রোববার ১৩ জুলাই ২০২৫, আষাঢ় ২৯ ১৪৩২, ১৭ মুহররম ১৪৪৭

ব্রেকিং

এনবিআর সংস্কার পরিষদের বহু সদস্যের ‘ক্ষমা প্রার্থনা’, মাঠে ফেরার প্রস্তুতি ৭.৭৫ কোটি টাকার স্থাপনা ভেঙে নতুন স্মৃতিস্তম্ভ গড়ার কাজ শুরু ইসরায়েল আমাকে হত্যা করতে চেয়েছিল: ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান সংস্কার ছাড়া যেনতেন নির্বাচন চায় না জামায়াত: শফিকুর রহমান আশরাফুল, সাকিবদের পর এবার নতুনদের চিনছে শ্রীলঙ্কা বিচার ও সংস্কারকে নির্বাচনের মুখোমুখি করা যাবে না: সাকি সংখ্যানুপাতিক ব্যবস্থায়(পিআর) ‘ভবিষ্যৎ বিভক্তি’র শঙ্কা তারেক রহমানের জুলাই বিপ্লব নিয়ে কটূক্তি করায় কুষ্টিয়ায় ট্রাফিক পুলিশ সদস্য ক্লোজড কলেজ প্যাডে ছাত্রদলের প্রচারণা? অধ্যক্ষের ব্যাখ্যা ঘিরে বিতর্ক মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েলের সংঘাত বিস্তার: বিশ্লেষণ কলম্বিয়ায় পাহাড়ধসে মৃত্যু ১৬, নিখোঁজ অন্তত ৮ “ত্রাণ নিতে এলে গুলি করতাম”—গাজার ঘটনায় মুখ খুললেন ইসরায়েলি সেনারা তেহরানে ধ্বংসস্তূপে উদ্ধার চলছেই, মৃতের সংখ্যা ছাড়াল ৪৫০ ইরানে বাংলাদেশিদের সহায়তায় হটলাইন চালু উপদেষ্টার গাড়িবহর আটকে বিক্ষোভ: সিলেটে তিনজন কারাগারে ইসরায়েলের টার্গেটে ইরানের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার ভবন লন্ডনে ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও তারেক রহমানের বৈঠক ১৩ জুন তারেক রহমান শিগগিরই দেশে ফিরবেন: ফখরুল রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হবে কাঁচের মতো স্বচ্ছ ঘর: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নির্বাচনের ঘোষিত সময় মাথায় রেখে যথাসময়ে রোডম্যাপ দেবে ইসি: উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুললেন ছাত্রদল নেতা নাছির উদ্দিন মণিপুরে আবার উত্তেজনা, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের চাপে ঢাকার ৪ থানায় সক্রিয় অর্ধশতাধিক অপরাধী দল জাতীয় নির্বাচন ২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধে: প্রধান উপদেষ্টা প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণায় জাতির প্রত্যাশা পূরণ হয়নি: সালাহউদ্দিন আহমদ জুলাই সনদ–ঘোষণাপত্র হলে ঘোষিত সময়ে নির্বাচনে আপত্তি নেই: এনসিপি ২৫ কিলোমিটার যানজট, ২৪ ঘণ্টায় পারাপার ৬৪ হাজার যানবাহন বান্দরবানের রুমা ও থানচি ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আংশিকভাবে প্রত্যাহার গাজায় যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্রের ভেটো, জাতিসংঘ নিরাপত্তা গরম মসলার বাজার শীতল: ক্রেতা কমে যাচ্ছে, দাম কিছুটা স্থিতিশীল ঈদে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে