারপারসনের জানাজার পর বেলা সাড়ে ৩টার দিকে তাকে জিয়া উদ্যানে জিয়াউর রহমানের কবরের পাশে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হবে।
জাতীয় সংসদ ভবনের ভেতরের মাঠ, বাইরের অংশ এবং পুরো মানিক মিয়া অ্যাভেনিউজুড়ে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে বলে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর জানিয়েছে। এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, জানাজায় অংশগ্রহণে ইচ্ছুক নারীদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা থাকবে।
খালেদা জিয়ার জানাজা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্নের জন্য মিরপুর সড়ক ব্যবহার না করার অনুরোধ জানিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর।
ডিএমপি জানিয়েছে, বিএনপি নেত্রীর কফিন বহনের জন্য এভারকেয়ার হাসপাতাল, ৩৬ জুলাই এক্সপ্রেসওয়ে, কুড়িল ফ্লাইওভার, নৌ সদর দপ্তর হয়ে বাসভবন ফিরোজা এবং গুলশান-২, কামাল আতাতুর্ক অ্যাভেনিউ, এয়ারপোর্ট রোড, মহাখালী ফ্লাইওভার, জাহাঙ্গীর গেট, বিজয় সরণি, উড়োজাহাজ ক্রসিংয়ের সড়কে বুধবার যান চলাচল নিয়ন্ত্রিত থাকবে।
নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ‘আপসহীন নেত্রী’ অভিধা পাওয়া খালেদা জিয়া বিএনপির নেতৃত্ব দিয়েছেন ৪১ বছর। তিনি পাঁচবারের সংসদ সদস্য, তিনবারের প্রধানমন্ত্রী; আর বিরোধী দলীয় নেতার দায়িত্ব পালন করেছেন দুইবার।