খালেদা জিয়ার বিদায়ের দিনে শোকার্ত বাংলাদেশ
দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিদায়ের দিনে দেশজুড়ে শোকের আবহ চলছে।
বুধবার ভোরে দেশের সব সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং বিদেশে বাংলাদেশ মিশনে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখার মধ্য দিয়ে তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক শুরু হয়েছে। এদিন সাধারণ ছুটিও চলছে।
নাটোর সদর উপজেলার চন্দ্রকোলা হরিকালী পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখার কথা জানিয়েছেন স্কুলটির দপ্তরি সাদ্দাম হোসেন।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “পতাকাটি প্রথমে স্ট্যান্ডের সর্বোচ্চ শিখর পর্যন্ত সম্পূর্ণভাবে উত্তোলন করে এরপর স্ট্যান্ডের ওপরে চারভাগের একভাগ পরিমাণ নিচে নামিয়ে বাধা হয়েছে।
“দিন শেষে নামানোর সময়, পতাকাটিকে আবার সর্বোচ্চ চূড়া পর্যন্ত তুলে তারপর নামাতে হবে।”
মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার চরবাচামারা ইমান উদ্দিন তালুকদারকান্দী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখার কথা জানিয়েছেন স্কুলটির শিক্ষক মো. আবুল কালাম আজাদ।
মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরের বাংলাদেশ হাই কমিশনে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখার তথ্য তুলে ধরা হয়েছে তাদের ফেইসবুক পেইজে।
এদিন বাদ জোহর রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভেনিউয়ে খালেদা জিয়ার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। সেখানেই ১৯৮১ সালের ২ জুন তার স্বামী, তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের জানাজা হয়েছিল।
বিএনপি চেয়ারপারসনের জানাজার পর বেলা সাড়ে ৩টার দিকে তাকে জিয়াউর রহমানের কবরের পাশে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হবে।
রাষ্ট্রীয় শোক চলবে শুক্রবার পর্যন্ত; ওইদিন দেশের সব মসজিদ তার আত্মার মাগফেরাত কামনায় দোয়া ও অন্যান্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হবে।
খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে সাত দিনের শোক পালন করছে তার দল বিএনপি। নয়া পল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ দেশের সব কার্যালয়ে কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে।
দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা এই সাত দিনব্যাপী কালো ব্যাজ ধারণ করবেন এবং প্রতিটি দলীয় কার্যালয়ে খালেদা জিয়ার জন্য কোরআন খতম ও দোয়া অনুষ্ঠিত হবে।
নয়া পল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ও গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয় কেন্দ্রীয়ভাবে এবং জেলা পর্যায়ে দলীয় কার্যালয়ে শোক বই খোলার কথাও জানিয়েছে বিএনপি।
গত ৪০ দিন ধরে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়াকে মঙ্গলবার ভোর ৬টায় মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।
নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ‘আপসহীন নেত্রী’ অভিধা পাওয়া খালেদা জিয়া বিএনপির নেতৃত্ব দিয়েছেন ৪১ বছর। তিনি পাঁচবারের সংসদ সদস্য, তিনবারের প্রধানমন্ত্রী; আর বিরোধী দলীয় নেতার দায়িত্ব পালন করেছেন দুইবার।