দই-মিষ্টি মজুত, রংপুরে হিমাগারে অভিযান ও দুই লাখ টাকা জরিমানা বান্দরবানের লামায় পাহাড় ধসের শঙ্কায় ৬০ রিসোর্ট বন্ধ নির্বাচন নিয়ে তরুণদের প্রতি অসত্য অভিযোগ ও বাস্তবতা ভারতের মুসলমানদের কেন বারবার দেশপ্রেমের প্রমাণ দিতে হয় সংবিধান পরিবর্তন ছাড়া ফ্যাসিবাদ বিলোপ সম্ভব নয়: এনসিপি মুখ্য সমন্বয়ক একুশের বন্ধুত্বে আগামীর পথচলা: বার্ষিক সম্মেলনে ২১তম বিসিএস প্রশাসন ফোরাম বিজিএমইএ`র নতুন নেতৃত্বে আসছেন বাবু, নিরঙ্কুশ জয়ের ইঙ্গিত জিলহজ মাসের আমল ও কোরবানির তাৎপর্য চট্টগ্রামে নারীকে লাথির ঘটনায় ভাইরাল আকাশ চৌধুরী বহিষ্কৃত, জামায়াতের বিবৃতি সংকট নিরসনে উদ্যোগ নেই, আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিল পবিস শ্রমিকরা আনচেলত্তির স্বপ্ন - রিয়াল মাদ্রিদের মতো করে খেলাবেন ব্রাজিলকে ডিমের দাম এখনো চড়া, ডজন ১৩০–১৪০ টাকায় বিক্রি বৈরী আবহাওয়ার কারণে নোয়াখালীর হাতিয়া দ্বীপের সঙ্গে সারাদেশের নৌ-যোগাযোগ বন্ধ হারের পর লিটনের মনোভাব - এখনো দুই ম্যাচ বাকি কাল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য দেশের সব জুয়েলারি দোকান বন্ধ ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্র চীনা শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু করবে ডিএনএ টেস্ট করে নামফলক ও মর্যাদা চায় শহীদ পরিবারের সদস্যরা বেতন না পেয়ে ডাকাতি, জাহাজের চিফ ইঞ্জিনিয়ারসহ তিনজন আটক “বাংলাদেশে কৌশলগত স্বার্থ নেই দক্ষিণ কোরিয়ার”—রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং সিক “শাপলার হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই”—হেফাজতের বিবৃতি মির্জা আব্বাস: “করিডর আর স্টারলিংক আনা হচ্ছে আরাকান আর্মির জন্য” জিলহজ মাসের চাঁদ দেখে যে দোয়া পড়বেন নির্বাচনের আগে যতটুকু দরকার, ততটুকুই সংস্কার করতে হবে: মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ‘চিন্তার স্বাধীনতাও হারাচ্ছি?’— নারী কমিশন বিতর্কে গীতিআরার উদ্বেগ ইউক্রেনে রাশিয়ার টানা হামলায় নিহত ১২, কঠোর চাপের আহ্বান জানালেন জেলেনস্কি সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন – তিনটি কঠিন দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট আমরা জুলাই অভ্যুত্থান ক্ষমতার পালাবদল নয়, এটি মৌলিক সংস্কার: নাহিদ হলুদ সাংবাদিকতা’ বিরোধী স্লোগানে উত্তাল শিক্ষক মিছিল ভারতের নিষেধাজ্ঞায় আখাউড়া বন্দর দিয়ে রপ্তানি কমেছে ৪০% বিএনপির অবস্থান কর্মসূচি চলছে, দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি জাতীয় স্বার্থে অভিমান ভুলে দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান : জামায়াত আমির আন্দোলনের পর অবশেষে নিয়োগ পেলেন ৪৩তম বিসিএসের বাদ পড়া ১৬২ জন নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের দাবিতে ইসির সামনে এনসিপির বিক্ষোভ কাল বাংলাদেশে স্টারলিংকের যাত্রা, স্যাটেলাইট ইন্টারনেটের নতুন যুগ শুরু নরওয়ের দৃঢ় সমর্থন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি বিগত সরকারের সময় প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংসপ্রাপ্ত, এমন অবস্থা ছিল যে খতিবকেও পালাতে হয়েছিল: বাণিজ্য উপদেষ্টা গায়ের জোরে নগর ভবন দখল করে আন্দোলন চালাচ্ছে বিএনপি আবারও রাজপথে নামার ইঙ্গিত আসিফের, সতর্ক করলেন হাসনাত গোপন অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে আন্দোলন স্থগিত, ২০ মে আলোচনায় বসবে ঐক্য পরিষদ ভারতের আমদানি নিষেধাজ্ঞা সীমান্ত বাণিজ্যে অনিশ্চয়তা তৈরি করছে ভারতের নতুন সিদ্ধান্তে উত্তর-পূর্বাঞ্চল দিয়ে বাংলাদেশি ভোগ্যপণ্য আমদানি বন্ধ গত ৯ মাসে জুলাই-যোদ্ধাদের ওপর ৩৮টি হামলা জবি’র ৪ দফা দাবি মেনে নেওয়ায় আন্দোলনের সমাপ্তি ঘোষণা ডিবি থেকে মুক্তির পর আন্দোলনে উল্লাস জবি শিক্ষার্থীর গাজা দখলে নেওয়ার আকাঙ্ক্ষা পুনর্ব্যক্ত করলেন ট্রাম্প শাহরিয়ার হত্যাকাণ্ডে বিচার নিশ্চিতের অঙ্গীকার উপদেষ্টা আসিফের সোনার দাম ভরিতে কমল ৩ হাজার ৪৫২ টাকা, নতুন দর কার্যকর শুক্রবার থেকে ঢাবি শিক্ষার্থীর মৃত্যু: নিরাপত্তা নিশ্চিতে বড় পদক্ষেপ প্রশাসনের আওয়ামী লীগের কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধে ভারতের উদ্বেগ শ্রীনগরজুড়ে বিস্ফোরণ, যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ ওমর আব্দুল্লাহর উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্ত: আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে শাহবাগ অবরোধ ‘চলবে’, শনিবার গণজমায়েত ড্রোন যুদ্ধ: ভারত-পাকিস্তান বিরোধের নতুন অধ্যায় আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে সরকার গুরুত্বসহকারে বিবেচনায় নিচ্ছে: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং আ.লীগ নিষিদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত শাহবাগ ছাড়বেন না আন্দোলনকারীরা ‘আপ বাংলাদেশ’–এর আত্মপ্রকাশ পূর্বঘোষণা ছাড়া ভারত সফরে সৌদি প্রতিমন্ত্রী, পাকিস্তান-ভারত উত্তেজনায় কূটনৈতিক তৎপরতা তুঙ্গে দ্রুত সিদ্ধান্ত না এলে সারা দেশ থেকে ঢাকা অভিমুখে মার্চের হুঁশিয়ারি নাহিদ ইসলামের দেশীয় ওষুধ কোম্পানি রেনাটাকে ৭০০ কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে আইএফসি তারেক রহমান: সরকার হয়তো স্বৈরাচারের দোসরদের দেশত্যাগে সহায়তা করছে জাতীয় নিরাপত্তা ইস্যুতে ভারতের নির্দেশে ৪ বাংলাদেশি টিভি চ্যানেল ইউটিউবে বন্ধ

ফিচার

মানসা মুসা: যার সম্পদ রক্ষায় সৈন্য ছিল দুই লাখ

 প্রকাশিত: ১৩:২৪, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১

মানসা মুসা: যার সম্পদ রক্ষায় সৈন্য ছিল দুই লাখ

টাকা-পয়সা যদি হাতের ময়লা হয়, তাহলে পৃথিবীতে কার হাত সবচেয়ে বেশি নোংরা হতে পারে? এ প্রশ্নের জবাবে প্রথমেই কয়েকজনের নাম আসবে—ইলন মাস্ক, বিল গেটস, জেফ বেজোস এর মধ্যে অন্যতম। তবে তারা কেউই সর্বকালের সবচেয়ে বেশি ধনী ব্যক্তি নন। সর্বকালের শীর্ষ ধনী হিসেবে সামনে এসেছেন ১৪ শতকের পশ্চিম আফ্রিকার দেশ মালির এক শাসক মুসা। মানসা মুসা নামে তিনি অধিক পরিচিত।

মানসা অর্থ রাজা বা সম্রাট। এটি তার নামের অংশ নয়, উপাধী। মুসার পুরো নাম ‘প্রথম মুসা কিতা’। পশ্চিম আফ্রিকার দেশ মালির সুলতান হওয়ার কারণে তাকে মানসা খেতাবে ভূষিত করা হয়। মানসা ছাড়াও কমপক্ষে আরও ডজনখানেক উপাধী ছিল তার। তাকে প্রথম মুসা, মালির আমির, ওয়াংগারা খনির সম্রাট, কনকান মুসা/কানকো মুসা, মালির সিংহ, গঙ্গা মুসা ইত্যাদি নামেও ডাকা হয়।

৩২ বছর বয়সে সিংহাসনে বসেন

মুসার জন্ম ১২৮০ খ্রিষ্টাব্দে। তিনি ছিলেন মালি সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা সান্দিয়াতা কিতার ভাগ্নে। তার বড় ভাই আবু-বকরের পর মুসা মালির রাজা হন ১৩১২ খ্রিষ্টাব্দে। তখন তার বয়স ছিল মাত্র ৩২ বছর। এ বয়সেই তিনি পৃথিবীর বড় একটা অংশের সম্রাট ছিলেন। তিনি প্রথম আফ্রিকান শাসক, যিনি ইউরোপ এবং মধ্যপ্রাচ্যে ব্যাপকভাবে প্রভাব বিস্তার করতে পেরেছিলেন।

ইতিহাস বলছে, তার শাসনামলে মালি সাম্রাজ্যের শান-শওকত ব্যাপক বৃদ্ধি পায়। তৎকালীন রাজধানী তিম্বুকতুসহ ২৪টি নগর যুক্ত করে মালি সাম্রাজ্য গঠন করা হয়। মুসা বর্তমান সময়ের মৌরিতানিয়া, সেনেগাল, গাম্বিয়া, গিনি, বুরকিনা ফাসো, নাইজার, নাইজেরিয়া, চাদ, আইভরি কোস্টসহ ২৪টি শহর এবং এদের আশেপাশের গ্রামাঞ্চল সহ বিস্তীর্ণ এলাকা জয় করেন।

সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ধনী কীভাবে হলেন?

২০১২ সালে মার্কিন ওয়েবসাইট সেলিব্রিটি নেট ওয়ার্থের হিসাবে আজকের বাজারে আনুমানিক ৪০ হাজার কোটি মার্কিন ডলারের মালিক ছিলেন মুসা। এদিকে গত বছর পর্যন্ত বেজোসের সম্পদের পরিমাণ ছিল ২০ হাজার কোটি ডলার। স্বভাবতই প্রশ্ন আসতে পারে, মুসা সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ধনী হলেন কীভাবে?

 

২৪টি নগর যুক্ত করে মালি সাম্রাজ্য গঠন করা হয়। ছবি: সংগৃহীত

২৪টি নগর যুক্ত করে মালি সাম্রাজ্য গঠন করা হয়। ছবি: সংগৃহীত

 

১৪ শতকে পৃথিবীর সবচেয়ে ধনী তিনটি অঞ্চলের একটি ছিল পশ্চিম আফ্রিকার মালি সাম্রাজ্য। এর কারণ, তামাম দুনিয়ায় যত সোনা উত্তোলন এবং লবন আহরণ হতো তার অর্ধেকটাই ছিল মালি সাম্রাজ্যে। ভাবুন তো, পৃথিবীর উত্তোলিত অর্ধেক সোনার মালিকানা একজন মানুষের কাছেই! এই সোনা আর লবনের বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করে বিপুল সম্পদের মালিক হয়ে ওঠেন মানসা মুসা।

মুসার যে বিশাল সাম্রাজ্য সেখান থেকে নিয়মিত খাজনা সংগ্রহ করতেন তিনি। তার সাম্রাজ্যের অধীনে ছিল আটলান্টিক মহাসাগরের তীরবর্তী পশ্চিম আফ্রিকা থেকে ভূমধ্যসাগরের তীর পর্যন্ত উত্তর আফ্রিকার মধ্যবর্তী এলাকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসায়িক পথ। এই পথে বাণিজ্য করতে আসা মধ্যপ্রাচ্য আর ইউরোপীয় ব্যবসায়ীদের কাছ থেকেও রাজস্ব আদায় করতেন দক্ষ এই শাসক। এভাবেই দিনে দিনে তার সম্পদ, ঐশ্বর্য এতটাই বেড়ে যায় , যা তাকে সর্বকালের সেরা ধনী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার জন্য যথেষ্ট’র চেয়েও অনেক বেশি।

সম্পদ অর্জনের চেয়ে রক্ষা করা কঠিন। কিন্তু মুসার সম্পদ এবং সাম্রাজ্য দুটোই রক্ষা করার জন্য ছিল বিশাল এক বাহিনী। অনেকটা আজকের দিনের সেনাবাহিনীর মতোই। তার এই বাহিনীর সদস্য ছিল দুই লাখ! যার মধ্যে ৪০ হাজার সৈন্য ছিলেন তীর চালনায় অতি দক্ষ।

মানসা মুসার বিলাসিতা

মানসা মুসা এমনই বিলাসিতা দেখিয়েছেন যে, তাকে ঘিরে অনেক গল্প আছে। তার মধ্যে হজ করতে যাওয়ার গল্পটি সুবিদিত। মালির এই শাসক মনে করতেন, ইসলামে প্রবেশ মানে হচ্ছে একটি সভ্য সাংস্কৃতিক দুনিয়ায় পদার্পণ। নিজের সাম্রাজ্যের মধ্যে ধর্ম প্রসারের কাজেই বেশিরভাগ সময় ব্যস্ত থাকতেন তিনি। ১৩২৪-২৫ সালের মধ্যে হজ করতে গিয়েছিলেন মুসা। ওই সময় তার সঙ্গে ছিল ৬০ হাজার মানুষ। এদের মধ্যে ১২ হাজার ছিল সেবক।

এসব সেবকের প্রত্যেকের সঙ্গে ছিল একটি করে সোনার বার। এছাড়া ৮০ থেকে ১০০টি উট ছিল বহরে, যেগুলো প্রত্যেকটি প্রায় ১৪০ কেজি করে সোনা বহন করছিল। যাত্রাপথে কয়েকশ কোটি টাকা মূল্যের সোনা বিতরণ করেন তিনি। বলা হয়ে থাকে, ওই হজে মুসা আজকের দিনের প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার পাউন্ড ওজনের সোনা ব্যয় করেছিলেন। যে কারণে এর পরের কয়েক বছর কায়রো, মক্কা এবং মদিনায় সেখানে সোনার দাম একেবারেই নেমে গিয়েছিল। এতে অবশ্য শহরগুলোর অর্থনীতিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। বেড়ে গিয়েছিল মুদ্রাস্ফীতি।

 

মুসার হজ করতে যাওয়ার কাহিনী বেশ পরিচিত। ছবি: সংগৃহীত

মুসার হজ করতে যাওয়ার কাহিনী বেশ পরিচিত। ছবি: সংগৃহীত

 

মুসার এই হজযাত্রায় সঙ্গী হন তার প্রথম স্ত্রী। এছাড়া নিযুক্ত ছিলেন আরো ৫০০ সেবিকা। কাফেলায় বেশ কয়েকজন শিক্ষক, চিকিৎসক, সরকারি কর্মকর্তা ও সংগীতশিল্পীও ছিলেন। কথিত আছে, প্রতি জুমাবারে একটি করে মসজিদ নির্মাণ করতেন তিনি। মক্কায় হজ পালনের পর আরব বিশ্বের একটি বড় অংশ ঘুরে বেড়াতে থাকেন এই পশ্চিম আফ্রিকান শাসক।

তখন মক্কাবাসীর জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চা দেখে অভিভূত হয়ে পড়েন তিনি। ফেরার সময় সেখান থেকে বহু উট বোঝাই করে চিকিৎসা, জোতির্বিদ্যা, দর্শন, ভূগোল, ইতিহাস, গণিত এবং আইন বিষয়ে প্রচুর বই নিয়ে আসেন। এছাড়া মক্কার সবচেয়ে মেধাবী এবং সেরা গণিতবিদ, চিকিৎসক, বিজ্ঞানী ও স্থাপত্যবিদদের আমন্ত্রণ করে নিয়ে আসেন মালিতে। ইসলামি শিক্ষাভিত্তিক অনেকগুলো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন এবং নিজের সাম্রাজ্য থেকে উত্তর আফ্রিকার ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অনেক শিক্ষার্থী প্রেরণ করেন মুসা।

হজের পর ঘটে অন্যরকম কাহিনী

মক্কায় হজ পালনকালেই মুসা খবর পান, তার জেনারেল সাগমান্দিয়া গাও শহর দখল করেছে। বিজয়ের পর শহরটি সফর করতে যান তিনি। সেখানে গিয়ে গাও সম্রাটের দুই পুত্রকে বন্দিদশা থেকে মুক্তি দেন এবং মালি সাম্রাজ্যের রাজধানী নিয়ানিতে নিয়ে আসেন। তাদের দুই ভাইকেই উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করেন। মালির থিমবুকতু শহরকে বৃত্তিপ্রাপ্ত মুসলিমদের শিক্ষাকেন্দ্রে পরিণত করেন এই সম্রাট। একইসঙ্গে শহরটি হয়ে ওঠে বাণিজ্য এবং সংস্কৃতি চর্চার কেন্দ্রও। ভেনিস, গ্রানাডা এবং জেনোয়ার মতো ইউরোপীয় শহরগুলোতে যখন এই বাণিজ্যকেন্দ্রটির সংবাদ পৌঁছায় তখন সেখানকার ব্যবসায়ীরা দ্রুত এটিকে তাদের বাণিজ্যিক শহরের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে নেন।

মুসার সময় থিমবুকতু শহরের শাঙ্কোর বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে ওঠে মধ্যপ্রাচ্য এবং আফ্রিকার আইন বিশেষজ্ঞ, জ্যোতির্বিদ এবং গণিতবিদদের একটি মিলনমেলা। ১৩৩০ সালে পার্শ্ববর্তী মোসি সাম্রাজ্য থিমবুকতু দখল করে নেয়। সঙ্গে সঙ্গেই সেনাবাহিনী পাঠিয়ে তা নিয়ন্ত্রণ পুনর্দখল করতে সক্ষম হন মানসা মুসা।

ওই শহরের রাজপ্রাসাদটি ধ্বংস হয়ে গেলেও এখনো কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় এবং মসজিদগুলো। তার সময়েই লাইব্রেরি অব আলেকজান্দ্রিয়ার পর আফ্রিকার দ্বিতীয় বৃহত্তম শিক্ষাকেন্দ্রে পরিণত হয় ইউনিভার্সিটি অব শাঙ্কোর। সেই সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ২৫ হাজার আবাসিক শিক্ষার্থী বিদ্যার্জন করতো এবং পাঠাগারে ছিল এক লাখেরও বেশি বই।

টানা ২৫ বছর মালি শাসন করে ১৩৩২ সালে মৃত্যুবরণ করেন বিশ্বের সর্বকালের সবচেয়ে ধনী এই ব্যক্তি। তবে তার মৃত্যুর সঠিক কোনো কারণ এখন উদ্ধার করতে পারেননি ইতিহাসবিদরা। মৃত্যুর সাল নিয়েও আছে বিতর্ক। ইতিহাসবিদ ইবনে খালদুনের মতে, কমপক্ষে ১৩৩৭ সাল পর্যন্ত বেঁচে ছিলেন তিনি। ওই বছরই আলজেরিয়া বিজয়ে সেনাবাহিনী পাঠিয়েছিলেন মুসা।

অনলাইন নিউজ পোর্টাল